পঞ্চগড়ে জেঁকে বসছে শীত, মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন
ফাইল ছবি

ভোরের কুয়াশা ও উত্তর দিক থেকে আসা হিমেল বাতাস শীতের আগমনী বার্তা দিয়েছে বেশ কয়েক দিন আগেই। শীত এখনও হাড় না কাঁপালেও ধীরে ধীরে জেঁকে বসছে। ইতোমধ্যে পঞ্চগড় জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ১৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। এটি এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

শুধু তা-ই নয়, গত ১৮ দিনের মধ্যে ১৫ দিনই পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, গত ১ নভেম্বর পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১৭.৮, ২ নভেম্বর ১৬.৫, ৩ নভেম্বর ১৫.৮, ৪ নভেম্বর ১৫.৫, ৫ নভেম্বর ১৫, ৬ নভেম্বর ১৪.৪, ৭ নভেম্বর ১৪.৬, ৮ নভেম্বর ১৪.৫, ৯ নভেম্বর ১৩.৫, ১০ নভেম্বর ১৩.৮, ১১ নভেম্বর ১৩.৮, ১২ নভেম্বর ১৪.১, ১৩ নভেম্বর ১৩.৪, ১৪ নভেম্বর ১৩.৪, ১৫ নভেম্বর ১৩.৭, ১৬ নভেম্বর ১৩.৭ ও ১৭ নভেম্বর ১৪.১ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

জেলার সার্বিক চিত্রে দেখা গেছে, বিকাল থেকে চারদিক কুয়াশায় আচ্ছাদিত হচ্ছে পড়ছে। রাতে ঝরছে ঘন কুয়াশা। সকাল ৭/৮টা পর্যন্ত কুয়াশা থাকছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের তেজও বাড়ছে। শীতবস্ত্র কিনতে মানুষ দোকানগুলোতে ভিড় করছেন। অসহায় দরিদ্ররা সরকারি-বেসরকারি ত্রাণের আশায় রয়েছেন। ব্যস্ত সময় পার করছেন লেপ-তোশক বানানোর কারিগররা।

জেলা শহরের ডোকরোপাড়া এলাকার বাসিন্দা অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ লিটন জানান, ইতোমধ্যে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। যারা সকালে বের হন, যারা মর্নিং ওয়ার্ক করেন তারা শীতের আমেজ টের পাচ্ছেন। গ্রামাঞ্চলে শীতের আমেজ শুরু হলেও শহর ও শহরতলির মানুষ আবহাওয়ার এ রূপকে উপভোগ করছেন। ৮/১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এই জনপদের মানুষের কাছে স্বাভাবিক বিষয়। তাপমাত্রা আরও কমলে এবং শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলে এখানকার মানুষ শীতে কাবু হয়ে পড়ে।

জেলা শহরের কামাতপাড়া এলাকার চাকরিজীবী বেলাল দেওয়ান জানান, শীত পড়তে শুরু করেছে। রাতে কম্বল-লেপ গায়ে দিতে হচ্ছে। সকালে অফিসে যাওয়ার সময় গরম কাপড় পরতে হচ্ছে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মো. রোকনুজ্জামান রোকন জানান, তীব্র ঘন কুয়াশা ও উত্তর থেকে ধেয়ে আসা সাইবেরিয়ান হিমেল হাওয়া এখনও দেখা যায়নি। তবে ক্রমশ তাপমাত্রা কমছে। নভেম্বরের ১৮ দিনের মধ্যে ১৫ দিনই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। তবে চলতি মাসের দিকে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে।

আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেকে ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. মো. সিরাজউদ্দৌলা পলিন বলেন, ‘হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও শয্যায় রোগীর চাপ বেড়েছে। জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা এসব রোগী বেড়েছে। বহির্বিভাগে প্রতিদিন আড়াই থেকে ৩০০ রোগী দেখতে হচ্ছে। একইসঙ্গে রোগী ভর্তির হারও বাড়ছে। আমরা রোগীদের সাধ্যের মধ্যে সেবা দিয়ে যাচ্ছি।’

জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, জেলায় পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র মজুত রয়েছে। শীত মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২৬ হাজার কম্বল এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে শীতবস্ত্র কেনার জন্য পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সরকারের পাশাপাশি ধনাঢ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!