পশ্চিমবঙ্গে ইয়াস ঝড়ের আতঙ্কে ঘরছাড়া লক্ষাধিক, কাটেনি দুর্যোগ

লিটন রাকিব
লিটন রাকিব - সাহিত্য সম্পাদক
3 মিনিটে পড়ুন
ছবি: লিটন রাকিব

ইয়াস ঝড়ের আতঙ্কে দক্ষিণ ২৪ পরগনা সহ সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। কাঁচা বাড়ি থেকে যেমন সরে যাচ্ছেন ঠিক তদ্রুপ ভাবে এ্যসবেস্টটস দেওয়া বাড়িগুলো তারা তাদের সাবধানতা অবলম্বন করে এ্যসবেস্টটস নামিয়ে নিচ্ছেন আবার কোথাও কোথাও দেখা গেল দড়ি দিয়ে মজবুত করে বেঁধে রাখছে। যাতে, ঝরে উড়িয়ে না নিয়ে যেতে পারে এমন এ চিত্র দেখা গেল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকাতে।

এলাকার মানুষের জানান এক বছর আগে আম্ফান ঝড়ের দাপটে ঘর সহ হাসঁমুরগি,গাছপালা, আসবাসপত্র সমস্ত কিছু ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। তাই ইয়াস ঝড় আসার আতঙ্কে সাধারণ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন ছাদের নিচে স্কুল-কলেজে যেমন আশ্রয় নিচ্ছেন ঠিক তেমনি ভাবে তারা ঘরের এ্যাসবেস্টটস নামিযে রাখছেন।

1 24 পশ্চিমবঙ্গে ইয়াস ঝড়ের আতঙ্কে ঘরছাড়া লক্ষাধিক, কাটেনি দুর্যোগ
ইয়াসের তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ পশ্চিমবঙ্গ। ছবি: লিটন রাকিব

তারা আরো জানান -‘বিগত এক বছর দেশের লকডাউনে আমরা দিনমজুর, দিন আনি দিন খাই আম্ফান ঝড়ের আমাদের সমস্ত ঘর বাড়ি ভেঙে গেছে অতিকষ্টে ধারদেনা ঋণ করে বেঁচে আছি। আমাদের কোনো কাজ নেই আমরা কাজ হারিয়ে বসে আছি। সাহায্য সেভাবে পাইনি তাই সর্বস্বান্ত হয়ে যাব, সেই আতঙ্কে আমরা ঘরের আসবাবপত্র প্লাস্টিকের মধ্যে ভোরে রেখে এ্যাসবেস্টস নামিয়ে রেখে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছি।’

অন্যদিকে বাসন্তী এলাকার মানুষ সমস্ত ঘরবাড়ি ছেড়ে সুকান্ত কলেজে এসে কয়েক হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এলাকার মানুষের সহযোগিতায় সেখানে চলছে খাদ্য সামগ্রী ও পানীয় জলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে কোভিদ বিধি মেনে দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দিচ্ছেন এলাকার যুবকেরা।

সুন্দরবন সহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে মাইকিং করে বারবার বাধ্য করা হচ্ছে আপনারা আপনাদের কাঁচা বাড়ি ছেড়ে স্কুল কলেজে আশ্রয় নিন সেইসাথে ব্যাংকের বই, আধার কার্ড, রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড, জমির কাগজপত্র সরকারি নথিপত্র সঙ্গে রাখুন মাইকিং প্রচার শুনে আরো আতঙ্কিত হয়ে উঠছেন সাধারন মানুষ। বাসন্তীর সুকান্ত কলেজে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় আড়াই হাজারেও বেশি মানুষ, পাঁচশোর অধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন বাসন্তী চুনাখালি ওয়েলফেরায় ফাউন্ডেশন এর সুন্দরবন আলমানার মিশনারি গার্লস স্কুলে, বারুইপুরের পারুলদহ গ্রাম এবং ঘুটিয়ারি শরিফের স্কুল বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন শতাধিক মানুষ।

relief cap পশ্চিমবঙ্গে ইয়াস ঝড়ের আতঙ্কে ঘরছাড়া লক্ষাধিক, কাটেনি দুর্যোগ
রিলিফ ক্যাম্প। ছবি: লিটন রাকিব

এ তো গেল একদম প্রথম দিকের অবস্থা। রাতে ১৩০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ে এক কোটিরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পশ্চিমবঙ্গের দিঘা, মেদিনীপুর এবং সুন্দরবন নামখানা, সাগর, পাথরপ্রতিমা অন্যদিকে উড়িষ্যা এবং ঝাড়খণ্ডের যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে। প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের ও একাধিক অঞ্চলে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক বাঁধ ভেঙে নোনাজল গ্রামে প্রবেশ করায় ক্ষতিগ্রস্ত লক্ষাধিক মানুষ। কুলপিতে ইনডি আর এফ এর মানবিক মুখ লক্ষ্য করা গেছে। মহিলা, শিশু বৃদ্ধকে রেস্কিউ করেছে। জলের নিচে অসংখ্য বাড়ি-ঘর। গাছপালা, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ভেঙে ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের এই সময়ে সরকার সব ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ১৪ হাজারের বেশি রিলিফ ক্যাম্প চলছে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে। কাজে নেমে পড়েছে অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এমনকি বেশ কিছু ব্যাক্তিগত উদ্যাগও লক্ষ্য করা যাচ্ছে এটাই আসার কথা।যদিও দুর্যোগ এখনও কাটেনি। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী ১০ঘণ্টা খুব ‘গুরুত্বপূন’ অত্যন্ত সাবধানতা অবলম্বন প্রয়োজন।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
লেখক: লিটন রাকিব সাহিত্য সম্পাদক
লিটন রাকিব মূলত কবি। সহজ সরল ভাষা ও গভীর জীবনবোধ থেকে উৎসারিত তাঁর সৃষ্টি। ভালোবাসেন অরন্যের মত নির্জনতা। প্রথম কবিতা গ্রন্থ 'ঋতুর দান', ছড়া গ্রন্থ 'ছড়া দিলেম ছড়িয়ে' এবং সম্পাদিত গ্রন্থ 'গ্রামনগর ' এছাড়াও দীর্ঘদিন সম্পাদনা করে আসছেন 'তরঙ্গ ' পত্রিকা। প্রতিষ্ঠা করেছেন ভিন্নধর্মী সংগঠন 'আলোপথ'। তিনি নিয়মিত একাধিক দৈনিক সংবাদ পত্র সহ অনান্য পত্রিকায় লিখে চলেছেন। দেশে বিদেশে একাধিক সম্মানে সম্মানিত তরুন এই কবি ও গবেষক। এছাড়াও তিনি সাময়িকী'র সাবেক সাহিত্য সম্পাদক।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!