ইসলামে তারাবীহ নামাজের গুরুত্ব: করোনাকালে করণীয়

ম মাসুদ হোসেন খান
ম মাসুদ হোসেন খান
3 মিনিটে পড়ুন
ছবি সংগৃহীত

নবীজির (সাঃ) জীবনের শেষ বছরে মাত্র তিন দিন তারাবীহ নামাজ তাঁর অনুসারীদের সঙ্গে একত্রে আদায় করেছেন। এরপর উনি তারাবীর নামাজ নিজ বাসগৃহে পড়েছেন। পরে তিনি বলেছেন, নিয়মিত জামাতে তারাবীহ পড়লে এটা তাঁর অনুসারীদের জন্য বাধ্যতামূলক হয়ে যেত।

খলিফা আবু বকর এর সময়কাল থেকে এবং খলিফা ওমর এর শুরুর দিক পর্যন্ত মুসলমানেরা একক বা ছোট ছোট জামাতে তারাবীহ নামাজ পড়তেন। খলিফা ওমর ছোট ছোট অনেকগুলো পৃথক জামাতে তারাবীহ পড়তে দেখে তিনি সবাইকে একটি জামাতে তারাবীহ নামাজ পড়ার জন্য সবাইকে একত্রিত করেন। কিন্তু তিনি নিজে তারাবীহর জামাতে অংশগ্রহণ করেননি। তাঁরা ৮ রাকাত তারাবীহ পড়তেন যা পরবর্তীতে ২০ রাকাতে বৃদ্ধি করা হয়।

সহিহ বুখারি অনুযায়ী তারাবীহ নামাজ ৮ রাকাত। নবীজি (সাঃ) ৮ রাকাত তারাবীহ নামাজে ইমামতি করেছিলেন। তারাবীহ নামাজ সর্বনিম্ন ২ রাকাত আর সর্বাধিক ২০ রাকাত পড়া হয়। তবে, খলিফা ওমর বিন আব্দুল আজিজের সময় (৭১৭-৭২০ খ্রিস্টাব্দ) মদিনার মুসলমানেরা ৩৬ রাকাত পর্যন্তও তারাবীহ পড়েছে।

আয়েশা (রাঃ) বর্ণিত হাদিস অনুযায়ী নবীজি ৮ রাকাত তারাবীহ আর ৩ রাকাত ওয়িতির নামাজ পড়তেন রমজানের রাতে।

অধিকাংশ মুহাদ্দিসগণ ৮ রাকাত তারাবীহ এবং ৩ রাকাত ওয়িতির নামাজের কথা বলেছেন; ইমাম আহমাদ, ইমাম আবু হানিফা এবং ইমাম আশ-শাফি ২০ রাকাত তারাবীহ এবং ৩ রাকাত ওয়িতির; এবং ইমাম মালিক ৩৬ রাকাত তারাবীহ এবং ৩ রাকাত ওয়িতির নামাজ পড়তে বলেছেন।

বিশ্লেষণে দেখা যায়, তারাবীহ নামাজ সুন্নাতে মোয়াক্কেদাহ। নবীজি (সাঃ) ৮ রাকাত তারাবীহ পড়েছেন অধিকাংশ রাতে। তিনি মাত্র ৩ রাতে তারাবীহ জামাতে পড়েছেন।

যেহেতু তারাবীহ নামাজ মসজিদে পড়া বাধ্যতামূলক নয়, এই করোনা মহামারীকালে তারাবীহ নামাজ নিজ বাসগৃহে পড়াই উত্তম বলে আমরা মনে করি। তারাবীহর সুন্নত নামাজ জামাতে পড়তে গিয়ে নিজের এবং জনস্বাস্থ্যকে ঝুঁকির মুখে ফেলা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না।

তবুও সরকার জনসাধারণের ধর্মীয় অনুভূতিকে গুরুত্ব দিয়ে তারাবীহর জামাতে অনধিক ২০ জন একত্রে নামাজ পড়ার অনুমতি দিয়েছে। এই আদেশ অবশ্যই পালনীয়।

এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, কোন কোন মসজিদে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মুসুল্লিদের বিবাদ হচ্ছে কোন ২০ জন জামাতে তারাবীহ পড়ার সুযোগ পাবে এ নিয়ে। এ ব্যাপারে আমাদের একটি সুপারিশ আছে।

মসজিদ কমিটি সংশ্লিষ্ট এলাকার নিয়মিত মুসুল্লিদের একটি তালিকা করে তাদের মধ্য থেকে প্রতিদিন ২০ জন করে ১লা রমজান থেকে ২৯শে রমজান পর্যন্ত ২৯টি ভিন্ন ভিন্ন তালিকা তৈরি করে মসজিদের গেটে নোটিস আকারে দিয়ে দিতে পারেন। শুধুমাত্র যেদিন যার নাম তালিকায় থাকবে তারাই ঐদিন জামাতে তারাবীহ পড়ার সুযোগ পাবে।

এভাবে সমস্যাটার সমাধান করা যেতে পারে। তবে অনেকেই হয়ত জামাতে তারাবীহ পড়ার সুযোগ একেবারে না পেতে পারেন এ বছর যদি সংশ্লিষ্ট মসজিদ এলাকায় ৬০০ বা ততোধিক নিয়মিত মুসুল্লি থেকে থাকেন।

আর একটি বিষয় এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে। সেটি হচ্ছে, অনেকেই দৈনিক ৫ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ জামাতে পড়েন না অথচ তারাবীহ নামাজ জামাতে পড়তেই হবে এমন মানসিকতা বা ইচ্ছা পোষণ করেন। মুসলমান হিসেবে এটা সবাই জানেন যে দৈনিক ৫ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ অনেক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর তারাবীহ মাত্র সুন্নাতে মোয়াক্কেদাহ, ফরজ বা এমনকি ওয়াজিব নয়।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!