ফিরে আসবো, ফুরিয়ে গিয়ে, তৃষ্ণার জল এবং অন্যান্য কবিতা

জয়িতা চট্টোপাধ্যায়
3 মিনিটে পড়ুন

ফিরে আসবো

ফিরে আসবো মৃত্যুর পরেও
যে শীতরাত ফুরতে চায় না
তাকে অজ্ঞাতবাসে রেখে ফিরে আসবো
মাটি খুঁড়ে তোমার জন্য তুলে আনবো গল্প
যে নদীতে আমি ডুবে যাচ্ছিলাম
সাহায্য করার মতন বড় হয় না কেউ
যখন সেটা বুঝলাম,
আমার হারিয়ে যাওয়া নক্ষত্রগুলো তখনই আত্মগোপন করল,
সবাই যে আঙুল দিয়ে সবাইকে ছোঁয়ে,
সেই আঙুলে আমি তোমার হৃদয়কে ছুঁতে পারিনি,
তবুও আমি ফিরে আসবো,
মৃত্যুর পরেও ফিরে আসবো।

ফুরিয়ে গিয়ে

তোমাকে ভালোবাসি গতরাতের
বাসি ভাত খেতে খেতে
মনে পড়ে সারাদিনের জল ঝরা
বেনোজলা নদী পেরতে পেরতে
প্রেম জাগে তিতাস শিখায়
তাপ লাগে হাতে
অনুতাপ তোমার ও তো হয়
আমাকে পোড়াতে পোড়াতে
কবিতার ভেতর আমিও কেঁদেছি
ভাত রেঁধেছি দুপুরে
রেখেছি তোমার বুকে তৃষ্ণার দাবী
ফুরিয়ে যেতে যেতে নেমেছি পুকুরে।

তৃষ্ণার জল

ভালোবেসেছি তোমায় সুদূর স্বপ্নের মতো
সুনীল সাগর, ক্লান্ত আকাশ, মেঘ রোদ্দুর কতো
কখনো উধাও কখনো তোমার চরাচরে বিস্তার
তোমার ঠিকানা মানচিত্র জানে কি? জানে কি গিটার?
তুমি যে আমার উরন্ত ডাকঘরের একমাত্র চিঠি,
নিখোঁজে তুমি, মেধা ও মননে জ্বলছ ধিকিধিকি,
কখনো তুমি সমুখে দাঁড়াও কখনো নিরুদ্দেশ,
স্হবির কিংবা জড়সর নয়,
অলীক স্বপ্ন সুদুরে যার শেষ,
ধুলো ও মাটিতে বেঁধছ আমায়
বেঁধে গেছি পরস্পর, মুগ্ধ মেঘের মতো তুমি
আমার একান্ত তৃষ্ণার জল।

প্রাণ

আমাকে কবিতা লিখতে হয় রোজ নিয়ম মেনে
না লিখলে যে রাঙা ভোর মুখ ফিরিয়ে নেবে
অভিমান করবে টগর, শিউলি, বকুল
ওদের মন খারাপের খবর কে আমায় দেবে?
কালো কুয়াশায় যখন ঢাকবে আকাশ মুখ
আমি কবিতা না লিখলে কে বুঝবে ওদের দুঃখ সুখ?
গাছেরাও হয়তো বিছোবে না ডালপালা
মনক্ষুন্ন হয়ে জমিয়ে রাখবে রাগ
কাকে পড়াবো আমার কবিতার মালা?
তৃষ্ণা কাতর ঘাসের দুঃখ আমাকে লিখতেই হবে
লিখি বলেই তো নদীর বাঁকে বাঁকে কলতান
চাঁদ এতো উজ্জ্বল, কবিতায় ওদের আটকে থাকে প্রাণ।

- বিজ্ঞাপন -

রাজার আদেশে

কোনোদিন ভেবছ কোনো রাজকীয় ভাসে
যদি রজনীগন্ধা আর নাই ফোটে
ফুলেরা বড় অভিমানী, বা ওদের আদেশ অমান্য করে যদি গাছেরা ঝড় তোলে
ওদের নিষেধের বেড়া ভেদ করে সুবিস্তৃত হোক সবুজ
পাখিরা কি স্বভাবজাত গান ছেড়ে দিতে পারে?
ওদের কথায় গেয়ে উঠতে পারে নতুন সঙ্গীত?
পাখিরা যদি ভুলে যায় ভৌগোলিক সীমা,
কোনো প্রশ্ন করবে না তো আকাশ নীলিমা?
আবহমান নদী ভাসিয়েছে কুল, ভাসায় বসতি
তবু তাকে ছাড়া লেখা হবে না কোনও গান লেখা হবে না স্তূতি,
এ পৃথিবীর আকাশ নির্বিবাদে বিলিয়েছে ছায়া,
সকলের কাছে ঋণী আমি, ঋণী আমার কবিতারা।

কেমন আছো?

আমার আহত কবিতা বহু দিন কোনও খবর নেই তোমার,
তুমি কেমন আছো?
আমার ফেলে আসা পথ সহস্র দিন পেরিয়ে গেছে
তুমি কেমন আছো?
আমার সুখ দুঃখের সাথী অঝোর বৃষ্টির ভেতর শত শত দিন কেটে যাচ্ছে
কেমন আছো তুমি?
আমার মধ্যরাতের চাঁদ, এখন কেউ কথা বলে তোমার সাথে?
কে জিজ্ঞাসা করে তোমার মন খারাপের কথা?
অলস নিদ্রাতে চোখ বুজি না আর,
তুমি ভালো আছো তো?
আমার অসুখ আচ্ছন্নতা অবশ করেনি শরীর,
তাই তোমার খবর নেওয়া হয়নি,
তুমি ভালো আছো তো?
বসন্ত রাতের একলা কোকিল,
নিমগ্ন হইনি তোমার ডাকে হাজার হাজার দিন,
তুমি কেমন আছো?
ভবঘুরে আমার ছন্নছাড়া প্রেমিক,
যাকে নিয়ে কবিতা লিখি না তা প্রায় কয়েক যুগ হল,
সে ভালো আছে তো?
শুধু তোমরা ভালো থেকো!

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
কবি। পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
মন্তব্য নেই

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

একটি অ্যাকাউন্ট নেই? নিবন্ধন করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!