কবি তুষার ভট্টাচার্যের ছ’টি কবিতা

তুষার ভট্টাচাৰ্য
তুষার ভট্টাচাৰ্য
2 মিনিটে পড়ুন
সাময়িকী আর্কাইভ

পৌঢ় ঈশ্বর

রাত্রির আদিম অন্ধকারে বাদুড়ের ঠোঁট থেকে বাতাসে উড়ে এল এক অজানা ধ্বংসের বীজ,
রৌরব পৃথিবীর বুকে নিঃশব্দ নীরবে শুরু করে দিল করোনার আশ্চর্য মারণলীলা,
নদীর জলে ভেসে গেল অজস্র মানুষের পচাগলা শব,
বহন করার কেউ নেই, মাটি দেবার, দাহ করার কেউ নেই আজ,
চরাচর জুড়ে শুধু হাহাকার আর শকুনের কর্কশ উল্লাস;

অথচ কেউই খেয়াল করেনি,
মন্ত্রী থেকে সান্ত্রী, বিজ্ঞানী, গবেষক, ডাক্তার, হাকিম, কোবরেজ, গরীবগুর্বো চাষী, পরিযায়ী শ্রমিক, মার্কসবাদী আগুন খোর বিপ্লবী, দক্ষিণপন্থী নেতা, দরবেশ, জলপড়া, তাবিজ কবচ,
আমেরিকা, রাশিয়া, চিন, মহাভারত
থরহরি কম্প সবাই মৃত্যু ভয়ে গাইছে শুধু
কান্নার রুদালি গান,
পৃথিবী এখন গিয়েছে ভরে উন্মত্ত মানুষের অফুরান লোভ পাপ আর হিংসায়;
তবু, প্রতিশোধ আর চাই না বলে মাটির তলা থেকে লুকোনো সমস্ত পরমাণু বোমা, অস্ত্রশস্ত্র, বন্দুক, হিংসা, বিদ্বেষ নিয়ে শান্তি বিমানে চেপে
চলে যাচ্ছেন আমাদের পৌঢ় ঈশ্বর আলোকবর্ষ থেকে অনেক অনেক দূরের গ্রহান্তরেl

আবার জেগে উঠবে এই পৃথিবী

আবার জেগে উঠবে অমল ধবল রোদ্দুরে রাঙা এই পৃথিবী
পাখিদের সুমিষ্ট কলরবে, নদীর ঢেউ কলতানে,
দুধের শিশুদের খিলখিল মুক্তো হাসিতে,
অচিরেই কেটে যাবে মহামারীর ভয় অশনিসংকেত;
অলৌকিক জোছনার রুপোলি চাঁদ সবার ক্লান্ত চোখে
বুনে দিয়ে যাবে
থোকা থোকা স্বপ্নের অক্ষর, কারুকাজ;
মহামারীর নাগপাশ বন্ধন ছিন্ন করে মানুষের
জয় হবেই আবার এই পৃথিবীতেl

নদীর জলে

বিষাদ জীবনের বিবর্ণ পাণ্ডুলিপি ঘিরে
দুঃখের স্মৃতি কথা
জেগে উঠলেই
আমি নদীর জলে ভাসিয়ে দিই
ব্যর্থতার সমস্ত অক্ষর;
তারপর হৃদয়ের জনপদে জেগে ওঠে
ভালবাসার আবীর রাঙা
বসন্ত পলাশ উৎসবl

অভিমানের অশ্রু

অভিমানের অশ্রু দু’চোখে ঝরে পড়লেই
বর্ষার বিষণ্ণ চাঁদ
ডুব দেয় রাত্তিরে ঘুমোনো নদী জলেl

রোদ্দুরের কলম

পুবালি ভোর রোদ্দুরের স্বপ্নীল তুলি, কলম দিয়ে
আমি ঠিক এই মুহূর্তে
মুছে দিতে চাই –
দেশজুড়ে জেগে ওঠা
সমস্ত ধর্মীয় গোঁড়ামি, বিদ্বেষ,
হিংসা, আর বিভেদের পাঁচিল;
টাপুর টুপুর বৃষ্টি জলে ভেজা এই দেশের নরম মাটি তৃণঘাসে
দু’হাতে করে নীরবে ছড়িয়ে দিতে চাই
সম্প্রীতির অক্ষর বীজ;
ধর্মান্ধদের রক্তাক্ত অস্ত্র মাখা হাতে
পরিয়ে দিতে চাই ভালবাসার রাখি;
ধস্ত, বিপন্ন এই দেশের উদার আকাশে
বাতাসে আবার নিশ্চয়ই
ধ্বনিত হবে অমল বন্ধুতার জয়গান;
ভোরের আলোর পাখিরা নীরবে
শোনাবে- ‘সবার উপর মানুষ সত্য’ গানl

জন্মদিন

সোনার চামচ মুখে না দিয়ে যে মানব জন্ম
আমি পেয়েছি
তার ভিতরে লেগে থাকে শুধু
নুন ঘাম শ্রমের অশ্রুর অক্ষর
আর অপরিমেয় ঋণের
উত্তরাধিকার;
উপোসি রাত্তিরে
মা দুঃখ করে বলত
খোকা- হাড় হাভাতে গরীবদের কোনও
জন্মদিন নেইl

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!