লালমনিরহাটে পুলিশের নির্যাতনে যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন

লালমনিরহাট সদর উপজেলায় পুলিশের নির্যাতনে রবিউল ইসলাম খান (২৫) নামের এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে জেলা সদর হাসপাতালে ওই যুবকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল রাত থেকে দফায় দফায় লালমনিরহাট-পাটগ্রাম-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। এ সময় পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে অন্তত চার পুলিশ সদস্যকে আহত করেছেন তাঁরা।

নিহত ওই যুবকের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, গতকাল রাতে গ্রেপ্তারের পর রবিউল ইসলামকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে হত্যা করেছেন পুলিশের সদস্যরা। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। নিহত যুবকের পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে স্থানীয় একটি চড়ক মেলায় জুয়াবিরোধী অভিযানে হিরামানিক গ্রামের বাসিন্দা প্রহ্লাদ চন্দ্র রায় (৪০) ও কাজীর চওড়া গ্রামের রবিউল ইসলাম খানকে (২৫) আটক করে পুলিশ। এ সময় রবিউল হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে রাত ১১টার দিকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু রাত সোয়া ১১টার দিকে সদর হাসপাতালেই রবিউল মারা যান।

এ বিষয়ে রবিউল ইসলাম খানের ছোট ভাই সোহাগ খান বলেন, তার বড় ভাই রবিউল ইসলাম খান জুয়া খেলায় জড়িত নন। রবিউল বিবাহিত। রবিউল আট থেকে নয় মাসের কন্যাসন্তানের জন্য গ্রামীণ বৈশাখী মেলায় খেলনা কিনতে যান।

সোহাগ খান আরও বলেন, ‘মেলায় গেলে লালমনিরহাট সদর থানার এসআই হালিমুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ রবিউলকে আটকের পর জোর করে গাড়িতে ওঠানোর চেষ্টা করে। এ সময় রবিউলকে মারধর করতে করতে গাড়িতে তোলা হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নিলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আমরা দোষী পুলিশ সদস্যদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।’

লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ওই ব্যক্তিকে পুলিশ সদস্যরা গতকাল রাত ১১টার দিকে নিয়ে আসে। তার অবস্থা বিবেচনা করে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে বলা হয়। তবে এর অল্প সময়ের মধ্যেই ওই ব্যক্তি মারা যান।

লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) কামরুল হাসান বলেন, ময়নাতদন্তের পর ওই ব্যক্তির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পারব।

রবিউলের পরিবারের সদস্যরা বলেন, রবিউল জুয়া খেলতে নয়, তাঁর বাচ্চার জন্য খেলনা কিনতে মেলায় গিয়েছিলেন। আটকের সময় পুলিশের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হলে পুলিশ তাঁকে বেদম মারধর করে। তখন জ্ঞানহীন হয়ে পড়েন রবিউল। এরপর হাসপাতালে নিলে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তাঁরা থানায় মামলা করবেন।

নিহত রবিউল ইসলাম খানের মা সাফিয়া বেগম ও দাদি সাহেরা বেগম তাঁকে পুলিশ নির্যাতন করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে লালমনিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম গতকাল রাতে সদর হাসপাতালে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, জুয়াবিরোধী অভিযানে আটকের পর রবিউল অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে দ্রুত সদর হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালেই মারা গেছেন তিনি। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে রবিউলের লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে। পরিবার থেকে লিখিত কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!