বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী আবিষ্কার
ফেটে যাওয়া মোবাইল জুড়ে যাবে নিমেষেই!

সিদ্ধার্থ সিংহ
সিদ্ধার্থ সিংহ
3 মিনিটে পড়ুন

মোবাইলের ডিসপ্লে ফেটে গেলেও জুড়ে যাবে এক মুহূর্তে। আইআইটি খড়্গপুর এবং আইআইএসইআরের একদল বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেছেন মোবাইলের এই (কেলাস/Crystal) স্ব-মেরামতি (Automatic Healing)।

আইআইএসইআর কলকাতার সি. মাল্লা রেড্ডি, নির্মাল্য ঘোষ এবং আইআইটি খড়্গপুরের ভানু ভূষণ খাটুয়া— এই ৩ জন প্রধান বিজ্ঞানী এবং এই ৩ জন বিজ্ঞানীর অধীনে কাজ করা ৩ জন গবেষক সুরজিৎ ভুঁইয়া, শুভম চান্দেল এবং সুমন্ত কুমার করণ, মানে মোট ৬ জন মিলে এই যুগান্তকারী আবিষ্কারটি করেছেন।

গবেষণার সূত্রপাত, অধ্যাপক সি. মাল্লা রেড্ডি এবং তাঁর গবেষক-ছাত্র পূর্ব মেদিনীপুরের সুরজিৎ ভুঁইয়ার হাত ধরে। তাঁরাই প্রথমে কেলাসের এই স্ব-মেরামতি লক্ষ্য করেন। তাঁরা দেখেন, বল প্রয়োগ করে কোনও কেলাসকে ভাঙা বা চিড় ধরানো হলে তা ফের নিজে নিজেই জুড়ে যাচ্ছে। অনেকটা মানব শরীর যেমন নিজেই নিজের শরীরের ক্ষত মেরামত করে, ঠিক সে ভাবেই নিজেই মেরামত করছে কেলাস।

এ ব্যাপারে বিস্তারিত গবেষণার জন্য যুক্ত হন প্রথম ভারতীয় বিজ্ঞানী হিসেবে ‘জি সি স্টোকস’ পুরস্কার প্রাপ্ত অধ্যাপক ড. নির্মাল্য ঘোষ এবং তাঁর ছাত্র শুভম চান্দেল।
অন্য দিকে, খড়্গপুর আইআইটি’র অধ্যাপক ড. খাটুয়া এবং তাঁর গবেষক-ছাত্র সুমন্ত কুমার করণ লক্ষ্য করেন, এই কেলাসগুলো যান্ত্রিক শক্তিকে তড়িৎ শক্তিতেও রূপান্তর করতে সক্ষম। যাকে বলা হয়— পিয়েজো-ইলেকট্রিসিটি।

ড. খাটুয়া’র মতে, ‘বর্তমানে মোবাইল ফোন-সহ বিভিন্ন দৈনন্দিন জিনিসে যান্ত্রিক শক্তিকে তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তর করার পদ্ধতি মানে পিয়েজো-ইলেকট্রিসিটি ব্যবহার করা হয়। সেখানে পিয়েজো-ইলেকট্রিক ক্রিস্টাল ব্যবহার করলে যন্ত্রটি আরও উন্নত এবং দীর্ঘমেয়াদি হবে। শুধু তাই-ই নয়, রোবট এবং মহাকাশযানের ক্ষেত্রেও কেলাসের এই স্ব-মেরামতি বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করা যেতে পারে। কারণ, সেগুলোকে নিত্য রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। ২০১৯ থেকেই আমরা এই ধরনের একটি অর্গানিক মলিকল তৈরি করার চেষ্টা চালিয়ে গেছি। অবশেষে তা সফল হয়েছে।’

তাঁদের এই গবেষণা প্রথম প্রকাশিত হয় আমেরিকার ‘সায়েন্স’ জার্নালে। যা নিয়ে আলোড়ন তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানী মহলে।

ভারতীয় বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্বের দরবারে এ দেশের গবেষকরা যে কোনও অংশে কম যান না, এই নতুন গবেষণা তা ফের প্রমাণ করে দিল! কেলাসের এই বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে যে তথ্য সামনে এসেছে, তা সত্যিই অভূতপূর্ব।

প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, বিজ্ঞানীরা এও জানিয়েছেন, নিজে থেকে জুড়ে যাবে, এমন জৈব পদার্থ এর আগেও আবিষ্কার হয়েছে। কিন্তু সেগুলি ছিল সবই থকথকে নরম পদার্থ। এই ৬ জন বিজ্ঞানী যেটি আবিষ্কার করেছেন, তা আগের পদার্থগুলোর থেকে অন্তত ১০ গুন বেশি কঠিন। মোবাইল ফোন, এল ই ডি স্ক্রিন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, এই অতি স্ফটিক কঠিন পদার্থটি ফাটল বা ক্ষত মেরামত করে দেবে বলে প্রমাণিত হয়েছে গবেষণাগারে। স্বভাবতই, সারা বিশ্বে এ এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। আর সেই আবিষ্কারের সঙ্গেই জুড়ে গেল ভারতের নামও।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
২০২০ সালে 'সাহিত্য সম্রাট' উপাধিতে সম্মানিত এবং ২০১২ সালে 'বঙ্গ শিরোমণি' সম্মানে ভূষিত সিদ্ধার্থ সিংহের জন্ম কলকাতায়। আনন্দবাজার পত্রিকার পশ্চিমবঙ্গ শিশু সাহিত্য সংসদ পুরস্কার, স্বর্ণকলম পুরস্কার, সময়ের শব্দ আন্তরিক কলম, শান্তিরত্ন পুরস্কার, কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত পুরস্কার, কাঞ্চন সাহিত্য পুরস্কার, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা লোক সাহিত্য পুরস্কার, প্রসাদ পুরস্কার, সামসুল হক পুরস্কার, সুচিত্রা ভট্টাচার্য স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার, অণু সাহিত্য পুরস্কার, কাস্তেকবি দিনেশ দাস স্মৃতি পুরস্কার, শিলালিপি সাহিত্য পুরস্কার, চেখ সাহিত্য পুরস্কার, মায়া সেন স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার ছাড়াও ছোট-বড় অজস্র পুরস্কার ও সম্মাননা। পেয়েছেন ১৪০৬ সালের 'শ্রেষ্ঠ কবি' এবং ১৪১৮ সালের 'শ্রেষ্ঠ গল্পকার'-এর শিরোপা সহ অসংখ্য পুরস্কার। এছাড়াও আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত তাঁর 'পঞ্চাশটি গল্প' গ্রন্থটির জন্য তাঁর নাম সম্প্রতি 'সৃজনী ভারত সাহিত্য পুরস্কার' প্রাপক হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!