পশ্চিমবঙ্গ: বিদ্যানগর কলেজে বই প্রকাশ

অর্ঘ্য রায়
অর্ঘ্য রায়
4 মিনিটে পড়ুন

একসঙ্গে চারটি কবিতার বই ও দুটি পূজাবার্ষিকী উদ্বোধন করা হলো বিদ্যানগর কলেজের সেমিনার হলে। উদ্বোধন সঙ্গীত পরিবেশন করেন কলেজের ছাত্রী সুপর্ণা চক্রবর্তী। আগ্রহী অজস্র ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতিতে কবি বনানী চক্রবর্তীর দুটি কবিতার বই ‘ক্রমাগত চরকার ঘ্রাণ’ ও ‘বৃষ্টি সময় অন্তরে’ প্রকাশ পায়। গ্রন্থদুটি প্রকাশ করেন বিদ্যানগর কলেজের অধ্যক্ষ ড. সূর্য প্রকাশ আগরওয়ালা ও কবি শুভদীপ রায়।

পাশাপাশি কবি অবশেষ দাসের দুটি কবিতার বই ‘কিশোর কবিতা সংগ্রহ’ ও‌ ‘বুকের ভেতর ময়ূরাক্ষী ‘ প্রকাশ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অধ্যাপক সুব্রত সার ও কবি অরুণ পাঠক। বিশিষ্ট সাহিত্যিক অশোক কুমার মিত্র সম্পাদিত ‘ঝালাপালা ‘ ছোটগল্প‌‌বার্ষিকী প্রকাশিত হয়। সাহিত্যিক অধীর বিশ্বাসের গাঙচিল থেকে প্রকাশিত ‘ ‘দোয়েল ‘ পত্রিকার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় এই মঞ্চে। একই দিনে এতগুলি বই প্রকাশে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে আগ্রহ ছিল নজর কাড়া। বিশিষ্ট অধ্যাপক – অধ্যাপিকাদের মধ্যেও আন্তরিক আগ্রহ চোখে পড়ে। বিশেষ করে সহকর্মী বন্ধুদের বই প্রকাশ ঘিরে এইদিন কলেজে উৎসবের আমেজ চলে আসে। বিশেষ গ্রন্থপ্রদর্শনীর ব্যবস্থাও ছিল। কবি বনানী চক্রবর্তীর দুটি গ্রন্থ নিয়ে অসামান্য আলোকপাত করেন সাহিত্যের বেলাভূমি পত্রিকার সম্পাদক কবি অরুণ পাঠক। কবি অবশেষ দাসের দুটি গ্রন্থ নিয়ে মনোজ্ঞ আলোচনা করেন কবি শুভদীপ রায়। সমগ্র অনুষ্ঠানে পৌরোহিত্য করেন বিদ্যানগর কলেজের অধ্যক্ষ ‌ড. সূর্য প্রকাশ আগরওয়ালা। তিনি বলেন, সহকর্মীদের কাজের জায়গায় কেবলমাত্র একজন অধ্যাপক হিসেবে জানি। কিন্তু তার বাইরে এমন সাহিত্য চর্চা আমাদের কলেজের মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়। আগামীদিনে আরও গ্রন্থ নিশ্চয়ই প্রকাশিত হবে। অন্যান্য সহকর্মীদের যেকোনও স্তরের বই প্রকাশ করার বিষয়ে তিনি উৎসাহ দেন। তিনি আরও বলেন, কলেজ থেকে নিয়মিত পত্রিকা প্রকাশ করা হয়,যত্ন সহকারে। সেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিভা বিকশিত হচ্ছে। সহকর্মীদের লেখা প্রকাশ পাচ্ছে। আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের মৌলিক গ্রন্থ প্রকাশ করতে পারি,তেমন‌ প্রতিভার সন্ধান‌‌ চাই। অনুষ্ঠানের প্রধান‌ অতিথি অধ্যাপক সুব্রত সার অসাধারণ বক্তব্য পেশ‌ করেন। তিনি এই কলেজের ইংরেজি ‌ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক হলেও‌ বাংলা কবিতার চর্চার নিয়মিত খবর রাখেন। তিনি নিজেও লেখেন। সহকর্মী দুই কবি বইপ্রকাশে তিনি উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। বনানী চক্রবর্তী এবং অবশেষ দাসের ‌কবিতা সম্পর্কেও অসামান্য বক্তব্য রাখেন।

কলেজের ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি আমন্ত্রিত শিল্পীদেরও উপস্থিতি ছিল বেশ উজ্জ্বল। সাংস্কৃতিক ভাবে বিদ্যানগর কলেজ ছড়িয়ে আছে বলেই এইভাবে ঘর ও বাহির জুড়ে এই বৃহৎ আয়োজন বলে মনে হয়। বিখ্যাত চার নৃত্য শিল্পী সৌমিলি, ঈশানী , অর্পিতা ও শ্রেয়া আগমনী গানের ধারায় দর্শকদের আচ্ছন্ন করে দেন। বাংলা ভাষার ‌প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ঈশানীর নৃত্য আলাদা মাত্রা এনে দেয়।

বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ড.গোপা বিশ্বাস, অধ্যাপক সৌরভ সামন্ত, অধ্যাপক অর্ঘ্য চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।

বিদ্যানগর কলেজের অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি দেখে মনে হয়, বই প্রকাশ অনুষ্ঠান আগমনী উৎসব হয়ে উঠেছে। একঝাঁক অধ্যাপক ও অধ্যাপিকাদের মধ্যে ছিলেন নিয়তি ড. নিয়তি মাজি,অনন্যা পাকড়াশি, কমল কান্তি বিশ্বাস,সমিত চট্টোপাধ্যায়, অর্পণ কুমার রায়, দ্বিজেন্দ্রনাথ সামন্ত,ড. পলাশ দাস, সুদীপ্ত পাত্র, সাহিদুর রহমান লস্কর, ড. সুদীপ কুমার দাস, দোয়েল আইচ,গৌরব দাস,ঝুমা ভান্ডারী, পঙ্কজ মন্ডল, অভিজিৎ দাস,মেহেলী কাঞ্জী, রিয়া ভট্টাচার্য, সুপর্ণা বেরা সহ আরও অনেকে।

কবি বনানী চক্রবর্তী বলেন, লকডাউন পরবর্তী সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মূল স্রোতে ফিরে আনার অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপায় সংস্কৃতি চর্চা। বইপ্রকাশ বিষয়টি গৌণ ছাত্র-ছাত্রীদের জড়িয়ে নিয়ে পড়াশুনার মধ্যে তাদের ফিরিয়ে আনতে হবে।

অবশেষ দাস বলেন, বইপ্রকাশের জন্য অজস্র সভাঘর আছে। কিন্তু সকল সহকর্মী ও ছাত্রছাত্রীদের সামনে বই প্রকাশের আনন্দ আলাদা। মহাসিন্ধুর ওপার থেকে ভেসে আসা সঙ্গীতের মতো অভিনব। সবমিলিয়ে বিদ্যানগর কলেজে উৎসবমুখর একটি দিন ছিল এই বই প্রকাশ অনুষ্ঠান।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

বিষয়:
এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
সাংবাদিক ও কলামিস্ট। পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!