শকুন্তলা রেলওয়ে: স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও এই জায়গাটি ব্রিটিশদের দখলে, দিতে হয় কোটি টাকার কর

সিদ্ধার্থ সিংহ
সিদ্ধার্থ সিংহ
3 মিনিটে পড়ুন

স্বাধীনতার ৭৫ বছর কেটে গেলেও এই ভারতেই রয়েছে এমন একটি জায়গা, যেটা আজও ব্রিটিশদের দখলে। তার ফলে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার কর দিতে হয় ওই ব্রিটিশ সংস্থাকে। কিন্তু কেন ওই জায়গাটি আজও ব্রিটিশদের অধীনে? এর পিছনে রয়েছে একটি ঐতিহাসিক কারণ।

মহারাষ্ট্রের অমরাবতী এবং মর্তুজাপুরের মধ্যে একটি ন্যারোগেজ রেললাইন স্থাপন করা হয়েছিল ব্রিটিশদের আমলে। যার মোট দৈর্ঘ্য হল ১৮৯ কিমি। এই ট্রাকটিতে সারা দিনে কেবলমাত্র একটি যাত্রীবাহী ট্রেনই চলাচল করে। যার নাম- শকুন্তলা এক্সপ্রেস। অতি ধীর গতিতে চলা এই ট্রেনটি সম্পূর্ণ যাত্রা করতে ৬-৭ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এই রুটের মধ্যে ছোট-বড় মিলিয়ে ট্রেনটি মোট ১৭টি স্টেশনে থামে।

আসলে এক সময় অমরাবতী কার্পাস তুলার জন্য বিখ্যাত ছিল। যার বাজার সারাদেশে ছেয়ে গিয়েছিল। আর ব্রিটিশরা ব্যবসার স্বার্থে কার্পাস তুলা মুম্বাই বন্দরে আনার জন্য এই রেলপথটি তৈরি করেছিলেন।

১৯০৩ সালে ব্রিটিশ সংস্থা ক্লিক নিক্সনের এই রেলপথটি তৈরি করতে সময় লেগেছিল ১৩ বছর। এই রুটে যেহেতু একমাত্র শকুন্তলা এক্সপ্রেস চলে, তাই এই রুটটি শকুন্তলা রুট নামেই পরিচিত।

প্রায় ১০০ বছরের পুরনো এই ট্রেনটি আগে বাষ্প ইঞ্জিনের সাহায্যে চলত। ১৯৯৪ সালে এটি ডিজেল ইঞ্জিনের দ্বারা চালানো শুরু হয়। এই রেল রুটটি এখনও ওই ব্রিটিশ সংস্থার দ্বারা পরিচালিত হয় এবং এই ৫ বগিওয়ালা ট্রেনটিতে প্রতিদিন এক হাজারেরও বেশি মানুষ যাতায়াত করেন।

ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার এত বছর পরেও কেন এই রেলপথটি ব্রিটিশদের অধীনে রয়েছে তার পিছনে একটি কারণ আছে। আসলে, ১৯৫১ সালে যখন ভারতের সমস্ত রেলপথের জাতীয়করণ করা হয়েছিল, তখন কোনও এক অজানা কারণে এই রেলপথ রুটটি ভারত সরকারের অধীনে আসেনি। সেই যে তখন আসেনি, সেটা আর পরেও কখনও জাতীয়করণ করা হয়নি। তাই আজও ভারত সরকারকে এই রেলপথের জন্য প্রতি বছর ওই ব্রিটিশ সংস্থাকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা করে কর দিতে হয়।

প্রতি বছর ভারত সরকারের কাছ থেকে এতগুলো টাকা কর হিসেবে নিলেও, রেলপথটির রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্ব ওই ব্রিটিশ সংস্থার হলেও, তারা কিন্তু সে ভাবে কোনও দেখভাল করে না। ফলে খুবই খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে ওই ট্রাকটি। জানা গেছে, গত ৬০ বছর এই রেল ইঞ্জিনটির কোনও মেরামত করা হয়নি। তাই শতবর্ষ পুরনো ওই জরাজীর্ণ, বৃদ্ধ রেল ইঞ্জিনটির সর্বাধিক গতি এখন ঘণ্টায় মাত্র ২০ কিলোমিটারে নেমে এসেছে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
২০২০ সালে 'সাহিত্য সম্রাট' উপাধিতে সম্মানিত এবং ২০১২ সালে 'বঙ্গ শিরোমণি' সম্মানে ভূষিত সিদ্ধার্থ সিংহের জন্ম কলকাতায়। আনন্দবাজার পত্রিকার পশ্চিমবঙ্গ শিশু সাহিত্য সংসদ পুরস্কার, স্বর্ণকলম পুরস্কার, সময়ের শব্দ আন্তরিক কলম, শান্তিরত্ন পুরস্কার, কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত পুরস্কার, কাঞ্চন সাহিত্য পুরস্কার, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা লোক সাহিত্য পুরস্কার, প্রসাদ পুরস্কার, সামসুল হক পুরস্কার, সুচিত্রা ভট্টাচার্য স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার, অণু সাহিত্য পুরস্কার, কাস্তেকবি দিনেশ দাস স্মৃতি পুরস্কার, শিলালিপি সাহিত্য পুরস্কার, চেখ সাহিত্য পুরস্কার, মায়া সেন স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার ছাড়াও ছোট-বড় অজস্র পুরস্কার ও সম্মাননা। পেয়েছেন ১৪০৬ সালের 'শ্রেষ্ঠ কবি' এবং ১৪১৮ সালের 'শ্রেষ্ঠ গল্পকার'-এর শিরোপা সহ অসংখ্য পুরস্কার। এছাড়াও আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত তাঁর 'পঞ্চাশটি গল্প' গ্রন্থটির জন্য তাঁর নাম সম্প্রতি 'সৃজনী ভারত সাহিত্য পুরস্কার' প্রাপক হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!