ক্যাম্পে ১৯ দফা দাবিতে রোহিঙ্গাদের ‘গো হোম’ সমাবেশ

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন
নিজ দেশে ফিরতে রোহিঙ্গারা মানবন্ধনও করেছিলেন। ফাইল ছবি

বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে নিরাপদে মিয়ানমারে ফেরাসহ ১৯ দফা দাবিতে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সমাবেশ করেছে রোহিঙ্গারা। সমাবেশে “লেটস গো হোম, লেটস গো টু মিয়ানমার” লেখা ব্যানার দেখা যায়।

রবিবার (১৯ জুন) সকাল থেকে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন স্থানে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন রোহিঙ্গাদের কমিউনিটির শীর্ষ নেতারা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার সামসুদ দৌজা নয়ন।

তিনি এ বিষয়ে বলেন, “বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে রোহিঙ্গারা স্ব-স্ব উদ্যোগে প্রত্যাবাসনের দাবিতে সমাবেশ করছে। তবে একত্রিত হয়ে বিশাল সমাবেশ নয়, উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিচ্ছিন্নভাবে সমাবেশ করছে।”

উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা নুর মোহাম্মদ বলেন, “বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে একদিন আগে থেকে আমরা সমাবেশ করছি। কারণ, আমরা নিরাপদে দেশে ফিরতে চাই।”

রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ জুবাইর বলেন, “উখিয়া ও টেকনাফ ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা নিরাপদ প্রত্যাবাসন চান। এ কারণে বিভিন্ন দাবিতে সমাবেশ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন দাবি করছি। এজন্য প্রত্যেকটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৃথকভাবে সমাবেশ করা হয়েছে।”

উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা মাহমুদ বলেন, “বালুখালী ক্যাম্পে সমাবেশ ও বিক্ষোভ করা হয়েছে। একটাই দাবি, আমরা মিয়ানমারের নাগরিকত্ব নিয়ে ফিরতে চাই।”

উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের (কুতুপালং) ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন বলেন, “রোহিঙ্গারা দ্রুত মিয়ানমারে ফিরে যাক, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। কারণ, রোহিঙ্গাদের কারণে বর্তমানে জননিরাপত্তা, অর্থনৈতিক ও মানসিক অবস্থা এখন হুমকির মুখে। এজন্য বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসা উচিত।”

সমাবেশে পৃথকভাবে ১৯ ও ১৩ দফা দাবি জানিয়েছেন রোহিঙ্গারা। দাবির মধ্যে রয়েছে— অন্যান্য জাতিদের মতোই আমাদের মূল অধিকার পুনরুদ্ধার করতে হবে, রোহিঙ্গাদের “রোহিঙ্গা” হিসেবেই সম্বোধন বা পরিচয়ের স্বীকৃতি দিতে হবে, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্রুত সময়ের মধ্যে হতে হবে, মিয়ানমার ট্রানজিট ক্যাম্পে অবস্থানের সময়সীমা কমাতে হবে, প্রত্যেক রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসন করতে হবে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি সদস্যকে স্ব-স্ব গ্রামে গ্রামে প্রত্যাবাসন করতে হবে, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সাথে প্রতিটি সমঝোতায় অবশ্যই জড়িত থাকতে হবে (প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় ইউএসএ, এলআইএন, ওআইসি, ইউকে, ইইউ, আসিয়ান, বাংলাদেশ, এনজিও ইত্যাদি দেশ ও এনজিওদের অবশ্যই জড়িত থাকতে হবে), রোহিঙ্গারা ঘরে ফেরার আগে তাদের সুরক্ষা দিতে আরটুপি (রেসপনসিবিলিটি টু প্রটেক্ট) অবশ্যই আরাকানে থাকতে হবে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিজ দেশে পুনর্বাসিত করতে হবে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী হিসেবে অভিযুক্ত করা যাবে না, কোনোভাবে বা অজুহাতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বন্ধ করা যাবে না, আন্তর্জাতিক মিডিয়া আরাকানের প্রত্যেক এলাকাতে পরিদর্শনের অনুমোদন থাকতে হবে, ১৯৮২ সালের নাগরিক আইন বাতিল করতে হবে, প্রত্যাবাসনের আগে কারণবশত আরাকানে আইডিপি ক্যাম্প যতটুকু সম্ভব বাতিল করতে হবে, রোহিঙ্গাদের জন্য দায়িত্ব থাকতে হবে, রোহিঙ্গাদের সম্পদ ফিরিয়ে দিতে হবে, জমি থেকে বায়েজাপ্তকৃত চিংড়ি পুকুর ও চারণভূমি রোহিঙ্গাদের ফেরত দিতে হবে।

এর আগে ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট এআরএসপিএইচ-এর ব্যানারে বড় একটি সমাবেশ হয়েছিল। ওই সমাবেশের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহ। ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে তিনি মারা যান। মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে হত্যাকাণ্ডের জন্য মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন আরসাকে দায়ী করা হয়েছে। তিনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পক্ষে জনমত গঠনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যোগাযোগ ও রোহিঙ্গাদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠায় তাকে হত্যা করা হয় বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!