যুদ্ধ একা বাঁধে না, উসকানি কেউ তো দিচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে একক দেশ হিসেবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে ওঠা প্রস্তাবে বাংলাদেশ ভোট দেয়নি। তবে ইউক্রেনের পক্ষে তোলা প্রস্তাবটি মানবাধিকার বিষয়ক হওয়ার কারণে বাংলাদেশ ভোট দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বাংলাদেশের পক্ষে রাশিয়ার অবদানের কথা স্বীকার করে বুধবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান তিনি। এর আগে চুন্নু তার প্রশ্নে রাশিয়া-ইউক্রেন ভোটের বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘে যখন প্রথম প্রস্তাবটি (রাশিয়ার বিরুদ্ধে) এলো, আমরা দেখলাম সেই প্রস্তাবে মানবাধিকারের কোনো কথা নেই। যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা নেই। একটা একটা দেশের বিরুদ্ধে ভোট। সেটা হলো রাশিয়া। তখন আমি বললাম না, এখানে তো আমরা ভোট দেব না। কারণ যুদ্ধ তো একা একা বাঁধে না। উসকানি তো কেউ না কেউ দিচ্ছে। দিয়ে তো বাঁধাল যুদ্ধটা। তাহলে একটা দেশকে কনডেম (নিন্দা) করা হবে কেন? সেজন্য আমরা ভোটদানে বিরত ছিলাম।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাশিয়া আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেভেন ফ্লিপ পাঠিয়ে যখন পাকিস্তানের পক্ষে; রাশিয়া তখন আমাদের পক্ষে দাঁড়াল। কাজেই দুঃসময়ে যারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, আমরা নিশ্চয়ই তাদের পাশে থাকব। কিন্তু তারা যদি কোনো অন্যায় করে নিশ্চয় সেটা আমরা মানবো না। আর আমরা যুদ্ধ চাই না। কিন্তু যুদ্ধটা বাঁধাল কারা? সেটাও আমাদের দেখতে হবে। সেজন্য আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। যেহেতু একটি দেশের বিরুদ্ধে প্রস্তাব এসেছে, এজন্য সিদ্ধান্ত নিলাম ভোট দেব না।

দ্বিতীয় প্রস্তাবের (ইউক্রেনের পক্ষে) প্রসঙ্গ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, যুদ্ধের ফলে ইউক্রেনের মানুষের কষ্ট হচ্ছে। ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে সবাই কষ্ট পাচ্ছে। দ্বিতীয় প্রস্তাবে যেহেতু মানবাধিকার বিষয়টি রয়েছে সেজন্য আমরা ভোট দিয়েছি। মানবতার বিষয়টি সামনে আসায় আমরা ভোট দিয়েছি। আমার মনে হয় এটি একেবারে স্পষ্ট। এ নিয়ে আর কারো কোনো দ্বিধা থাকা উচিত নয়।

জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু প্রশ্ন তোলেন, র‌্যাবের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আগে সেখানকার বাংলাদেশি দূতাবাস কেন জানতে পারল না- এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, নাইন-ইলেভেনের পর যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শে সন্ত্রাস দমনে তখনকার বিএনপি সরকার র‌্যাব সৃষ্টি করেছিল। তবে, তারা র‌্যাবকে ইচ্ছেমতো ব্যবহার করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ আসার পর র‌্যাব জঙ্গি, সন্ত্রাস দমন ও হত্যার তদন্তসহ মানবিক কাজই করছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন নয় তারা মানবাধিকার রক্ষার জন্যই কাজ করছে।

র‌্যাবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের দেশে কিছু মানুষ আছে। এদের কাজ হচ্ছে বাংলাদেশে যখন একটি অস্বাভাবিক সরকার থাকে অথবা অবৈধ দখলকারী কেউ যদি থাকে- তখন তারা খুব ভালো থাকে। তাদের খুব গুরুত্ব থাকে। যখন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চলমান থাকে তারা ভালো থাকে না। এজন্য তারা সবসময় তার (সরকারের) বিরুদ্ধে লেগেই থাকে। যতই ভালো কাজ করুক তারা তার পেছনে লেগেই থাকে কারণ তারা ভালো দেখতে চায় না।

সংসদ সদস্যরা চাইলে পরবর্তীতে নামগুলো দিতে পারবেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তারা সবসময়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। র‌্যাব সম্পর্কেও অপপ্রচার তারাই করেছে। ওখানকার যারা কংগ্রেসম্যান সিনেটর, তাদের কাছে তথ্য পাঠানো, চিঠি দেওয়া- নানাভাবে তারা এ অপপ্রচার করে। সেখানকার আমাদের দূতাবাস সবসময় সক্রিয় ছিল। যখন এ বিষয় নিয়ে তারা আলোচনা করেছে তখন দূতাবাসের কাউকে ঢুকতে দেয়নি। এটা আরও দুই-তিন বছর আগের কথা। এর প্রক্রিয়া বহুদিন থেকেই চলছে। আমরা বারবার তাদের জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, র‌্যাবের কোনো সদস্য যখন অন্যায় করেছেন, সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু তাকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। আপনারা জানেন আমাদের একজন মন্ত্রীর জামাই একটি অপরাধ করেছিল। মন্ত্রীর জামাই হিসেবে কিন্তু আমরা ক্ষমা করিনি। তাকে ঠিকই বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। সে যেই হোক না কেন। আইনশৃঙ্খলা সংস্থার কেউ কোনো অপরাধ করলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিই। কাজেই এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার কিছু থাকে না।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!