অনিমা জুয়েলার্স’এর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

নাটোর প্রতিনিধি
নাটোর প্রতিনিধি
4 মিনিটে পড়ুন

নাটোরের তৈরি স্বর্ণের অলংকারের সুনাম রয়েছে দেশসহ উপমহাদেশের অনেক দেশেই। রাজকীয় সময়ে গড়ে ওঠা স্বর্ণকারপট্টি, নাটোর পৌরসভা দুই নম্বর ওয়ার্ডের পিলখানা, আংশিক লালবাজার ও আংশিক কাপুড়িয়া পট্টি জুড়ে অবস্থিত।

সম্প্রতি নাটোর স্বর্ণকার পট্টির সবচেয়ে বড় দোকান অনিমা জুয়েলার্স‘এর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। তবে দোকান মালিকের দাবি কোনো রকম প্রতারণা করা হচ্ছে না। আর পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা বলছেন প্রতারক যেই হোক, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

নাটোর পৌরসভার হাফরাস্তা এলাকার ডাঃ আব্দুল হাই জানান, অনেক কষ্টে উপার্জিত অর্থ দিয়ে গত 0১,0৯,২০০৯ খ্রিস্টাব্দে অনিমা জুয়েলার্সে একজোড়া স্বর্ণের বালা তৈরির অর্ডার দিয়েছিলাম। যে অলংকারটি আমাকে ডেলিভারি দেওয়া হয়েছিল ১৭. ৯. ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে। ২ ভরি স্বর্ণের দাম মজুরিসহ ৪৬ হাজার ৮ শত ২০ টাকা।

অলংকার বুঝে নিয়ে টাকা পরিশোধ করেছিলাম। যে অলংকারের বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। সম্প্রতি অসুস্থ থাকার কারণে অলংকারটি অনিমা জুয়েলার্সে বিক্রি করতে যাই। দোকান মালিক জানান, এই মেমো আমাদের দোকানের, তবে স্বর্ণ অলংকারটি আমাদের দোকানের না এবং অলংকারটি স্বর্ণেরও নয়।’

নাটোর সদর উপজেলার ৩ নং দিঘাপতিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম হাগুড়িয়া গ্রামের লুৎফা বেগম জানান, ‘অনিমা জুয়েলার্স থেকে একটি সোনার চেইন তৈরি করিয়েছিলাম। প্রায় ১৫ দিন ব্যবহার করার পরে সোনার রং তামাটে হয়ে যায়। তারপরে দোকানে গেলে দোকানদার জানায়-

আপনার শরীরে এলার্জি আছে তাই কালার ডিসকালার হয়ে গেছে, সমস্যা নেই ঠিক করে দেব। এইভাবে কয়েকবার যাওয়ার পরে সন্দেহবশত অন্য দোকানে দেখালে, সেই দোকানদার জানায়, এটা সোনার না। এরপর অনিমা জুয়েলার্সের মালিকের সাথে অনেক কথা কাটাকাটি হয়। তারপরে আর কি করবো?’ নিরুপায় হয়ে ফিরে আসি।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির নাটোর জেলা শাখার সাবেক সভাপতি, অনিমা জুয়েলার্সের স্বত্তাধিকারী নীরেন্দ্র নাথ কর্মকার (দুলাল) জানান,‘আমাদের এই প্রতিষ্ঠানে কোনরকম প্রতারণা করা হয় না। দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা এই শহরে সুনামের সহিত ব্যবসা-বাণিজ্য করছি।’

নাটোরের সিংড়া উপজেলার ভাঙ্গাজাঙ্গাল গ্রামের পাশে অবস্থিত, নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার সমস পাড়া গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবারের নীরেন্দ্র নাথ কর্মকার (দুলাল) এখন নাটোর শহরে ব্যবসা করে শত শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।

তার উত্থানের গল্প শুনতে এই প্রতিবেদক গিয়েছিলেন তার জন্মভিটা সমস পাড়া গ্রামে। জনশ্রুতি রয়েছে স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে তারা বাড়ির পেছনে ডোবা খননকালে একটি স্বর্ণের মূর্তি পেয়েছিল। তারপর থেকেই তাদের পরিবারের ভাগ্য বদলে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জুয়েলারি ব্যবসায়ী জানান, ‘অনিমা জুয়েলার্স’এর মালিক এতইটাই বৃত্তবান ও প্রভাবশালী যে মেগাসিটি মুম্বাইতে স্বর্ণ প্রদর্শনী হলে তার জন্য একটি স্টল বরাদ্দ থাকে।সেখানে কত টন সোনা প্রদর্শন করেন তার হিসাব কে রাখে? রাজস্ব ফাঁকিসহ দেশের অর্থ বহির্বিশ্বে পাচারেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আশেপাশের বেশকয়েকজন জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা জানান, ‘মাঝেমধ্যেই অনিমা জুয়েলার্সের ভিতরে খরিদ্দারদের হট্টগোলের শব্দ শোনা যায়। দোকান মালিকের বিরুদ্ধে অনেক ক্রেতাই প্রতারণার অভিযোগ করেন। কিন্তু তিনি অত্যন্ত প্রভাবশালী ও বিত্তবান হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এই এলাকার কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলেন না।’

বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি নাটোর জেলা শাখার সাধারন সাধারণ সম্পাদক ভবেশ চক্রবর্তী ভক্ত জানান, ‘শতকোটি টাকার মালিক অনিমা জুয়েলার্স’ এ ধরনের প্রতারণা করছে বলে আমার জানা নেই। বিগত দিনেও এধরনের অভিযোগ অনিমা জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে কেউ করেনি।’

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, ‘প্রতারক যত বড় আর যতই শক্তিশালী হোক, তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!