সমুদ্র দর্শনে আরও একবার (পর্ব ১০)

কামরুল হাসান
কামরুল হাসান
11 মিনিটে পড়ুন
সোনাদিয়া দ্বীপ পশ্চিম পাড়া

সোনাদিয়া দ্বীপটিকে আকাশ থেকে দেখলে একটি পাখীর মতো দেখায়। কক্সবাজার সংলগ্ন মগচর হলো পাখিটির মাথা, আশ্চর্য তার ঠোঁটও আছে, পূ্র্ব পাড়ার সবটুকু ও পশ্চিম পাড়ার কিছুটা তার শরীর, আর পশ্চিম পাড়ার বড় চর হলো পাখিটির লেজ। আমরা বসে আছি দ্বীপ পাখির লেজের দিকটায়। প্রস্থে বেশি নয়, দৈর্ঘ্যে অনেকখানি সোনাদ্বীপের আয়তন সাড়ে নয় বর্গকিলোমিটার। জলবেষ্টিত সে বটেই, দক্ষিণের পুরোটা জুড়ে বঙ্গোপসাগর, পশ্চিমেও তাই, পূবে মহেশখালী চ্যানেল, আর উত্তর দিক বেষ্টন করে আছে দুটি খাল। পূর্ণিমার নিকটবর্তী এই রাত, প্রায় বৃত্তাকার চাঁদ তার ভরা জ্যোৎস্না হতে যেটুকু ঘাটতি তা পুষিয়ে দিচ্ছে সমুদ্রের শুভ্ররূপ। পেছনে ঝাউবন এক নিরেট কালো দেয়াল, সমুখে সৈকতে আছড়ে পড়া ঢেউ, তার সাদাফেনা, আর চোখ যতদূর যায় ততদূর সমুদ্রের সীমাহীন পরিধি, সে দিগন্তকে অনুভব করা যায়, পূর্ণ দেখা যায় না, আলো হারানো জলপিঠকে ডাঙা বলে ভ্রম হয়। এই নৈসর্গিক পরিবেশটিকে সোনাদিয়া আসার স্বর্গীয় পুরস্কার বলে মনে হচ্ছে। খুব দূরে নয় এমন নৈকট্যে একটি তরল ন্যাচারাল গ্যাসবাহী জাহাজ, অসংখ্য আলো জ্বালিয়ে আলোর এক বিপণি বিতান হয়েছে। একই রেখায় বহুদূরে আরো একটি জাহাজ, বাতি জ্বলা নোঙড় করে আছে। এ দুটি উজ্জ্বল জাহাজ ছাড়াও আরও কিছু জাহাজের আলো দেখতে পেলাম দূরে, তাদের রূপ বা দেহ ঠাহর করা গেল না। জাহাজগুলো নাগরিক সভ্যতার প্রতীক হলেও সুন্দর, আমাদের প্রত্যেকের মনে সমুদ্র অভিযানে বেরিয়ে পড়ার যে আকাঙ্ক্ষা তার স্বপ্নময় উদ্ধার।

সোনাদিয়ার যাত্রী লেখক সমুদ্র দর্শনে আরও একবার (পর্ব ১০)
সোনাদিয়ার যাত্রী লেখক

এই দ্বীপ আলোচনায় উঠে এসেছে এখানে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের সরকারি পরিকল্পনায়। সোনাদিয়ার ভৌগলিক অবস্থান এ পরিকল্পনার উপযোগী। হাফিজ রশিদ খান যে আমায় বলেছিলেন, চলে আসুন, হয়তো আমরাই হবো শেষ কবিদল, যারা সোনাদিয়াকে তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে দেখে যাচ্ছি। গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মিত হলে এই কুমারী প্রকৃতি ধর্ষিত হবে, থাকবে না এই নির্জনতা, ঝাউবন, পাখি উড়ে যাবে, কচ্ছপ ও কাঁকড়ারা গর্তে লুকোবে। হাফিজ রশিদ খান তাই সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের ঘোর বিরোধী। কবির চোখ তার, নিসর্গপ্রেমী, প্রকৃতির বিনাশ তিনি চাইবেন না। আমি বললাম, প্রকৃতিকে সংরক্ষণ যেমন জরুরি, তেমনি জরুরি অর্থনৈতিক উন্নয়ন। গভীর সমুদ্র বন্দর হলে আমাদের অর্থনীতি মজবুত হবে। আমি সিঙ্গাপুরের উদাহরণ টেনে বল্লাম, সিঙ্গাপুরের জাতীয় আয়ের প্রধান উৎস বন্দর।

আমরা যখন চোখের গেলাস ভরে জ্যোৎস্না আর সমুদ্রের সুরা পান করছিলাম তখন সাইয়্যিদ মঞ্জু তাড়া লাগালো শাফায়াত জামিল দিদার যেন হেঁশেলের দায়িত্ব নেয়। দিদার খুব ভালো রাঁধে, সে আমাদের জানাল। মিজান মনিরকে অনুরোধ করা হলো দিদারকে সাহায্য করতে। তারা দুজন চলে গেল রাতের আহার রন্ধনে, আমরা সৈকত ধরে, জানি না চাঁদ মাতাল, না আমরা মাতাল, অনেকদূর হেঁটে যাই সমুদ্র ও চাঁদের মিলিত রূপের অপার্থিব কোলাজে, যার নাম আদিগন্ত চরাচরব্যাপী জ্যোৎস্না ও জলের দ্বৈত সুর মূর্চ্ছনা। সমুদ্র গান করে ওই চাঁদেরই টানে!

আমরা যখন ইঞ্জিন-চালিত নৌকায় মহেশখালী আসছিলাম তখন কবি গোলাম সামদানী আমাকে বলেছিলেন, তিনি ২৭ বছর ধরে কর্মসূত্রে কক্সবাজার আছেন, কিন্তু কখনো সোনাদিয়া যাননি। আরও অবাক কাণ্ড মিজান মনির এই মহেশখালীর ছেলে, সে কখনো এখানে আসেনি। সাইয়্যিদ মঞ্জু এসেছিল ১৯৯৮ সালে, আজ থেকে ২২ বছর আগে, এরপর আর একবারও নয়। অথচ তার বাড়ি কুতুবজুমে, সোনাদিয়া যে ইউনিয়নের অন্তর্গত। মহেশখালির কেউ কেউ এসেছিল, তাও দ্বীপ পর্যন্ত যায়নি সকলে, দূর থেকে ফিরে গেছে। কিন্তু গল্প লেখক খোকন কায়সার সোনাদিয়া দ্বীপে এসেছে কমপক্ষে ৩০ বার, তার অনেক গল্পে এই দ্বীপ ঘুরে-ফিরে এসেছে। আমরা যখন একটি নুয়ে পড়া ভূমির সমান্তরাল ঝাউ গাছের পেতে রাখা কাণ্ডকে বেঞ্চ বানিয়ে বসে গল্প করছিলাম, তখন সমুদ্র জলে না ভেজানোর জন্য ট্রাউজার হাঁটু অবধি গুটিয়ে রাখা আমার দুটি পায়ের দিকে তাকিয়ে অবাক হই। হাফিজ ভাইকে বলি, ‘দেখুন, আমার পা দুটিকে কেমন ফর্সা দেখাচ্ছে।’ তিনি বল্লেন, ‘হ্যাঁ, রমণীয় মনে হচ্ছে।’ এও জ্যোৎস্নার প্রভাব কি না কে জানে? আমাদের অনুরোধে গান ধরেছে জাহান এ, বি,; তবে জ্যোৎস্নার গান নয়।

কুপিবাতির আলো সমুদ্র দর্শনে আরও একবার (পর্ব ১০)
কুপিবাতির আলো

আমরা ফিরে আসি। আশ্চর্য, সমুদ্রপাড়ে যে বাতাস আমাদের শরীরকে শীতল করে রাখছিল, এই বন কুটিরে তার রেশ মাত্র নেই। ঝাউবন উপকূলে সমুদ্র ঝড়কে আটকে হয়তো রাখতে পারে না, কিন্তু প্রবল বাধাগ্রস্ত করে এতদিন শুনেছি, আজ তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ পেলাম। তীরের শরীর জুড়ানো বাতাস, ঝড়ের জোর নেই তার শরীরে, ৫০০ ফুট প্রস্থ বেড়ের ঝাউবন পেরিয়ে বন কুটিরে বা তার আশেপাশে আমাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না। বারান্দায় দাউদাউ করে জ্বলছে লাকড়ির চুলা, তার উত্তাপও কিছুটা দায়ী হতে পারে, বেশ গরম লাগতে শুরু করল। ঘরের ভিতরে কুপি বাতির আলোয় কবি হাফিজ রশিদ খান ও কবি জাহেদ সরওয়ার কথা বলছেন। প্রথমে ভেবেছিলাম আড্ডা, পরে বুঝলাম হাফিজ রশিদের একটি সাক্ষাতকার নিচ্ছেন জাহেদ সরওয়ার আর তা রেকর্ড করে রাখছেন মোবাইলে। এই এক আশ্চর্য যন্ত্র, ক্যামেরার ফিল্মকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়েছে, ক্যামেরা, রেডিও ও টেপরেকর্ডার ইন্ডাস্ট্রিকে কাঁদাচ্ছে, সিনেমা হলগুলো বন্ধ করেছে আর হুমকি হয়ে আছে টেলিভিশনের। হাফিজ রশিদ খানের ‘আদিবাসী কাব্য’ লেখার পটভূমি নিয়ে কথা হচ্ছিল। কবি জানালেন, তাঁর বাবা বান্দরবনে চাকরি করতেন, সে সূত্রে তিনি প্রায়শই বান্দরবন যেতেন। কবিতা লিখতে এসে তার মনে হলো সমতলের কবিরা তেমন কেউ পাহাড়ের আদিবাসী মানুষদের নিয়ে কবিতা লেখেননি। তিনি এর মাঝে নিজের কবিতাকে একটি স্বতন্ত্র অবয়ব দেওয়ার সম্ভাবনাও দেখলেন। সেই থেকে শুরু। একটি কবিতার বই প্রকাশ করলেন ‘আদিবাসী কাব্য’ নামে। এরপরে তিনি আরও অনেক কবিতা ও প্রবন্ধ লিখেছেন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জীবন ও সংস্কৃতি নিয়ে। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রতি তার অপরিসীম মমত্ব, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এসবে প্রকাশিত। এ প্রসঙ্গে জাহেদ সরওয়ার টেনে আনলেন নোবেলজয়ী আইরিশ কবি শীমাস হিনির জেলেদের সাথে দুবছর জীবন কাটানোর অভিজ্ঞতার। এরপরে হিনির কাব্যভাষা বদলে যায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো হাফিজ রশিদ খানের কবিতা অনুপ্রাণিত করে একঝাঁক পাহাড়ি তরুণকে নিজ নিজ ভাষায় কবিতা লিখতে।

সেই যে অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে ম্যাজিস্ট্রেটকে আচ্ছামতো ধোলাই দিয়ে পালিয়ে ভোলা গিয়ে এক বই মহলে লুকিয়ে রইলেন জাহেদ সরওয়ার, গোগ্রাসে পড়তে শুরু করলেন বই, সেই থেকে সে এক সর্বগ্রাসী পাঠক। প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও অগ্রগতি মানুষে মানুষে যোগাযোগ কমিয়ে দিচ্ছে নাকি বাড়িয়ে দিচ্ছে এ প্রসঙ্গে সে টেনে আনলো রিচার্ড ডকিন্সের সাড়াজাগানো বই The Selfish Gene এর কথা। এই বইটির কথা প্রথম শুনি ব্রেকফাস্ট আড্ডায়, বলছিলেন ভ্রামণিক ও কথা সাহিত্যিক সেলিম সোলায়মান। ডকিন্স বলেছেন আদিতে কোষে কোষে ডিএনএ-আরএনএতে যে সংযোগ সেই যোগাযোগে গড়ে উঠেছে জটিল যৌগ, সাথে প্রাণ, অর্থাৎ সভ্যতার মূলে রয়েছে যোগাযোগ। ভাষা আবিস্কার মানব (Homo Sapiens) প্রজাতির উন্নত মস্তিষ্ক গঠন ও মনের ভাব প্রকাশে নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়ায়। ইন্টারনেট, কম্পিউটার, টেলিযোগাযোগ, মোবাইল ফোন প্রযুক্তি, ফেসবুক ইত্যাদি যেমন পৃথিবীকে সত্যিকার অর্থেই এক গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত করেছে, তেমনি মানুষকে করে ফেলেছে আত্মমগ্ন, selfish। যে উদাহরণটি প্রায়শই টানা হয় যে একদল মানুষ, হয় তারা বন্ধু বা আত্মীয় কিংবা সহযাত্রী, এক জায়গায় বসে আছে, কিন্তু কেউ কারো সাথে কথা বলছে না, প্রত্যেকেই ঝুঁকে আছে নিজ নিজ ক্ষুদে পর্দার উপর, হয় তারা গেম খেলছে বা মুভি দেখছে কিংবা চ্যাট করছে, সেই উদাহরণটি টানলেন জাহেদ সরওয়ার।

পশ্চিমে একদল লেখক আছেন যাদের বলা হয় ব্লার্ব রাইটার, যারা টাকার বিনিময়ে বইয়ের ব্লার্ব লিখে দেন। হাফিজ রশিদ খানও ব্লার্ব লিখেন। তরুণ কবিরা তার কাছে গেলে তিনি তাদের বিমুখ করেন না। কারো কারো কাছ থেকে টাকাও নেন। তাঁর সহজ স্বীকারোক্তি। জাহেদ বলল, ‘এতে দোষের কিছু নেই, কিন্তু আপনি যখন একজন দুর্বল কবিকে সম্ভাবনাময় কবি বলেন তখন কি বিশ্বাসযোগ্যতা হারান না?’ হাফিজ রশিদ বল্লেন, ‘আমি সম্ভাবনাময় বলি, শক্তিশালী তো বলি না। ততটুকুই বলি যতটুকু তার প্রাপ্য, অতিরিক্ত কিছু বলি না।’

রান্নার আয়োজন সমুদ্র দর্শনে আরও একবার (পর্ব ১০)
রান্নার আয়োজন

গরমে অতীষ্ঠ হয়ে আমি মাঝে মাঝে বাইরে গিয়ে বসি। বারান্দার যে পাশে সিমেন্টের বেদী আছে সেখানে গিয়ে বসি। কখনো অসহ্য লাগলে ঝাউবনে চলে যাই। একটি পাতাও নড়ছে না, অথচ একটু দূরেই সামুদ্রিক হাওয়ার মাতামাতি। বন বা বারান্দা থেকে দেখি শাফায়াত জামিল দিদার একমনে রান্না করে যাচ্ছে, তাকে সহায়তা করছে সাইয়্যিদ মঞ্জু ও মিজান মনির। গানের শিল্পী হয়েছে রন্ধন শিল্পী (যে রাঁধে, সে গানও গায়) আর দুই কবি হয়েছে রন্ধন সহকারী। দেখি কবিতা ও গান মিশিয়ে কী খাদ্য তারা আজ পরিবেশন করে। বারান্দার একপাশে, উধাও হয়ে যাওয়া চাপকলের কাছটায় বসে একমনে ফুঁ দিয়ে বেলুন ফুলিয়ে যাচ্ছে আর. করিম বা রেজাউল করিম। আজ রাতে চিত্রশিল্পী হয়েছে বেলুনওয়ালা। এদের উদ্দীপনায় ও কর্মনিষ্ঠা দেখলে অবাক হতে হয়।

ফের ভেতরে আসি। গরমে সেদ্ধ হতে হতেও দুই কবি হাফিজ রশিদ খান ও জাহেদ সরওয়ার তাদের আলাপন চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি হাফিজ রশিদকে বলতে শুনি ‘আর্টস ফর আর্টস সেক’ হতে পারে। তবে নিকোলাই অস্ত্রভস্কির ‘ইস্পাত’ বা ম্যাক্সিম গোর্কির ‘মা’ রাজনৈতিক বক্তব্যমণ্ডিত হলেও উত্তীর্ণ সাহিত্য। সাহিত্যে বক্তব্য থাকতে পারে। মানুষের জীবনই তো একেকটি বক্তব্য। হাফিজ রশিদ জানালেন, তিনি কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো পড়েছেন, প্রচুর রাশান সাহিত্য পড়েছেন। মনে মনে বলি, সে তো আমিও। বস্তুত প্রগতি পাবলিকেসন্সের বাংলায় অনুবাদ করা চিরায়ত ও আধুনিক সাহিত্য বাংলার একটি গোটা প্রজন্মকে সাহিত্যমনস্ক করে গড়ে তুলেছিল। এর প্রভাব সুদূরবিস্তারী।

রান্না হচ্ছে রাতের খাবার সমুদ্র দর্শনে আরও একবার (পর্ব ১০)
রান্না হচ্ছে রাতের খাবার

খাবারের ডাক এলো। তিন সের পোলাওয়ের চাল, তিনটি মুরগী, ত্রিশটি ডিম, একসের ডাল খাদ্য হয়ে এসেছে। কণ্ঠশিল্পী রশিদ খান বানিয়েছেন মজাদার আলু ভর্তা। তা আরও মজাদার হতো যদি দোকানদার কাচামরিচ ও ধনেপাতার প্যাকেটটি মনে করে বড়ো ব্যাগে ভরে দিত। আমি ভাবলাম একটু যদি পাখার হাওয়া লাগতো গায়ে এই সুস্বাদু খাদ্য আরও উপভোগ্য হয়ে উঠতো। কুপির বাতিতে এই আহার অবশ্য মন্দ নয়। গানের শিল্পী রাঁধে ভালো। আমরা ভোজনরত, এমনি সময়ে খুব কাছে ডেকে উঠলো শেয়াল। এটা যে বনভূমি তার স্বাক্ষর রেখে গেল।

(চলবে)

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
কামরুল হাসানের জন্ম ২২ ডিসেম্বর, ১৯৬১ সালে বাংলাদেশের শরীয়তপুর জেলায়। তিনি আশির দশকের কবি। প্রথম কাব্য ‘সহস্র কোকিলের গ্রীবা’ প্রকাশিত হয় ১৯৯১ সালে। এরপরে আরও ১১টি কাব্য প্রকাশ করেন। ২০১২ সালে প্রকাশিত হয় ‘নির্বাচিত কবিতা’। কবিতার পাশাপাশি গল্প ও কবিতা বিষয়ক প্রবন্ধ লেখেন এবং বিদেশি সাহিত্য থেকে অনুবাদ করেন। ২০০৫ সালে প্রকাশিত হয় একমাত্র গল্পগ্রন্থ ‘মধ্যবিত্ত বারান্দা ও অন্যান্য গল্প’। ২০১৬ সালে প্রকাশিত হয় প্রবন্ধের বই ‘প্রহরের প্রস্তাবনা’। ভ্রমণপিপাসু এ কবি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সুপ্রচুর ভ্রমণকাহিনী লিখছেন। এপর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে চারটি ভ্রমণকাহিনী। ছাত্রাবস্থায় তার কবিতা সাপ্তাহিক ‘দেশ’ ও ত্রৈমাসিক ‘জিজ্ঞাসা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। তার অনুদিত গ্রন্থের সংখ্যা দুই। ২০০৩ সালে সমীর রায়চৌধুরী ও তুষার গায়েনের সাথে সম্পাদনা করেন দুই বাংলার যৌথ সংকলন Post Modern Bangla Poetry 2003। তিনি বেশ কয়েকবার আমন্ত্রিত কবি হিসেবে দক্ষিণ এশীয় সাহিত্য উৎসবে যোগ দিয়েছেন। কবিতার জন্য পেয়েছেন ‘মৈনাক সন্মাননা স্মারক’ ও ‘কবিকুল, কক্সবাজার কবিতা সম্মাননা‘। ছাত্রজীবনে মেধাবী কামরুল হাসান ভারতের বিখ্যাত আইআইটি খড়গপুর থেকে প্রকৌশলবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তী পড়াশোনা ব্যবসায় প্রশাসনে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। পেশাগত জীবনে বহুবার চাকরি বদল করেছেন। করপোরেট জগৎ থেকে শিক্ষকতায় যোগ দেন। গত ১৫ বছর ধরে পড়াচ্ছেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সটিতে। তিনি বিবাহিত ও চার সন্তানের জনক। সম্প্রতি তিনি মহেশখালির দক্ষিণে সোনাদিয়া দ্বীপে সেখানকার তরুণ কবিদের আমন্ত্রণে কবি হাফিজ রশিদ খানের জন্মদিন পালনে গিয়েছিলেন। সে ভ্রমণ অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা ‘সমুদ্রদর্শনে আরও একবার’।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!