ভারতীয় সুপ্রীম কোর্টের পর্যবেক্ষণ: শিক্ষাঙ্গনে পোশাক

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন

ভারতে হিজাব মামলা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ সুপ্রীম কোর্টের। শুনানি চলাকালীন মামলাকারীকে বিচারপতি প্রশ্ন করলেন, “ইচ্ছে হলে মিনিস্কার্ট পরেও কি স্কুলে যাবেন?” সুপ্রীম কোর্টের এই অবস্থানকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহল মহল। সুপ্রীম কোর্টের তরফে শুনানি চলাকালীন মন্তব্য করা হয় যে শিক্ষা প্রাঙ্গনে ধর্মকে না ঢোকানোই শ্রেয়।

শুনানি চলাকালীন সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া বলেছেন, “এইখানে কারোর অধিকার হরণের কথা বলা হচ্ছে না। কেড়ে নেওয়া হচ্ছে না শিক্ষার অধিকার। শুধু বলা হচ্ছে নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম পরে স্কুলে আসতে।” পাশাপাশি বেঞ্চের অপর বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত মন্তব্য করেন, “যদি আমরা ধরে নিই স্কুলে হিজাব, স্কার্ফ, বা নিজের পছন্দমত পোশাক পরে যাওয়া যাবে তাহলে ঠিক আছে, কিন্তু যেখানে নির্দিষ্ট পোশাক বা ড্রেস কোড করে দেওয়া আছে সেখানে কি হিজাব পরে যাওয়া যায়?” এরপরই মামলাকারীরা ওড়না পরার বিষয়টি উত্থাপিত করলে বিচারপতি স্পষ্ট স্বরে বলেন যে, “ওড়না আর হিজাবের মধ্যে ফারাক আছে।”

হিজাব মামলা নিয়ে শুনানি চলাকালীন বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত জানান, “ধর্ম অনুসরণ এর অধিকার অপরিহার্য হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। কিন্তু যেভাবে সংবিধানে ভারতবর্ষকে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভেতর ধর্মাচারণের ক্ষেত্রে জোর খাটানো যায় কি?” অবশেষে শীর্ষ আদালত জানায় যে এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৭ সেপ্টেম্বর হবে।

উল্লেখ্য হিজাব মামলায় কর্ণাটক হাইকোর্টের রায় অসন্তুষ্ট হয়ে সুপ্রীম কোর্টে মামলা করে আবেদনকারীরা। পূর্বে কর্ণাটক হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল যে মুসলিমদের জন্য হিজাব কখনোই বাধ্যতামূলক নয়। তাই প্রত্যেকটি ছাত্রীকে স্কুল বা কলেজের নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম পরে আসতে হবে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় মামলাকারীরা।

উল্লেখ্য বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্ট শর্টড্রেস নিয়ে হাইকোর্টের একটা পর্যবেক্ষণে “গুলশান বনানীতে এমন ড্রেস কেউ পরেনা।” নরসিংদির রেল স্টেশনে এক নারীকে শর্টড্রেস পড়া নিয়ে মন্তব্যের জেরে সংবিধানের আলোকে বলেছেন “এমন কোন বিধান নেই আমাদের সংবিধানে- যে কে কি পোশাক পড়বে।”

অপরদিকে বাংলাদেশের আন্দোলনকারী পক্ষে ও বিপক্ষের ধর্মীয় মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর যুক্তি হচ্ছে, “শর্টড্রেস তাদেরকে সিডিউস (উত্তেজিত) করে”, “শর্টড্রেস নারীকে বিজ্ঞানী করে না পণ্য বানায়”, “একজন নারীর অশ্লীল পোশাক অপর নারীর ধর্ষণের কারণ” ইত্যাদি ইত্যাদি। অদ্ভুত সব মমধ্যযুগীয় চিন্তা এবং যুক্তি। অপরদিকে ব্যাক্তি স্বাধীনতার পক্ষের আন্দোলনকারীরা বলছেন, “হিজাব বা বোরখা পড়া কোন ধর্মের নারী বিজ্ঞানী আজ পর্যন্ত ধর্মীয় সমাজ রাষ্ট্র দেখাতে পারবেনা। বরং যেসব নারী বিজ্ঞানী দেখা গেছে শর্টড্রেস পড়ে আছেন”, কেউ পোশাকের কারণে সিডিউস হলে সেটা তার মস্তিষ্কের সমস্যা, পোশাকের নয়”, “মাদ্রাসায় বা হিজাব পরিহিত নারীকে কি এইসব মধ্যযুগীয় চিন্তার বাহকেরা কি ধর্ষণ করছেনা কিংবা এইসব বোরখা পড়া নারীরা কি অপরাধ জগতের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেনা” ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে যে বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে তার একটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে, সেটা নারীকে প্রথমে বস্তাবন্দি করে ঘরে ঢুকিয়ে শিক্ষা থেকে দূরে সরিয়ে দিয়ে- শুধুমাত্র ভোগের পণ্য ও যৌনদাসী হিসাবে ব্যবহার করা ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ও পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা।

লেখক: অতিংকর শ্যামল
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংগৃহীত।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!