নাসা মহাবিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো ছায়াপথের ছবি প্রকাশ করল

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন

মহাবিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো কিছু ছায়াপথের ছবি প্রকাশ করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা। সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয় হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করা হয় এসব ছবি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজে সেই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

মহাবিশ্বে প্রদক্ষিণরত নাসার টেলিস্কোপ জেমস ওয়েব সম্প্রতি এসব ছবি তুলে পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন মার্কিন সংবাদমাধ্যম।

এ পর্যন্ত মহাবিশ্বে যত টেলিস্কোপ পাঠানো হয়েছে, সেসবের মধ্যে নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ সবচেয়ে শক্তিশালী। টেলিস্কোপটি তৈরি ও মহাবিশ্বে পাঠাতে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার কোটি ডলার। গত বছর ২৫ ডিসেম্বর পাঠানো হয় এই টেলিস্কোপ।

নীল, সাদা, কমলাসহ বিভিন্ন রঙের আলোর বিচ্ছুরণ ঘটানো বেশ কিছু রত্ন একটি কালো পাত্রে রাখলে যেমন দেখাবে, জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের পাঠানো ছবিগুলোও অনেকটা সে রকম। ছবিতে যে কালো পটভূমি দেখা যাচ্ছে—সেটি মহাবিশ্ব; আর রত্নের মতো বিভিন্ন রঙের আলোর বিচ্ছুরণ ঘটাতে থাকা ক্ষুদ্র বস্তুগুলোর নাম ছায়াপথ। কোটি কোটি নক্ষত্র, গ্রহ, উপগ্রহ, নীহারিকা ও অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তুর সমন্বয়ে গড়ে ওঠে এক একটি ছায়াপথ।

অজস্র ছায়াপথ রয়েছে মহাবিশ্বে। কোনোটি দেখতে গোল, কোনোটি সরল রেখার মতো আবার কোনো কোনো ছায়াপথ কুন্ডলি আকৃতির। আমাদের গ্রহ পৃথিবীর অবস্থান যে ছায়াপথে, তার নাম মিল্কি ওয়ে।

১৯২৭ সালে বেলজিয়ান ধর্মযাজক, গণিতবিদ ও মহাকাশবিদ জর্জেস লেমাইতার সর্বপ্রথম বিশ্ববাসীর সামনে হাজির করেন ঐতিহাসিক ‘বিগ ব্যাং’ তত্ত্ব। মহাবিশ্বের উদ্ভব সম্পর্কে এই তত্ত্বই এখন বিশ্বজুড়ে বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত।

‘বিগ ব্যাং’ তত্ত্ব অনুযায়ী, আনুমানিক ১ হাজার ৩০০ কোটিরও বেশি বছর আগে এক মহাবিস্ফোরণের ফলে উদ্ভব ঘটে এই মহাবিশ্বের। তার পর থেকেই গঠিত হওয়া শুরু করে ছায়াপথগুলো।

জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের পাঠানো সাম্প্রতিক ছবিগুলোতে যেসব ছায়াপথ দেখা যাচ্ছে, সেসব মহাবিশ্বের সবচেয়ে পুরনো কিছু ছায়াপথ। আলোর গতি এক সেকেন্ডে ১ লাখ ৮৬ হাজার ২৮৫ কিলোমিটার; কিন্তু শত শত কোটি বছর আগে গঠিত হওয়া এসব ছায়াপথের আলো এখনও পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়নি।

জেমস ওয়েব অতীত সময়কে যেভাবে দেখে

a 1 নাসা মহাবিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো ছায়াপথের ছবি প্রকাশ করল
সূত্র: বিবিসি

নাসার প্রশাসক বিল নেলসন নেলসন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আকাশের বিপুল এলাকাজুড়ে প্রদক্ষিণ করে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। কিন্তু মহাবিশ্বের অতি অতি ক্ষুদ্র একটি অংশের ছবি এটি।’

বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে বোঝাতে নাসার প্রশাসক বলেন, ‘আপনি যদি আপনার হাতের তর্জনীর ওপর একটি বালুর কণা রেখে পূর্ন বাহুটিকে আকাশের দিকে প্রসারিত করেন তাহলে বালুর কণাটি আকাশের যেটুকু স্থান ঢেকে রাখবে, ঠিক সেটুকু স্থানের ছবি এটি।’

‘ছবিতে আমরা যেসব ছায়াপথ দেখতে পাচ্ছি, সেসবের মধ্যে বেশ কয়েকটির জন্ম মহাবিশ্বের প্রাথমিক পর্যায়ে। এসব ছায়াপথ থেকে যে আলো বিচ্ছুরিত হচ্ছে, তার বয়স প্রায় ১ হাজার ৩০০ কোটি বছর। সবচেয়ে পুরনো যে ছায়াপথটি, সেটির উদ্ভব হয়েছে বিগ ব্যাংয়ের ৮০ কোটি বছর আগে।’

তড়িৎচৌম্বক পরিধির বিভিন্ন অংশকে ধরতে পারে টেলিস্কোপ

b নাসা মহাবিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো ছায়াপথের ছবি প্রকাশ করল
সূত্র: বিবিসি

‘অর্থাৎ, আমরা বলতে পারি এই আলো গত ১ হাজার ৩০০ কোটি বছর ধরে মহাবিশ্বে পরিভ্রমণ করছে।’

সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও মানবতার জন্য আজ একটি ঐতিহাসিক দিন….ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’

এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস বলেন, ‘আমাদের জন্য খুবই অসাধারণ একটি মুহূর্ত এটি। আজ থেকে আমরা মহাবিশ্বের নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করলাম।’

হোয়াইট হাউস ও নাসার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারে প্রদর্শণের জন্য রাখা হবে এসব ছবি।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!