নাটোরে গলা কেটে হত্যার রহস্য উদঘাটন: হত্যাকারী গ্রেফতার

নাটোর প্রতিনিধি
নাটোর প্রতিনিধি
4 মিনিটে পড়ুন
ছবি: মাহাবুব খন্দকার

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ভবানীপুর কারিগরপাড়া গ্রামের রাশিদুল ইসলামের স্ত্রী শাহিনুর খাতুন হত্যার রহস্য উদঘাটন সহ হত্যার সাথে জড়িত প্রতিবেশী আকবর হোসেনের ছেলে মতিউরকে গ্রেফতার করা হয়। প্রতিশোধ নিতেই স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিকের অন্তসত্বা স্ত্রী শাহিনুর খাতুনকে হত্যা করেছে প্রতিবেশী মতিউর রহমান।

গত ২ জুন রাতে ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় শাহিনুর খাতুনকে জবাই করে হত্যা করা হয়। বৃহস্পতিবার মতিউরকে গ্রেফতারের পর শাহিনুর খাতুন হত্যার রহস্য উম্মোচিত হয়। এর আগে নিহত শাহিনুরের স্বামী রাশিদুল ইসলাম ও মতিউর রহমানের স্ত্রী আসমা বেগমকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের মধ্যেকার পরকীয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ

শুক্রবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) তারেক জুবায়ের প্রেস ব্রিফিংয়ে এমন তথ্য জানান। পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) তারেক জুবায়ের জানান, প্রায় ১৮ বছর আগে মৃত মজির উদ্দিনের ছেলে রাশিদুল ইসলামের বিয়ে হয়।

বিবাহিত জীবনে তাদের সংসারে ২ ছেরে ও ১ মেয়ে জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকে রাশিদুলের সাথে প্রতিবেশী মতিউর রহমানের স্ত্রী আসমা বেগমের সাথে পরকীয়া সম্পর্কের কারনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেকার সম্পর্ক ভাল যাচ্ছিল না। তাদের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিলনা। এই পরকীয়য়া নিয়ে এলাকার একাধিকবার সালিশ বৈঠকও হয়।

কিন্ত তাদের মধ্যেকার অবৈধ প্রেম থেমে থাকেনি। ইত্যবসরে শাহিনুর খাতুন আবারও গর্ভবর্তী হয়। ৯ মাসের গভৃবতী থাকা এঅবস্থায় গত ৩১ মে শাহিনুরের স্বামী রাশিদুল প্রতিবেশী মতিউর রহমানের স্ত্রী আছমা খাতুনকে নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি জানার পর শাহিনুর খাতুনের বাবার বাড়ির লোকজন রাশিদুলকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করার চেষ্টা করে। কিন্তু তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয় না।

গত ২ জুন রাতে শাহিনুরের শ্বাশুরী তার ছেলে রশিদ, ছেলের বৌ ও নাতনী পার্শ্ববর্তী গ্রামে কবিগান শুনতে গেলে শাহিনুর তার ১ বছরের ছেলে সামিউলকে নিয়ে তার দোচালা টিনের ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে।

ওই রাতেই কতিপয় দুর্বৃত্ত ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত শাহিনুর খাতুনের গলায় হাসুয়া দিয়ে কেটে দেয়। শাহিনুরের মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য তার দুই পায়ের মাংস কেটে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করে।

পরে নিহতের ভাই নুর আলী ওরফে মোহম্মদ আলী বাদি হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা করে। ওই মামলা দায়েরের পর পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহার নির্দেশে পুলিশ তদন্তে নামে।

এক পর্যায়ে পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া রাশিদুলকে পাবনার ঈশ্বরদী থেকে এবং নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা এবং গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে গাজীপুর হতে আসমাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

তদন্তকালে প্রাপ্ত তথ্যাদি ও আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় শাহিনুর হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অপর সন্দিগ্ধ মতিউর রহমানকে বৃহস্পতিবার তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়। আটক অভিযুক্ত মতিউর শারীরিকভাবে অসুস্থ ও হাঁপানি রোগী।

সে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমুল জবানবন্দিতে বলেন, রাশেদ তার স্ত্রী আসমাকে নিয়ে ঢাকায় পালিয়ে যায়। এতে তার আক্রোশ বেড়ে যায় এবং রাশেদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার উপায় খুঁজতে থাকে। এরই মধ্যে ২ জুন রাতে রাশেদের মা ছেলে রশিদ, ছেলের বৌ ও নাতনী পার্শ্ববর্তী গ্রামে কবিগান শুনতে যায়।

শাহিনুর খাতুন তার ১ বছরের ছেলে সন্তানকে নিয়ে নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে পড়ে। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে চুপিচুপি শাহিনুর খাতুনের ঘরে ঢুকে গরুর ঘাসকাটা হাসুয়া নিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় শাহিনুর খাতুনের গলায় হাসুয়া দিয়ে কেটে দেয়।

পরে হাসুয়াটি বাড়ির পার্শ্ববর্তী বড়াল খালের ঝোপে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে মতিউর রহমানের দেখানো মতে পুলিশ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে উক্ত হাসুয়াটি উদ্ধার করে পুলিশ।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশের অন্যান্য উর্ধতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!