নাটোরে বিনানুমতিতে স্কুলের গাছ কাটলেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি

নাটোর প্রতিনিধি
নাটোর প্রতিনিধি
4 মিনিটে পড়ুন
ছবি: মাহাবুব খন্দকার

নাটোর সদর উপজেলার কাফুরিয়া শহীদ হোসেন সোরওয়ার্দী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি সভাপতি সংশি­ষ্ট বিভাগের অনুমতি ছাড়াই বিদ্যালয়ের তিনটি গাছ কেটে বিক্রি করার পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ম্য্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও কাফুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আফজাল হোসেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন না মেনেই গত এক সপ্তাহ আগে বিদ্যালয়ের তিনটি গাছ কেটে ফেলেন। এছাড়া সরকারী নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে স্কুলের জায়গায় ১৫ লাখ টাকা খরচ করে নিজের তত্ববধানে মার্কেট নির্মাণ করছে।

সংশি­ষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন আনুযায়ী স্কুলের গাছ কাটতে হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও বন বিভাগের কাছে লিখিত আবেদন করতে হয়। সংশি­ষ্ট বিভাগ অনুমোদন দিলেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটা যাবে। কিন্তু এই ধরনের প্রক্রিয়া ছাড়াই গাছ কেটে ফেলেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি আফজাল হোসেন।

এছাড়া স্কুলের আগের ২৬টি দোকান থাকার পরও নতুন ভাবে ১৫টি ঘর নির্মাণ করার কাজ শুরু করেন তিনি। এক্ষেত্রে তিনি ইচ্ছেমতো নিজের পছন্দের লোকদের ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন । বরাদ্দপ্রাপ্তরা নিজ খরচে দোকান নিমার্ণ করছেন বলা হলেই পুরো নিমার্ণ কাজের দায়িত্ব রয়েছেন আফজাল হোসেন। এতে স্কুলশিক্ষক ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশীদ গাছ কাটার কথা স্বীকার করে বলেন, ’আমাকে কিছু না জানিয়েই ম্যানেজিং কমিটির লোকেরা স্কুলের জায়গার গাছ কেটেছেন। আমি সংশি­ষ্ট বিভাগের অনুমতি ছাড়া গাছ কাটতে নিষেধ করলেও তিনি শোনেনি। স্কুলের দরজা জানালা তৈরী করার কাজে ব্যবহার করা হবে বলে তিনি জানান। এছাড়া বিদ্যালয়ের আগের ২৬ টি দোকান রয়েছে।

তিনি আরো জানান, মাসিক মাত্র দুইশো টাকা ভাড়া। সেই ভাড়াটাই তারা বছরের পর বছর দেয়না। সেখানে নতুন দোকান নির্মাণের প্রয়োজন ছিলনা এটা আমি সভাপতিকে জানিয়েছি। এছাড়া ৫০ হাজারের উপরে ব্যয় করার ক্ষেত্রে সরকারী নিয়মের কথাও জানিয়েছি তিনি শুনেনি। আমি কিছু বলতে চাই না। বললে আমার চাকুরির ক্ষতি হবে’ বলে জানালেন তিনি।

বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আফজাল হোসেন স্কুলের গাছ কাটার কথা স্বীকার করে বলেন, ’স্কুলের নতুন মার্কেট নির্মাণ হচ্ছে । মার্কেটের সামনে গাছ থাকায় তা কেটে অপসারণ করা হয়েছে। এ তিনটি গাছের কাঠ বিদ্যালয়ের দরজা জানালা তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হবে। আমি নিয়ম জানি না বলেই এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে গাছ বিক্রি করা হয়নি। স্কুলের প্রয়োজনে রেজুলেশন করে মার্কেটের কাজে হাত দিয়েছি। এক্ষেত্রে কোন অনিয়ম হয়নি’ বলে জানান তিনি।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ বলেন, ’স্কুলের গাছ কাটার বা মার্কেট নিমার্ণের জন্য ওই স্কুলের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে কোনো আবেদন করা হয়নি। সরকারী নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা করেনি স্কুল ম্যানেজিং কমিটি। স্কুলের মার্কেটের প্রয়োজন আছে কি নেই। মার্কেটের কারণে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হবে কি হবেনা এ সব দেখার দায়িত্ব শিক্ষা বিভাগের। এ বিষয়ে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে’বলে জানালেন তিনি।

বনসম্প্রসারণ বিভাগ নাটোরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সত্যেন্দ্র নাথ সরকার জানান, ’আমাদের কাছে কোন আবেদন আসেনি। বনবিভাগের অনুমতি ছাড়া সরকারী বেসরকারী কোন প্রতিষ্ঠান গাছ কাটলে তা বেআইনি হবে’ বলে জানালেন তিনি।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাঙ্গাঙ্গীর আলম বলেন ‘গাছ কাটা বা মার্কেট নির্মানের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ কোন আবেদন করেনি। বিষয়টা আমি জানিনা। অবশ্যই তদন্ত করে সংশি­ষ্টদের বিররুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’বলে জানালেন তিনি।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!