পাবনার সাঁথিয়ায় বড়গ্রামে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী হামলা: হিন্দুদের দেশ ছাড়ার হুমকী

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন
ছবি সংগৃহিত

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নে হিন্দু অধ্যুষিত বড়গ্রামের দরিদ্র জেলে পরিবারে ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিরে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর এবং দেশ ছাড়ার হুমকী দিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী মুন্সী।

গণমাধ্যম ও স্থানীয় সুত্রে জানান গেছে, আওয়ামী লীগের আসন্ন সম্মেলনে করমজা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড থেকে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন ঐ গ্রামের জেলে সম্প্রদায়ের নেতা বিমল রাজবংশী। এতে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী মুন্সী ঐ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিবাসীদের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকী দিয়ে আসছিলেন।

২৫শে মার্চ রাতে হিন্দু পাড়ায় কে বা কারা আগুন লাগিয়ে দেয়। স্থানীয়রা এই বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলী বাগচিকে জানালে তিনি সঙ্গে সঙ্গে হিন্দু পাড়া পরিদর্শনে আসেন। ইউপি চেয়ারম্যানের পরিদর্শনকালীন সময়ে ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী মুন্সীর নেতৃত্বে শতাধিক হামলাকারী লাঠি, ফালা, হাসুয়া ও ছুরি নিয়ে চেয়ারম্যানের সামনেই হিন্দু পাড়ায় হামলা করে ভাঙচুর করে এবং লোকজনকে বেদম মারধর করে। এতে বিমল রাজবংশীসহ অনেক হিন্দু পরিবারের সদস্যরা আহত হয়। হামলা ও ভাঙচুরের পাশাপাশি হামলাকারীরা হিন্দু পাড়ার লোকজনকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে এবং তাদেরকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে বলে। এ সময় চেয়ারম্যান হোসেন আলী বাগচী হামলাকারীদের বাধা দিলে তাকেও লাঞ্ছিত করে হামলাকারীরা।

বিমল রাজবংশী জানান, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক প্রার্থী হতে চাওয়ায় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী মুন্সী আমাকে বলেন ‌’হিন্দু লোককে’ নেতা বানানো হবে না। তুই প্রার্থীতা প্রত্যাহার কর। এতে আমাদের সংখ্যালঘুরা অপমান বোধ করে এবং আমাকে যেকোন মূল্যে প্রার্থী হতে বলায় আমি দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে সমর্থন চাইতে থাকি।

বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ইউপি চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলী বাগচি এই হামলার ঘটনার সত্যতা প্রকাশ করে বলেছেন, হিন্দু পরিবারের উপর হামলার সময় মুন্সী মেম্বারকে আমি বাধা দিয়েছি। কিন্তু তারা আমার কথার কর্ণপাত করেনি। আমরা সব সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে আছি।

পাবনা জেলার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের সহযোগীতায় ২৮শে মার্চ মুন্সী মেম্বরসহ ২৭ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন বিমল রাজবংশী। ঘটনার পর থেকে ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী মুন্সী পলাতক রয়েছেন।

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম জানান, অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী মুন্সীসহ পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ঐ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

হিন্দু পাড়ায় হামলার ঘটনায় গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সাঁথিয়া উপজেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের সভাপতি সুশীল কুমার দাস। সেই সাথে তিনি এই উগ্র সাম্প্রদায়িক সহিংস সন্ত্রাসী ঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবী করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় বনগ্রাম বাজারে ফেসবুকে মহানবী (সা.) সম্পর্কে কটূক্তির গুজব ছড়িয়ে বনগ্রামের ঘোষপাড়া ও সাহাপাড়ায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছিল একদল উগ্র সন্ত্রাসী। সে সময় তারা বনগ্রাম বাজারে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি দোকান সহ ২৫টি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করে এবং দুটি মন্দির ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!