ছেলেটির নাম ছিল জিয়াম। বয়স সম্ভবত ১০/১২ হবে। ছেলেটিকে দেখে মনে হলো খুবই দরিদ্র ঘরের। ছেলেটির শার্ট ছিড়া, পায়ে কোনো জুতোও ছিল না। হাতে ছিল পুরোনো কয়েকটি বই। ছেলেটির সঙ্গে ভাব জমিয়ে একটু কথা বলার চেষ্টা করি।
-তোমার হাতে এগুলো কী?
-বই।
-তুমি বই দিয়ে কি করবে?
-আমি পড়ালেখা করমু। মিনা কার্টুনে দেখছিলাম, “শিক্ষা আমার মুক্তি দিবে !” আমি পড়ালেখা করে বড় গাড়ি কিনমু, বাড়ি করমু।
শিশুটি গরিব হলেই কি হবে, দেখে মনে হলো শিশুটির শিক্ষার প্রতি প্রবল আগ্রহ।
শিশুরাই দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। আজকের যে শিশু হয়ে উঠবে আদর্শবান, সেই শিশুই আগামীদিনে দেশেকে নেতৃত্ব দিবে। শিক্ষা শিশুদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে অন্যতম।
১. শিশুদের শিক্ষায় সরকারের পদক্ষেপঃ
বাংলাদেশের শিশুরা বিনামূল্যে পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছে। শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখহা সিনার কার্যকর পদক্ষেপের ফলে দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে ২১ শতাংশে নেমে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শিশুদের শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। এজন্য দরিদ্র পরিবারের মায়েদের মোবাইল ফোনে মেয়েদের শিক্ষা বৃত্তি প্রেরণ, বিনামূল্যে বই বিতরণ ও আইসিটি ল্যাব স্থাপন করা হচ্ছে।”
২. শিশুদের শিক্ষায় অন্যতম বাধা শিশুশ্রমঃ
শিশুশ্রমের কারণে অনেক শিশুরাই শিক্ষা অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
আমি মনে করি, একটি শিশু অত সহজে কাজে নামে না। শিশু মন ঘুরে বেড়াতে চায় মুক্ত পাখির মতো। এই বয়স দায়িত্বের ভার বয়ে বেড়ানোর মতো নয়। কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েই কাজে যোগ দেয় একটি শিশু।
পরিবারের অস্বচ্ছলতার জন্য শিশুশ্রমে লিপ্ত হচ্ছে অনেক শিশু।
পিতা-মাতার অসচেতনতা শিশুশ্রমের অন্যতম কারণ।
শিশুশ্রমের জন্য শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না এবং তাদের পড়ালেখা ব্যাহত হচ্ছে।
৩. গেমস আসক্তির জন্য শিশুরা পড়ালেখায় অমনোযোগী হচ্ছেঃ
দিনে দিনে শিশুদের মধ্যে মাদকাসক্তির চেয়েও আরও ভংকরভাবে ছড়িয়ে পড়ছে গেইমস আসক্তি। এই গেইমস আসক্তি শুধু শিশুদের চোখের ক্ষতিই করছে না, বরং শিশুদের মস্তিষ্কেও মারাত্মকভাবে প্রভাব বিস্তার করছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘গেইমিং ডিজঅর্ডার’কে মেডিক্যাল সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে ২০১৮ সালে।
শিশু এক অমূল্য সম্পদ। শিক্ষার মাধ্যমেই শিশুরা সঠিকভাবে গড়ে উঠবে। দেশ হয়ে উঠবে সমৃদ্ধ।
প্রতিবেদকঃ মাসুদুল জারিফ