নারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা: আফগানিস্তানে বিদেশিদের মানবিক সহায়তা স্থগিত

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন
একদল আফগান নারী তাঁদের অধিকারের জন্য বিক্ষোভ করছে। ফাইল ছবি

আফগানিস্তানে “কট্টরপন্থী” তালেবান গোষ্ঠী দেশটির নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ এবং বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) কাজ করা নিষিদ্ধ করেছে। তালেবান সরকারের এমন সিদ্ধান্তে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতিসংঘ। দেশটিতে কিছু কর্মসূচি সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে জাতিসংঘ এবং আরও কিছু কার্যক্রম স্থগিত করার বিষয়ে সতর্ক করেছে।

বৃহম্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রধান এবং বিভিন্ন সাহায্য গোষ্ঠী এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, “নারীদের মানবিক কাজ থেকে নিষিদ্ধ করার ফলে আফগানদের জন্য তাৎক্ষণিক জীবন-হুমকির পরিণতি সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যেই নারীকর্মী সংকটের কারণে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রাম সাময়িকভাবে বন্ধ করতে হয়েছে।

একইসঙ্গে নারী সহায়তা কর্মীদের ওপর তালেবান নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশটিতে অন্যান্য অনেক কার্যক্রমও স্থগিত করতে হবে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।

জাতিসংঘের সাহায্য প্রধান মার্টিন গ্রিফিথসসহ অন্যান্যদের দেওয়া বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মানবিক সম্প্রদায় হিসাবে আমরা আমাদের পরিচালন সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতাগুলোকে উপেক্ষা করতে পারি না। আমরা জীবন রক্ষা, সময়-গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব। তবে আমরা আশঙ্কা করছি, অনেক কার্যক্রম হয়তো আমাদের থামাতে হবে কারণ আমরা নারী সাহায্য কর্মীদের ছাড়া মানবিক সহায়তা নীতিগতভাবে দিতে পারি না।

এর আগে গত শনিবার ইসলামপন্থি তালেবান নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের পক্ষ থেকে নারী ত্রাণকর্মীদের ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে গত সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার বিষয়ে নারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। আর এরও আগে গত মার্চ মাসে মেয়েদের হাইস্কুলে যাওয়া বন্ধ করা হয়েছিল।

ইউনিসেফ, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি এবং জাতিসংঘের শরণার্থী ও মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারদের স্বাক্ষরিত এই বিবৃতিতে বলা হয়, কোনো দেশই তার জনসংখ্যার অর্ধেককে সমাজে অবদান রাখা থেকে বাদ দিতে পারে না।

এদিকে পৃথকভাবে আরও ১২টি দেশ এবং ইইউ যৌথভাবে নারী সাহায্য কর্মীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে এবং নারী ও মেয়েদের স্কুলে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এই বিবৃতি জারি করেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “নারী সাহায্য কর্মীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা লাখ লাখ আফগানদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে, কারণ এসব মানুষ বেঁচে থাকার জন্য মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।”

এছাড়া লাখ লাখ আফগানের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া চারটি বড় বৈশ্বিক গোষ্ঠী গত রবিবার বলেছে, তারা আফগানিস্তানে তাদের অপারেশন স্থগিত করছে। কারণ নারী কর্মীদের ছাড়া তারা তাদের প্রোগ্রাম চালাতে সক্ষম নয়।

জাতিসংঘের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নারী সাহায্য কর্মীদের ওপর তালেবানের নিষেধাজ্ঞা এমন সময়ে আরোপ করা হলো যখন আফগানিস্তানের ২৮ মিলিয়নেরও বেশি লোকের বেঁচে থাকার জন্য সহায়তা প্রয়োজন। বর্তমানে তালেবানশাসিত দেশটি দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক সংকট, দারিদ্র্য এবং নিষ্ঠুর শীতের ঝুঁকির সঙ্গে লড়াই করছে।

উল্লেখ্য, ২০ বছর পর গত বছরের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবান। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তালেবান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!