মুক্তগদ্য: আছে প্রাণে

ময়ূরী মিত্র
ময়ূরী মিত্র
13 মিনিটে পড়ুন

এক

অনেকটা রাত হয়ে গেছে৷ বারোটা একটা অব্দি বন্ধু নেড়িরা চিল্লামিল্লি করে আমাকে সঙ্গ দিয়েছে৷ নেড়ি ঘুমোতে নৈঃশব্দ নেমেছে পূর্ণ ধ্বনি দিয়ে৷ এত চুপচাপ রাত অনেকদিন পর৷ লিখতে লিখতে দেখছি বাগানের ব্যাঙগুলো ডাকতে শুরু করেছে৷ আজ কদিন ধরেই এমন করছে ওরা৷ তবে বর্ষার বদলে শীতকালে ডাকছে বলে গলা তাদের নামানো এবং একটু সলজ্জ৷ অকালে শুকনো মাটির ওপর বসে বসে ডাকতে হচ্ছে বলে ব্যাঙের দল অপরাধবোধে ভুগছে নাকি! হয়ত তাই৷ শীতের ওপর উভচরটির অধিকার নেই। অন্তত সে তা মনে করে৷
আজ সন্ধেয় দেখলাম মূল বাজার থেকে অনেকটা দূরে একটা ল্যাম্পপোস্টের তলায় বসে আছে সবচেয়ে গরিব সব্জিওয়ালা৷ আগেও দেখেছি তাকে৷ নোংরা ও ফাটা জামা পরে কেবল লেটুস, পুদিনা পাতার সঙ্গে বেশ কয়েকটী অনামী লতাপাতা বেচে৷ প্রতিবার নাম ভুলি ও প্রতিবার নাম জানতে চাই৷ সে কিন্তু ক্লান্ত হয় না৷ মহান এক বিশ্বাসের সঙ্গে শাকপাতার গুণ বলে যায়৷ আমি আকর্ষিত হই৷
আজ দেখলাম এক গাড়ি শাক তার বিক্রি তো হয়ই নি- সারাদিন থেকে থেকে সেগুলো নেতিয়ে গেছে৷ শুকনো শাকের বিচ্ছিরি গন্ধটা নেব বলে কাছে গিয়েই দাঁড়াতে লোকটা শাকের গায়ে জল ঢালতে লাগল৷ বিড়বিড় করছিল- আজ কিছু বিক্রি হয়নি দিদি৷ নোংরা জামা পরে আসি তো৷ ডালায় শাক ছাড়া কিছু থাকেও না৷ লোকে ভাবে আমি করোনা নিয়ে এসেছি লতাপাতায়৷ কিন্তু বিশ্বাস করুন- এসব গাছগাছড়া খুব উপকারী৷ বুঝলাম এবার একই কথা বলে যাবেন গরীব এবং ক্রমশ গরীব হতে থাকা মানুষ৷
ল্যাম্পোস্টের আলোয় শুকনো শাক আলোকময় হয়ে উঠছিল৷ আমি তাকে তিরস্কার করতে পারছিলাম না৷ তবে গরীব বড়লোকের মন বোধহয় সবথেকে ভালো বোঝে৷ আমার চোখ বুঝে হড়বড় করে বলছিল- না না দিদি আমি এই সাতবাসী শাকগুলো তাজা দেখিয়ে জুয়োচুরি করার জন্য জল ঢালছি না৷ আসলে সকালে যখন এনেছিলাম তখন সবুজ ছিল৷ সারাদিন সবুজ থেকে এখন দেখুন কেমন কালচে হয়ে গেছে৷ নিজের হাতে ফলাই তো৷ তাই মিছেমিছে সবুজ ফেরাবার চেষ্টা করছি৷
বলাবাহুল্য তার এই অদ্ভুত কথায় মনে হল- সে বোধহয় আমার কাছে অন্তত বাড়িতে বাজার নিয়ে যাবার কিছু টাকাপয়সা চাইছে৷ গরীবের সত্য সবসময় অস্বাভাবিক লাগে৷ সারাদিন বিক্রি না হওয়ায় লোকটার চোখে এবং শাকে জল ঢালায় একধরণের পাগলাটে ভাব দেখা দিচ্ছিল৷ কোনো কথা না শুনে যখন তার হাতে আমি চল্লিশ টাকা গুঁজে দিয়ে চলে আসছি পিছন থেকে ঘরঘরে গলা- টাকাটা নিয়ে যান দিদি৷ কাল ভালো তাজা শাক আনব ৷ তখন নিয়ে পয়সা দেবেন৷
তাকিয়েই রয়েছি৷ আর সে বলে যাচ্ছে- আরে দিদি এত চিন্তা করছেন কেন? শাক আমার কাল বিক্রি হবেই৷ আরে বাবা- আমি নিজের হাতে ফলাই আর এসব শাক মহা উপকারী৷ খেলে বুঝবেন। সজ্জন গরীব একটানা সত্য বলছিল৷
না, আমি কাঁদিনি।
মাথা হেলিয়ে চলে এসেছি।
দয়ার কান্না শ্রমের অসম্মান ঘটায়
খরা নতুন করে শস্যবোনাকে। ৷
ও ব্যাঙ, ব্যাঙ রে
এত নিচু গলা কেন?
চেঁচা জোরে
কান ফাটিয়ে ডাক৷

সূচিপত্র

দুই

বয়ে চলা নদনদীর থেকে আমার অনেকসময় গাছের পাতায় একটি জলদানা দেখতে বেশি ভালো লাগে৷ বৃষ্টি শেষ করে মেঘগুলো দিকবিদিক জ্ঞান হারিয়ে দৌড়োতে শুরু করে অন্যত্র… নীচে গাছের পাতায় স্থির একবিন্দু জল৷ বিন্দুটির বড়ো সমাহিত ভাব… যেন ওই একটুখানি বৃষ্টির জল পরিচ্ছন্ন করে দেবে গোটা পৃথিবীর পাপ৷
আজ ভোরবেলা এক মানুষ আমাকে অমন জলবিন্দু হয়ে শুদ্ধ করে দিল৷ সে মানুষের সদ্ভাব ও সৎভাব আমাকে পুণ্যকে চিনতে সাহায্য করল৷ পাড়ারই ডাবওয়ালা৷ নিয়মিত নির্দিষ্ট জায়গায় বসে ডাব বিক্রি করেন ও প্রার্থনার সময় এলে ওই রাস্তার একপাশেই জানু পেতে ঈশ্বরকে ডেকে নেন৷
এটুকুর বেশি খবর রাখিনি মানুষটা সম্পর্কে৷ দেশের ধান্দাবাজ সংস্কৃতিবাজগুলো যেমন কোনোদিন গরীব মানুষকে খেয়ালে রাখেননা-রাখবেন না আগামীতেও এ মানুষটি সম্পর্কে আমার মনোগত অবহেলা ছিল ঐরকম।
আজ ডাব কিনতে গিয়ে বললাম- আমার এক বন্ধুর জন্য কচি ডাব দিতে হবে৷ বন্ধু হাসপাতাল থেকে সবে ফিরেছেন এবং ওঁর যা ব্যাধি তাতে ডাবটাই ওষুধ৷ দিতে পারবেন? বোঝাই করা ডাবের সামনে দাঁড়িয়ে আমাকে অবাক করে ভদ্রলোক বললেন- হবে না৷ আর একটিও ডাবওয়ালা বসেননি৷ বাধ্য হয়ে বললাম- এত নানা সাইজের ডাব আপনার- এত লোককে দিচ্ছেন৷ ওর ভেতর থেকে আমায় একটা দিন৷
দিদি অসুস্থ রোগীর ডাব দিতে গিয়ে কি মিছে বলব? সত্যিই আমার কাছে কচি ডাব নে ৷ যাঁরা খাচ্ছেন তাঁরা শাসওয়ালা ডাবই ভালোবাসেন- তাই খাচ্ছেন- ডাবওয়ালা বললেন৷ এরপরও আমি বারবার অনুনয় করতে লাগলাম- দিন না ওর মধ্যে থেকেই দিন৷ রাজি নন৷ বন্ধুর সুস্থতাকামনায় মাথা তখন আরো বিগড়েছে আমার৷ আরো ছোটলোকের মতো বলতে লাগলাম- ষাটের জায়গায় সত্তর দেব৷ নিচের দিকে খুঁজে দেখুন না দাদা৷ বিক্রেতা অটল- আমার ডাব আমি চিনি৷ ভুল জিনিষ দিতে পারব না৷ আর আপনার কাছে বেশি অর্থ আছে বলে আমি তা নেবই বা কেন? লোভে আমার বড়ো ভয়৷ শেষ লাইনটা শোনার পর আর দাঁড়াবার সাহস হয়নি৷
দুঘন্টা তিনঘন্টা কেটে গেছে৷ চুপচাপ বসে আছি। মাথার মধ্যে ঘুরছে তাঁর কথা- লোভে আমার বড়ো ভয় দিদি- বড়ো ভয়৷ কলিংবেল বাজল৷ দেখি- ধার্মিক মানুষটি হাতে দুটো ডাব নিয়ে দাঁড়িয়ে… এই নিন আপনার কচি ডাব৷ এটা খাওয়ান, বন্ধু ভালো হবে৷ হাত দুটি তাঁর সাপের মতো জাপটে ধরে বললাম- আপনার ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করবেন তো? পাল্টা প্রশ্ন- ঠিক চিকিৎসক দেখছেন তো দিদি? আপনি শুধু সেটা খেয়াল রাখুন ৷ আর কচি ডাব দেবার দায়িত্ব আমার৷

এতক্ষণ একজন মানুষের গল্প বললাম- সম্প্রীতির নয়, লঘু বা গুরুরও নয়৷ কিছুদিন আগে এই গণতান্ত্রিক দেশে এক ভদ্রমহিলার মুণ্ডু কেটে নেয়ার দাবি জানান হয়েছিল৷ ভদ্রমহিলা খুব সঠিক বক্তব্য রেখেছিলেন এমন নয়৷ তবে কতটা বেঠিক কাজ করলে একটি সুশিক্ষিত দেশের মানুষের মুণ্ডু কাটার জমায়েত হয় এবং সেই জমায়েতের একটিও প্রতিবাদ অতিবুদ্ধিবাদী সহনাগরিকদের কলম বা জবান থেকে বেরোয় না- তা এখনো ধারণা করতে পারিনি৷ যাঁরা দাঙ্গার প্রবল সম্ভাবনা দেখেও সেদিন ঘাপটি মেরে ছিলেন চুপ করে থাকার কারণটাও নিশ্চয় তাঁরা বলতে পারবেন৷
তবে তারপর থেকে সম্প্রীতি শব্দে বড্ড ঘেন্না জন্মেছে আমার। ডাবওয়ালা বন্ধুটির ভাষায় বলি- ও মিছে কথা৷

তিন

বছর দশেক আগে আমাদের স্কুলে শেষ এসেছিল মনিহার ৷ ভীষণ গরীব ঘরের মনিহার খাতুন ৷ কথা বলতে পারে না৷ শুনতেও পারে না কথা৷ বাড়িতে শিক্ষার দীপটি কভু জ্বলেনি তার৷ তার কথাবলা সাবালক ভাইরাও একটি রাফ খাতা পূর্ণ করেনি৷ তবু মুক-বধির মনিহার স্কুলের নিয়ম মাফিক আসা ছাত্রছাত্রীদের লিস্টিতে সব্বার আগে৷ রাজারহাটের কোনো এক গ্রাম থেকে প্রায় দুতিন ঘন্টার জার্নি করে ঠিক দশটাতেই পৌঁছে যেত স্কুলে৷ এক পা বড় আর এক পা ছোট মনিহারের৷ তবু এক মিনিটও লেট নয়৷ আর ওই এক মিনিট লেট না করার খেপামিতেই রাগ বড় তীব্র হয়ে উঠত তার৷ হাঁফাতে দেখে কতদিন বলেছি, ওরে দশ কুড়ি মিনিট লেট হলে কিচ্ছু হবে না৷ না হয় দশ মিনিট পরেই পড়া শুরু করবি৷ শুনেটুনে রাগী চোখে চলে যেত৷ পরের দিন আবার আসত৷ সেই দশটায়৷ সেই রাগী চোখে৷ রাগ আর কান্না ছাড়া আর যে কিছু দিয়ে কিছু বোঝানো যায়, তাইই ধরতে পারত না সে৷ ধরতে চাইতোও না৷ অনুভবের জটিলতায় ঘুরে মরে অনুভবকে চিরতরে খোয়াতে রাজি ছিলো না আমার মনিহার৷

মাথা ভর্তি করে উকুন এলো মনিহারের৷ কিছুতে কাটবে না চুল৷ উকুনে ঘা চুলকে সুখ নেয় মনিহার৷ ও মনিহার আয়! আয় কাঁচি দিয়ে চুল কেটে দি! দ্যাখ কত আরাম পাবি মাথায়৷ কিল চড় দিয়ে দিদিমনিকে ঠাণ্ডা করে দেয় মনিহার৷ একদিন স্কুলের অধ্যক্ষ অতনু ঘোষ মশায় বড় একটা লাঠি নিয়ে দাঁড়ালেন মনিহারের সামনে। এক মুহূর্তও নষ্ট না করে ইটখোয়ার পিঁড়ি পেতে বসিয়ে দিলাম স্কুলের বাইরে৷ ফটাফট চুল কেটে উকুন সাফ হলো মনি বেগমের৷

আর তারপর? রাগের চোটে মনিহার অধ্যক্ষকে ডেকে বসল- বাবা৷ আমার মনির মুখের প্রথম মানেযুক্ত শব্দ৷ এরপর থেকে আমি ক্লাসে সামান্য বকলেই এক ছুট্টে বাবার কোলে৷ পেটে প্রচন্ড যন্ত্রনা নিয়ে বাবার মেয়ে ভর্তি করছে তখন আর জি কর হাসপাতালে৷ ব্যথা করছে- তাতেও না কেঁদে ক্রুদ্ধ হয়েই চলেছে৷ রাগের বশে রোগা শরীরখানাকে না ছিঁড়ে কুটিকুটি করে। এই ভয়ে মনির বাবা অধ্যক্ষ অতনু ঘোষ ছুটলেন হাসপাতালে৷ নরম চোখে বেগম মনি দেখলে তার বাবাকে৷ বুকে ধরে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে রইলেন অতনু৷ সুস্থ করে বাড়ি পাঠিয়ে বাবার ছুটি৷

সম্ভবত এর পর থেকেই স্কুলে আসা আস্তে আস্তে বন্ধ হয় মনিহারের৷ অনেকদিন হয়ে গেল। তবু মাঝে মাঝে দেখি, নিশ্চুপ দুপুরে দশ বছরের পুরনো রেজিস্টারে হাত বোলাচ্ছেন অধ্যক্ষ৷ ভাবেন হয়ত- রেজিস্ট্রারের নামে রাগী মেয়ের মুখটা রয়ে আছে৷

আজ মনে হচ্ছে, কতদিন খবর নিই নি আমার বেগম বাহারের ৷ কেমন আছে সে যুবতী? এখন তো সে ভরা পূর্ণিমা…

কেমনই বা আছে আমার জীর্ণ জন্মভূমি? খবর নিতে ভুলে যাচ্ছি তারও৷ তারও৷

গরীবের জন্য বিলোনো হয় মাস্ক, ভিটামিন সি৷ সিঁড়ি দিয়ে তরতর বেগে নেমে গরিবের ধনে খাপলা মারে ফ্ল্যাটের মালিক৷ দেখেও চুপ থাকি ৷ নিজের জ্বর কাশি নিয়ে ভাবি ৷আপন হৃদয়ের অক্সিজেন নিয়ে ভাবি ৷

আয় ফিরে রে মনিহার৷ আমার বন্ধ মনে বসা গরীবের দরবার৷
জন্মছোট পা তোর৷
চার লাথিতে ভাঙ ধনীর স্কুল৷
দুয়োরের ওপারেই সব।

ইদানিং মনে স্থায়ী বিষাদ জমছে৷
তবু জরুর ফুটবে৷
সুন্দর জরুরি৷
সর্বভূমি ডাকে…

চার

জীবনের কোনো না কোনো সময়ে সবাইকে প্রকৃতির কাছে ফিরতে হয় ৷ কখনো বা প্রকৃতির সঙ্গে কথাবার্তা বলে নিজেকে পূর্ণ উৎসর্গও করে ফেলে মানুষ৷ হয়ত উৎসর্গের মুহূর্তে চারপাশের প্রকৃতিতে তেমন বৃহৎ সৌন্দর্য ধরা যাচ্ছে না বা বোঝা যাচ্ছে না তবুও সেই মুহূর্তের প্রকৃতি তার যাবতীয় ক্ষুদ্র মাধুর্য নিয়েই আমাদের সমাহিত করে ফেলে৷ ছোট কোনো এক নদী কি পাহাড়ের বাঁকে আমরা ডুব মারি আর উঠি৷ মারি ডুব আর উঠি ভেসে৷ দৈনন্দিনের আকাশে আর বাতাসে৷
একবার উত্তরবাংলার টোটো পাড়ায় যাচ্ছিলাম৷ লুপ্ত হতে থাকা টোটোদের ওই একটি গ্রাম। এবড়োখেবড়ো পথ দিয়ে লাফ মেরে মেরে চলছে আমাদের গাড়ি৷ হঠাৎ নুড়ি ভর্তি একটা বড়ো আঙিনার মতো জায়গায় এসে আকাশ ঝাঁপাল ভূমির ওপর৷ কী বৃষ্টি কী বৃষ্টি৷ কাছ দিয়ে একটি ছাইরঙা টিলা বেশ কিছুক্ষণ ধরে আমাদের সাথে সাথেই চলছিল৷ খুব ব্যাপক কিছু নয় বলে সেভাবে খেয়ালই করিনি টিলাটাকে৷ এখন যেই মেঘ বৃষ্টি সেটাকে ঘিরল থ হয়ে গেলাম ভাই৷ গাড়িতে বসে ভিজে চুপুস হয়ে যাচ্ছি তবু বারবার নেমে ছুটতে চাইছি ঝাপসা ওই টিলার দিকে ৷ গাইড বারণ করলেন- বৃষ্টি না থামলে জনহীন রাস্তায় বিপদে পড়ব বারবার বললেন৷ তবু… তবু… ওই গাছহীন মেঘমাখা নেড়ু টিলাটাকে সেই মুহূর্তে বন্ধু করতেই হবে আমায়৷ দু কথা বলতেই হবে তার সাথে ৷ জিজ্ঞেস করতেই হবে – এতক্ষণ স্পষ্ট থেকেও কেন সে আমার কাছে অপরিচিত থেকে গিয়েছিল! আর বৃষ্টির অস্পষ্ট বড়ো দানা কেন তাকে আমার বুকের মধ্যে পুরে দিল৷
ঠিক তিনটে নাগাদ আকাশে শত কমলালেবু ফলল৷ ভিজে অন্তর্বাসে দেখলাম- বৃষ্টি থেমে বিকেল আসার ভাবটুকু লেগেছে আমার টিলাবন্ধুর সারা অঙ্গে৷ কমলা আলো তার রঙ শূন্যতা কাটাতে পারেনি৷ আর কাটাতে পারেনি বলেই বোধহয় সে তখন আরো কাছের হয়ে উঠছে৷ সূর্যের আলোয় বন্ধু টিলার রঙ পাল্টালে হয়ত… হয়ত তাকে আমার ভালো লাগত না৷ সে মুহূর্তে তো এমনই অনুভব হয়েছিল আমার৷
বর্ষা কাটতেই একঢাল মানুষ… রাস্তার ধারের পাঠশালা থেকে ছাত্রদের সহজপাঠ পড়ার শব্দ এল৷ টিলা বলেছিল- এই দ্যাখ তোর একাপনা কাটাতে কেমন খোকা এনে দিলাম। আর ভয় পাস নে- যা এগো এক নতুন জাতির গ্রামে৷ যারা ফুরিয়ে আসছে ভালোবাসায় তাদের জড়িয়ে ধরে ম ৷ কী যেন পড়ছিল সেদিনকার ছাত্রগুলো?
“রাম বনে ফুল পাড়ে৷ গায়ে তার লাল শাল৷ হাতে তার সাজি৷ বেল ফুল তোলে৷ জবা ফুল তোলে৷ নাল ফুল তোলে৷”
সে ফুল জলে ফোটে৷ রঙ তার সাদা৷
বরাবর সাদা… অন্তরে তার বাস৷ আমার শুকোতে থাকা অন্তর্বাস আরাম দিচ্ছিল৷ বাচ্চাগুলো বিদায় দিতে গিয়ে এত্ত হাসে কেন রে আজ!

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
তিনি একজন শিক্ষক, নোটো থিয়েটার ট্রুপের নির্দেশক নাট্যশিল্পী, প্রাবন্ধিক, গদ্যকার গবেষক। গবেষণার বিষয় : ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বাঙালি মধ্যবিত্তের রাজনৈতিক উত্তরণ ও নাটকে রাজনীতি ৷ তার সম্পাদিত বই -১ বাচ্চা বুড়ো চ্যাংদোলা, ২ দেড়শো বছরের শিশু কিশোর নাটক ( নাট্যকার মনোজ মিত্রের সঙ্গে যুগ্ম সম্পাদনা -তিন খণ্ড), ৩ সুন্দর নাট্যসম্ভার (২খণ্ড)
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!