জামিনে মুক্তি পেলেন ইরানি সেই ফুটবলার

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন

উজবেকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে ইরানের ভোরিয়া গাফৌরি জাতীয় সঙ্গীত শুনছেন। ছবিটি ২০১৮ সালের ১৯ মে তোলা ইরানে চলমান বিক্ষোভে সরকারবিরোধী মন্তব্য করে গ্রেপ্তার হওয়া দেশটির সাবেক আন্তর্জাতিক ফুটবলার ভোরিয়া গাফৌরি মুক্তি পেয়েছেন। শনিবার (২৬ নভেম্বর) জামিনে মুক্তি পান তিনি।

এছাড়া গাফৌরির সঙ্গে ইরানের বিশিষ্ট ভিন্নমতাবলম্বী হোসেইন রোনাঘিও একইদিন মুক্তি পেয়েছেন। রোববার (২৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুর্দিদের অধিকার এবং সরকারবিরোধী প্রতিবাদের সমর্থনে কথা বলার পর গত বৃহস্পতিবার ভোরিয়া গাফৌরিকে গ্রেপ্তার করে ইরানি কর্তৃপক্ষ। কাতারের দোহায় যখন ইরান জাতীয় দল বিশ্বকাপ খেলছে সেসময় গাফৌরির মতো সাবেক শীর্ষ একজন ফুটবলারকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছিল।

প্রতিবাদী এই ফুটবলার ইরানের জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক সদস্য ও তেহরান ক্লাব এস্তেঘলালের অধিনায়ক ছিলেন। পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটিতে চলমান বিক্ষোভ ও ঘটনাপ্রবাহে কুর্দিদের পক্ষে অবস্থান নেন এই ফুটবলার।

এমনকি বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরবও হয়েছিলেন ভোরিয়া গাফৌরি। সেখানে দেওয়া পোস্টে তিনি ইরানের সরকারকে কুর্দিদের ওপর হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে বলেছিলেন। অবশ্য ইরানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফের সমালোচনা করার দায়ে এর আগেও একবার তাকে আটক করা হয়েছিল।

গাফৌরিকে অবশ্য চলমান বিশ্বকাপে খেলার জন্য দলে নির্বাচিত করা হয়নি। তিনি তার পুরো ক্যারিয়ারজুড়ে ইরানের কর্তৃপক্ষ এবং নীতির স্পষ্ট সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

এদিকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পরপরই রোনাঘিকে আটক করা হয়েছিল। এরপর দুই মাস ধরে অনশন করার পর তার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়। ইরানের ফারস বার্তাসংস্থা তাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে বলেছে, ‘ভোরিয়া গাফৌরি এবং হোসেন রোনাঘি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।’

ইরানি সংবাদপত্র শার্গও বলেছে, বৃহস্পতিবার একটি প্রশিক্ষণ সেশনের সময় গ্রেপ্তার হওয়া গাফৌরিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে হোসেন রোনাঘির ভাই হাসান টুইটারে লিখেছেন, ‘চিকিৎসার জন্য আজ রাতে হোসেনকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।’

তাদের বাবা আহমেদ হাসপাতালে হোসেনের একটি ছবি পোস্ট করে বলেছেন, ৬৪ দিনের অনশনের পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

জাতিসংঘের মতে, তেহরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আমিনির মৃত্যুর পর যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল তা দমনে প্রায় ১৪ হাজার লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে কয়েক ডজন সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, আইনজীবী এবং ক্রীড়াবিদও রয়েছেন।

ইরান গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই বিক্ষোভ এক দশকের বেশি সময়ের মধ্যে ইরানের ইসলামি নেতৃত্বের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে বিবেচিত হচ্ছে।

মূলত গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই বিক্ষোভে টালমাটাল ইরান। হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিকতা পুলিশ ২২ বছর বয়সী কুর্দি ইরানি তরুণী মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর পুলিশি হেফাজত থেকে কোমায় নেওয়া হয় এই তরুণীকে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিনই মারা যায় মাহসা আমিনি।

সংবাদমাধ্যম বলছে, মাহসা আমিনিকে তেহরানে নৈতিকতা পুলিশ তার চুল সঠিকভাবে না ঢেকে রাখার অভিযোগে আটক করেছিল। ২২ বছর বয়সী ইরানি কুর্দি এই তরুণী গ্রেপ্তার হওয়ার তিন দিন পর ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ হেফাজতে মারা যায়। তার মৃত্যুর পর থেকেই ইরানজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে।

ইরানের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, ওই তরুণী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, তবে ভুক্তভোগীর পরিবার এই বিষয়ে বিরোধিতা করে বলেছে, তাকে নৈতিকতা পুলিশ মারধর করেছে।

এর আগে এএফপি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে ২২ বছর বয়সী আমিনির মৃত্যুর পর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে যে বিক্ষোভ শুরু হয় তা ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে ইরানের ক্ষমতাসীনদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!