ইরানে বিক্ষোভকারীর ‘তড়িঘড়ি’ মৃত্যুদণ্ড

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন
হিজাব না পরার অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর গত বছর পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যু হলে ইরান জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। ফাইল ছবি টুইটার

ইরানে নীতি পুলিশের হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুকে ঘিরে আন্দোলন বিক্ষোভ এখনো চলছে। দেশটির সরকার বিক্ষোভ দমনে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। চলমান বিক্ষোভে দমন-পীড়ন আর সহিংসতায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩২৬ জন মারা গেছেন বলে দাবি করেছে অসলোভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর)।

ঠিকমতো হিজাব না পরায় ১৩ সেপ্টেম্বর মাহসাকে তেহরানে আটক করে নীতি পুলিশ। আটকের পর পুলিশি হেফাজতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে তেহরানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পুলিশের মারধরে এই তরুণীকে মৃত্যুর ঘটনায় ইরানজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। রাজধানী তেহরানসহ দেশটির বিভিন্ন এলাকার সড়কে প্রতিদিনই বিক্ষোভ হয়েছে।

রবিবার (১৩ নভেম্বর) এই বিক্ষোভের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দেশটির বিচার বিভাগ তড়িঘড়ি এমন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ক্ষেত্রে ঝুঁকি রয়েছে বলে সতর্ক করেছে।

বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে বলছে, বিক্ষোভ থেকে হাজার হাজার বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কেউ কেউ মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন বলে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

ইরানের সংবাদমাধ্যম মিজান অনলাইন জানিয়েছে, “এই কঠোর শাস্তি দেওয়ার কারণ হিসাবে আদালতের যুক্তি হলো, বিক্ষোভকারী সরকারি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য তিনি দায়ী। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চক্রান্তেও তিনি সামিল ছিলেন। তিনি ঈশ্বরের শত্রু।”

তেহরানের আরেকটি আদালত আরও পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়েবসাইটটি।

নারীর পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে ইরানে চলা বিক্ষোভে সংহতি জানানোর মূল্য জীবন দিয়ে মেটাতে যাচ্ছেন দেশটির সঙ্গীতশিল্পী ও আলোচিত র‍্যাপার সামান ইয়াসিন। তিন সপ্তাহে আগে নিজ বাড়িতে থেকে টেনে-হিঁচড়ে ইয়াসিনকা তুলে নিয়ে গিয়েছিল ইরানের পুলিশ। তরুণ এই কুর্দি শিল্পীর বিরুদ্ধে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর (মোহারাবেহ) অভিযোগ আনা হয়েছে; যার সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড।

ইয়াসিনের ভাগ্য কদিনের মধ্যেই নির্ধারণ হবে ইরানের আদালতে। চলমান বিক্ষোভে সমর্থনের জন্য ইয়াসিনের মতো হাজার হাজার তরুণ-তরুণী জেলে বন্দী।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আশঙ্কা, তরুণদের বার্তা দিতে বিচারে “কঠোর দৃষ্টান্ত” স্থাপন করতে পারে ইরানের শাসকগোষ্ঠী।

ইরান হিউম্যান রাইটসের পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোগাদ্দাম এএফপিকে বলেছেন, “সরকারি তথ্য অনুসারে, কমপক্ষে ২০ জন এখন মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন। আমরা খুব উদ্বিগ্ন যে মৃত্যুদণ্ড দ্রুত কার্যকর করা হতে পারে।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই ইরানের কর্তৃপক্ষকে কঠোর সতর্কবার্তা পাঠাতে হবে যে বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা গ্রহণযোগ্য নয় এবং এর মারাত্মক পরিণতি হবে।”

রবিবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বিচার বিভাগ তিনটি প্রদেশে ৭৫০ জনেরও বেশি লোককে “সাম্প্রতিক দাঙ্গায়” জড়িত থাকার জন্য অভিযুক্ত করেছে। বিচার বিভাগের পরিসংখ্যান অনুসারে, বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে দুই হাজারের বেশি লোককে ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত করা হয়েছে, তাদের প্রায় অর্ধেকই রাজধানী তেহরানে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!