ভারতে অবৈধ বাংলাদেশিদের বিষয়ে সতর্কতা জারি করল সরকার

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন

ভারতে বাংলাদেশি নাগরিকদের অবৈধভাবে বসবাসের বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। রোববার (৬ নভেম্বর) দেশটির ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকারের এই সতর্কতা জারির খবরটি প্রকাশ হয়।

এতে বলা হয়েছে, ভারতে অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশিরা চাকরি, পাসপোর্ট পেতে ভুয়া পরিচয়পত্র দিয়ে প্রাপ্ত নথি ব্যবহার করছেন। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।

পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সতর্কতা জারি করে রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশকে বলা হয়েছে, অবৈধ অভিবাসীরা যারা পশ্চিমবঙ্গের বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে লুকিয়ে লুকিয়ে দেশজুড়ে বসতি স্থাপন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

দ্য হিন্দু বলছে, নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের স্থানীয় লোকজন এবং এজেন্টদের একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানানো হয়েছে। নিজেদের মধ্যে অত্যন্ত মজবুতভাবে সম্পৃক্ত ওই নেটওয়ার্কটি বিদেশি (বাংলাদেশি) নাগরিকদের প্রবেশ, জাল ঠিকানা ও পরিচয় ইত্যাদির সাহায্যে আসল নথি পেতে সহায়তা করে থাকে।

এছাড়া ভারতে প্রবেশের পর অবৈধ অভিবাসীদের যারা প্রাথমিকভাবে আধার কার্ড হাতে পান তারা কর্মসংস্থানের জন্য ভারতের বিভিন্ন স্থানে চলে যান এবং সেখানে বসতি স্থাপন করেন। কেউ কেউ ঠিকানা বা পরিচয়ের অন্যান্য প্রমাণ যেমন ব্যাংকের পাসবই, ভোটার পরিচয়পত্র এবং প্যান কার্ড পেতেও সক্ষম হয়েছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।

ভারতের সিনিয়র একজন পুলিশ কর্মকর্তা দ্য হিন্দুকে বলেছেন, ‘ভারতে প্রবেশের পর এই ধরনের নথিগুলো অবৈধ বিদেশিদের কোনো এক প্রদত্ত ঠিকানায় জাল পরিচয় প্রতিষ্ঠা করতে এবং চাকরি পেতে সহায়তা করে। বিদেশ ভ্রমণে পাসপোর্ট পেতে অনেকেই এগুলো ব্যবহার করছেন। যেহেতু পাসপোর্টসহ এই ধরনের নথিগুলো উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রদান করা হয়, তাই অভিযুক্ত ব্যক্তিরা সন্দেহ বা ধরা পড়া ছাড়াই ভ্রমণ করেন।’

সম্প্রতি জারি করা ভারতের মোদি সরকারের সতর্কতায় বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের কিছু স্থানীয় বাসিন্দা জালিয়াতি করে প্রাপ্ত ভারতীয় পরিচয় নথি, বিশেষ করে আধার কার্ড প্রদান করে এসব কাজে এজেন্ট হিসাবে কাজ করছে।

ভারতীয় নাগরিক হিসাবে জাহির করা বিদেশিরা ভারতজুড়ে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে এসব নথি ব্যবহার করছে ইঙ্গিত দিয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেছেন, অভিযুক্ত বিদেশি নাগরিকরা তামিলনাড়ু, কেরালা এবং কর্ণাটকসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে বসতি স্থাপন করছেন।

সতর্কতা জারি হওয়ার কয়েকদিন পর ১৯৫৫ সালের আইনে বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ঘোষণা দেয় ভারত। মূলত দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের দুই জেলায় বসবাসকারী বাংলাদেশি সংখ্যালঘুরা এই ঘোষণার আওতায় নাগরিকত্ব পাবেন।

একইভাবে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টানসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদেরও নাগরিকত্ব দেওয়া হবে জানায় ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

অবশ্য কয়েক বছর আগে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর পুলিশ বাংলাদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছিল। মূলত পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় বাসিন্দা হিসাবে নথি থাকা এসব বাংলাদেশিরা তামিলনাড়ুর বিভিন্ন জেলায় বসতি স্থাপন করেছিল এবং নির্মাণ, আতিথেয়তা এবং টেক্সটাইল শিল্পে চাকরি নিয়েছিল।

সেসময় কয়েকজনকে ফরেনার্স অ্যাক্টের ধারায় গ্রেপ্তার করে কারাগারে রাখা হয়। এই ধরনের সন্দেহভাজনদের বেশিরভাগই তিরুপুর, চেঙ্গলপাট্টু, ইরোড, কুদ্দালোর এবং কাঞ্চিপুরম জেলায় বসতি স্থাপন করেছিলেন বলে জানায় দ্য হিন্দু।

এছাড়া করোনা মহামারির লকডাউনের সময় কয়েক লাখ অভিবাসী ভারতীয় শ্রমিক তাদের নিজ নিজ রাজ্যের উদ্দেশে রওনা হলেও সেসময় বাংলাদেশি শ্রমিকরা তামিলনাড়ুতেই থেকে যান।

তাদের মধ্যে কেউ কেউ মহামারির সময়কালে মাদক ব্যবসার মতো কার্যকলাপে লিপ্ত ছিলেন বলেও বেশ কয়েকটি সূত্র দাবি করেছে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!