ছয়টি কবিতা: কবি দ্বীপ সরকার

দ্বীপ সরকার
দ্বীপ সরকার
3 মিনিটে পড়ুন
সাময়িকী আর্কাইভ

শরত পদাবলি

দিনের আলো ডুবিয়ে গেলে
সন্ধ্যে মাখা রং কালো
সন্ধ্যে বাবু চোখ মেলিয়ে
আচমকায় সে চমকালো

সুর্যপুচ্ছ ধরছে টেনে
গোধূলিতে আটকালো
শিশির বাবুর অঞ্জলিটা
চির হরিৎ যমকালো

শরতের মিহি জোসনা রাতে
ছড়ায়ে ছিটায়ে চাঁদঘাস
জারুল গাছে আটকে আছে
কুয়াশার পূর্বাভাস

গায়ে মাখছি রৌদ্রলিপি
পায়ে পড়ছি রুপোর নিওর
চোখের কাছে-ঠিক অদুরেই
গাঢ় সবুজ- অনেক পিওর

ভাদাই

এবং ওখানে যাও তুমি-আমাদেরই তো ভাদাই;
এই সব নদীতে শরৎ আসেই-তুমি একটি শব্দও করবেনা

রাজহাঁসগুলো আটপ্রৌঢ়ে চিংরি খাচ্ছে খাক
কলমি শাকের ভাঁজ ভেঙ্গোনা
তুমি একটু একটু করে যাও-চোখের তারায় তারায়
লিখে রাখো হিমের বুনন

ওখানে সুন্দরী গাছের পুরনো বন্ধুর নাম শরৎ
আর ইপিল বাগিচা শরতের ডাক নাম
নদীর দুই পাড়ে চাঁদ লটকে থাকে-
জোসনার চিকচিক ঘিঁষে তারার মেলা
ইলিশ ইলিশ জলে রুপোর চাঁদ
পানকৌড়িদের সংসারে ইদানিং ফূর্তির কোরাস

লোকে ভাদাই বলে ডাকলেও আমি ডাকি ভাত-আদায়
জেলেদের পেটে ভাত যায়-শরতের চাঁদ যায়,
রুপোর ইলিশ যায়-কুয়াশার পা যায়
তুমি চুপি চুপি যাও-দেখো,
আর অন্য কেউ আসার আগেই

আমার দেরিদের ডাক নাম অপেক্ষা

আমি আদতে এমনই-সব কিছুতে দেরি হয়ে যায়
যদি বলি এই আসছি‘তবুও এক ঘন্টা’
যদি বলি প্যান্টের ভাঁজ সারতে যতক্ষণ
তবুও আধা ঘন্টা-

অনেকেই চলে যায়- আর ফেরেনা

এই সব মানুষকে এড়িয়ে চলাই ভালো
বরং ভুলে ভালে এক্কেবারে ভুলে যাওয়া আরো ভালো

আমার দেরিদের ডাক নাম অপেক্ষা
অপেক্ষা সেতো ভীষণ যন্ত্রণার কথা

দেরি মানেই অপেক্ষা
আর অপেক্ষা পিছুটানের ইঙ্গিত
তোমার সে রকম পিছুটান নেই-

দ্বিচারিতা


কাউকে বলতে চাইনা ফিরে আসুক-কিন্তু আমার
চোখের ভাষা অন্য রকম। আমার মনের ভাষাও
বিচারিক বিবেচনায় অন্য রকম

মন বলে ফিরে আসুক-আমি বলি না আসলেই ভালো;
চোখ বলে ফিরুক-আমি বলি অন্য কথা
সে ফিরুক অথবা না ফিরুক সে কাঁদুক অথবা না কাঁদুক

চোখ এবং মনের সাথে আমার
ভাষার মিল নেই
বর্ণের মিল নেই
চাহিদার মিল নেই

আমি বলি না আসলেই ভালো

ভাতকুমারি

কাউনের ফুল থেকেও ভাতের ঘ্রাণ পাও
ধানফুল থেকেও পাও
জীবনেরও ঘ্রাণ ওখানেই-

জীবন খুঁজতে খুঁজতে-ভাতফুল চাই;
ভাতফুলের ভেতরেই ভাতকুমারিদের চোখ

ওখানেই জীবন বৃক্ষ-শেকড়ে শেকড়ে প্যাঁচ;
মাঠান্তে ধান ক্ষত-আবহাওয়াজুড়ে নীল শেওলার মাঠ
মানুষে মানুষে বাঁচার স্ফুরন
জীবন ওখানেই-বেঁচে থাকাজুড়ে ধানের শংসা

জীবন জীবন খেললে ভোরের মাঠে আসো
ধানের কাছে খেলা শিখি-ধান খেলা শেখায়
ভাতকুমারিদের চেখে চেখে মাঠে শক্তি বাড়াই

যে হারে সেও ভাত খায়
যে জিতে সেও ভাত খায়
ভাতকুমারি সকলের ঠোঁটেই যায়

মনগাছ

বদলী বিষয়ক প্রজ্ঞাপনে মনকথাটা উল্লেখ নেই।
বদলী হতে হতে একদিন প্রতিবাদী দেয়াল হয়ে দাঁড়াবে মনগাছ-

ফরমাল কোন মন পেলে সত্যি থেকে যেতে পারি
অফিসের চারপাশ এঁকে রাখবো মনগাছ। মনগাছে ঝুলে থাকবে
প্রত্যাশার তিতির। সেদিন ঠিকি নতুন আরেকটা
দিনের উপস্থিতি লিখে রাখবে

পৃথিবীতে মনগাছ বলে নতুন প্রজন্মের বৃক্ষ গজিয়ে উঠবে
শাখে শাখে তার হৃদয় ফুটবে,চুমু ফুটবে-অতঃপর বিস্তির্ণ আশালতা-

আশালতা থেকে চুমুহাওয়া এসে বদলী ঠেকাবে…

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
দ্বীপ সরকার। পিতা মৃত হাবিবুর রহমান। মাতা আছিয়া বিবি। জন্ম ১মার্চ,১৯৮১ইং। বাংলাদেশের বগুড়া জেলার শাজাহানপুর উপজেলায়। পেশা বেসরকারি চাকুরিজীবী। প্রকাশিত গ্রন্থ ৩টি ( কবিতা)। সম্পাদনা পত্রিকা "কুয়াশা"।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!