সন্তানরা দৃষ্টিশক্তি হারাবে, তাই তাদের নিয়ে বিশ্বভ্রমণে বাবা-মা

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন

চার সন্তানকে নিয়ে সুখের সংসার কানাডার এডিথ লেমে ও সেবাস্টিয়ান পেলেটার দম্পতির। কিন্তু চিকিৎসক এই দম্পতিকে জানান, অচিরেই তাদের তিন সন্তান দৃষ্টিশক্তি হারাবে। সন্তানদের দৃষ্টিশক্তি চলে যাওয়ার আগে তাই তাদের পৃথিবী ঘুরে দেখাতে বিশ্বভ্রমণে বেরিয়েছেন এই বাবা-মা।

মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েক বছর আগে তাদের তিন বছর বয়সী মেয়ে মিয়ার মধ্যে প্রথম দৃষ্টি সমস্যা লক্ষ্য করেন। তার বছরখানেক পর মিয়ার দুরারোগ্য ‘‘রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা’’ অবস্থা ধরা পড়ে।

১২ বছর ধরে বিবাহিত এই দম্পতি তাদের ছেলেদের মধ্যেও একইরকম উপসর্গ লক্ষ্য করেছেন। ডাক্তাররা জানিয়ে দিয়েছেন, ওই দম্পতির তিন ছেলের মধ্যে কলিন (৭) এবং লরেন্ট (৫) একই রোগে আক্রান্ত। তবে ৯ বছর বয়সী লিও এখনও শঙ্কামুক্ত বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসক।

রোগটি সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, এই রোগের কারণে সময় যত গড়ায় ততই দৃষ্টিশক্তি হারায় রোগীরা। এই রোগের কোনো প্রতিকার নেই ও আক্রান্তরা মধ্যবয়সে এসে পুরোপুরি দৃষ্টিশক্তি হারায়।

ইউএস ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের ন্যাশনাল আই ইনস্টিটিউট অনুসারে, রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসায় আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষ শেষমেশ তাদের দৃষ্টিশক্তি হারান।

সন্তানদের মধ্যে দুরারোগ্য ব্যাধি আছে জানতে পারার পর লেমে ও পেলেটিয়ার দম্পতি এই দুর্ভাগ্যকে মেনে নেয় ও সন্তানদের প্রয়োজনীয় দক্ষ করে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেয়। আর তাই চিকিৎসকের পরামর্শে অন্ধ হতে চলা সন্তানদের স্মৃতি সমৃদ্ধ করতে বিশ্বভ্রমণে বেরিয়েছেন ওই দম্পতি।

এডিথ লেমে বলেন, আমাদের কিছুই করার নেই। কারণ ‘‘রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা’’ রোগ প্রতিরোধের জন্য এখন পর্যন্ত কোন নিরাময় বা কার্যকর চিকিৎসা নেই।

তিনি আরও বলেন, আমরা জানি না কত দ্রুত তারা দৃষ্টি হারাবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, হয়তো মধ্যবয়সে তারা পুরোপুরি দৃষ্টিশক্তি হারাবে।

বড় মেয়ে মিয়ার চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, ভালো কিছু দৃশ্য তার স্মৃতিতে রাখতে পারেন। এটা শোনার পর ওই দম্পতি অন্য সন্তানদের জন্যও একই কথা ভাবেন। শুধু দৃশ্য নয়, ওই দম্পতি চাইছেন সন্তানদের স্মৃতিতে বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি ও স্থানের ছবিও রাখতে। এ কারণে ওই দম্পতি সময় থাকতেই সন্তানদের নিয়ে বিশ্বভ্রমণের পরিকল্পনা করেন।

লেমে জানান, মহামারির কারণে ২০২০ সালে এই বিশ্বভ্রমণ শুরু করতে পারেননি তারা। তারপর চলতি বছরের মার্চে তারা কোনোরকম সফরসূচি ছাড়াই কানাডার মন্ট্রিল থেকে যাত্রা শুরু করেন।

ওই পরিবারটি তাদের বিশ্বভ্রমণ নামিবিয়া দিয়ে শুরু করে। যেখানে বাচ্চারা হাতি, জিরাফ কিংবা জেব্রার মতো প্রাণীদের কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছিল। সেখান থেকে তারা জাম্বিয়া ও তানজানিয়া ঘুরে তুরস্কে যান। সেখানে তারা এক মাস অবস্থান করেন।

পেলেটিয়ার জানান, তিনি তারা বাচ্চাদের এমন জিনিস দেখাতে চান যা তারা বাড়িতে বসে দেখতে পাবে না।

ফেসবুকে এই দম্পতির ১১ হাজার ফলোয়ার রয়েছে ও প্রায়শই নিজেদের জীবন সম্পর্কে পোস্ট করে তারা। পরিবারটি ২০২৩ সালের মার্চ মাসে তার ট্রিপ সম্পূর্ণ করে কানাডার কুইবেকে নিজেদের বাড়ি ফিরে যাবে বলে জানা গেছে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!