আমি তাকাই অন্তরার মাসকারায়, বাতাসের সাথে নেমে আসে অদৃশ্য নিউরোন এবং অন্যান্য গদ্য কবিতা

লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল
লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল
4 মিনিটে পড়ুন

আমি তাকাই অন্তরার মাসকারায়

আঁধারিমায় দখিনা বাতাস বয় আর স্ক্যান করে নীল রঙ, আমাদের রাস্তায় কালো রঙের সুর- স্বরিত কথার কাদামাটি আশ্রমে আমার সমস্ত শব্দগুচ্ছ খুঁজতে থাকে নিজেরই সম্পর্ক: মেঘলা ছায়াপথে তখন সন্ধ্যা নামে

কী আশ্চর্য, সোঁদাগন্ধ জুড়ে শামুক মহিমা, জীবনকে ভালোবাসে সকলেই অথবা ফ্যান্টাসিটুকু নিয়ে আকাশের দিকে তাকাতে চায়- জেনারেলি এই শহর এই গ্রাম এই জনপদ- অনেকেই সমর্পণ বোঝে না এক টুকরো রাতের বাঁশিতে

তারপরও মাইগ্রেন পুড়ে না আর, আমি তাকাই অন্তরার মাসকারায়

সকালে পাখি ডাকছে নিজের খেয়ালে – যদিও শালুক ডুবে গেছে পিছিয়ে পড়া চোখের পল্লবে- এই মহাশ্বাসের ভিতর আবির্ভাব হবেন তৎস্বরূপ— বৃত্তের পরিধি ছিঁড়তে নিজের লোমশ বুকে নিজের হাত স্পর্শ করবেন।

বাতাসের সাথে নেমে আসে অদৃশ্য নিউরোন

মাথার উপর জ্বলছে কোনিয়াম, দু-একটা অসুস্থ ঝিঁঝিঁ পোকা উড়ে গেলে ক্ষতস্থান থেকে বেরিয়ে আসে নোনা রঙ, অটোচালকের লিবিডো থেকে বেরিয়ে আসে কবলিত প্লুতস্বর- টানা হরফের কয়েক ঘন্টা জার্নিতে একটা মাঠ আর ঘোলাটে মাটি: প্রান্তরে অমোঘ হননের ছায়াদিন

খাঁজকাটা খোলামকুচির সুযোগ সারা পথ জুড়ে, বাতাসের সাথে নেমে আসে অদৃশ্য নিউরোন– ম্লান আলোয় শুরু হয় কতিপয় ফড়িংয়ের নাভিখোঁজ

এই অপরাহ্নে নৌকার গল্প বলা স্নেহজাত অস্থিরতায় সূর্যাস্তের উপর শুয়ে আছি

আর পুণর্জন্ম হবে কি আমার?

ফুসফুসে জমাই বিশুদ্ধ হিম শরীর

আমি তাকাই অন্তরার মাসকারায়, বাতাসের সাথে নেমে আসে অদৃশ্য নিউরোন এবং অন্যান্য গদ্য কবিতা
ফুসফুসে জমাই বিশুদ্ধ হিম শরীর

এক বিরহী বিলাবলে রাত তিনটে ঘিরে ধরল আমাকে, শ্যামাভ নির্জন পৃথিবীর তুলসীগন্ধ আকাশে বর্তিকা নামে কোনো বিশেষ্য নেই- নীল জোনাকির সতর্ক সংকেতের পরও স্থির উপকূল- ভেজা দৃষ্টি ঝাপসা হতে হতে কালপুরুষের কোমরের তিনটি বিন্দু মৃত্যুরাগ শোনায়

যদিও গাছের আলিঙ্গনে কোন উদ্বাস্তু চিহ্ন নেই, আমি ফুসফুসে জমাই বিশুদ্ধ হিম শরীর- ব্ল্যাক হোলের ভিতর দিয়ে সারি সারি ইঁদুর চলে যায়

পীড়িত চেতনার ইহকাল নিয়ে পদ্মের কথা ভাবি আর ক্ষয়ে যাওয়া সাঁকো হয়ে যাই।

আয়ুস্কাল গায়ে জড়ায় কুলকুণ্ডলিনী

আমি তাকাই অন্তরার মাসকারায়, বাতাসের সাথে নেমে আসে অদৃশ্য নিউরোন এবং অন্যান্য গদ্য কবিতা
আয়ুস্কাল গায়ে জড়ায় কুলকুণ্ডলিনী

সেই দিঘির জলে তারারা কাঁপে সরসর আর চিৎশোয়া থেকে আমি উঠে বসি, চোখের উপরের আকাশটা ঐশিক ঋতু ছিঁড়ে নৈঋত কোনে বসে- গতকাল ও পরবর্তী মার্জিনে বৈষ্ণবীরা ধোঁয়া থেকে রক্ষা করে রূগ্ন চাঁদ-ভোরাইয়ের সুর কত দূরে- কত বাঁকের পর অশ্রুবোধ

এখন সেকচকে ফুল ও কাঁটায় হোল্ড করা অতীত ঝুলে আছে বটঝুরির সাথে, এখনও কি বলবে অন্ধকার কাটিয়ে ওঠা সহজ- ভর সন্ধ্যাবেলায় আয়ুস্কাল গায়ে জড়ায় কুলকুণ্ডলিনী-

আমার ঠোঁটে সপ্তম আবেগ- শড়কের দৃশ্যে একজন চসমা স্বাদহীন অশোক: খাদ পেরিয়ে চলে যায়।

নিশ্বাস ভাগ করি আমি আর ধ্যানমগ্ন বক

আমি তাকাই অন্তরার মাসকারায়, বাতাসের সাথে নেমে আসে অদৃশ্য নিউরোন এবং অন্যান্য গদ্য কবিতা
নিশ্বাস ভাগ করি আমি আর ধ্যানমগ্ন বক

সে-ই বোধহয় বিশীর্ণ চরে শব্দহীন এনাস্থিসিয়া- মৃত শমিবৃক্ষের ডালে বসে আছে ধুসর রঙের বকটি, লোলিত দুপুরের কোহল থেকে একফোঁটা নিজস্ব আকাশে প্রভূত মৈথুন: নিঃস্বনীল, নিষাদের প্রশান্ত রাস্তায় কালো অক্ষর থমকে গেলে আমরা পুকুর হয়ে যাই- এরপরই বনচারী দৃশ্যে একমুঠো রোদের গন্ধ উড়ে

অথৈ দৃষ্টির সম্মুখে ঝিরিঝিরি কাঁপে বাঁশপাতা, তারই নিচে স্নানের সরঞ্জামে উত্তুরে বাতাস– মুখ ডুবিয়ে থাকা অসাড় ক্ষতটি বাঁশকঞ্চি বেড়া ছুঁয়ে আঁকাবাঁকা পথ নেয়-

ক্ষয় ও অক্ষয়ের মাঝে দাঁড়িয়ে নিশ্বাস ভাগ করি আমি আর এই ধ্যানমগ্ন বক।

ছত্রাক উড়ছে আবছা আলোর ডানায়

আমি তাকাই অন্তরার মাসকারায়, বাতাসের সাথে নেমে আসে অদৃশ্য নিউরোন এবং অন্যান্য গদ্য কবিতা
ছত্রাক উড়ছে আবছা আলোর ডানায়

এমনকি উত্তর দিকে তাকালেও জল শুকিয়ে যাওয়া মাঠের শ্বাসকষ্ট উঠে আসে, ছত্রাক উড়ছে আবছা আলোর ডানায়, খসখসে শরীরের কাছে ভাঙা বাঁধটি নিয়তই হলুদরঙ, সকল ছোঁয়া এড়িয়ে নীল সবুজ মাছি হয়ে যাচ্ছে কড়ি ও কোমল ফিকশন, কোনো নোটিফিকেশন ছাড়াই কৃষ্ণপক্ষের মায়া খুলে নাবাল বেয়ে ওঠে আসছে বুদবুদ ইন্দ্রিয়

অভিভাজ্য এই দৃশ্যে শুভঙ্করের মায়ের হাতে খসে পড়ল অবশিষ্ট সংশ্লেষ: ধুলো মাখা পাতা ও প্রশাখা, তবুও মাথার চুল থেকে জল চুঁইয়ে পড়ছে মাটিতে- আর পেছনে সারি সারি মগ্ননিবিড় কুসুমিত দুপুর

আঁচলের সুষমায় আমি ফুল আঁকি- ভাঙা চোরা মূর্তির সেন্সিটিভিটি ক্রমশ পাখি জন্মের দিকে যায়।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল। বহুদিন ধরে লিখছেন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পত্রিকায়। এ পর্যন্ত প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: নিঃসঙ্গ নাভিচন্দন – ২০২২, মনস্কাম ছুঁয়ে দেখো – ২০২১, জাম রঙের পুরুষ - ২০১৯, হরিত প্রাণের কম্পাঙ্ক - ২০১৮, তিলক জন্মের ছায়া - ২০১৫, কালো নৌকার তৃষ্ণা - ২০১৩, আঁধারের পাঁজর - ২০১২, আঁধারের পাঁজর - ২০১২, সজনেফুল ও নিঃশর্ত সমর্পণ - ২০১১, সজনেফুল ও নিঃশর্ত সমর্পণ - ২০১১, খরানদীর বৃষ্টি সম্ভব - ২০১০, মানুষের নদী - ২০০০, হঠাৎ হঠাৎই - ১৯৯৮
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!