কবি মহম্মদ মফিজুল ইসলাম’র ছয়টি কবিতা

মহম্মদ মফিজুল ইসলাম
মহম্মদ মফিজুল ইসলাম
2 মিনিটে পড়ুন

প্যারাসাইট

আহা! ইস্যুর পরে ইস্যু আসে।
গোটা রাজ্য দু:খে ভাসে।
বিপদে কেউ আসে না চারিপাশে।
ওরা মজা লোটে, অট্টহাসে।

প্রয়োজন যখন টাফ ফাইট,
বুদ্ধিজীবীরা তখন প্যারাসাইট।
সদলবলে ধর্নায় বসে লেট নাইট।
বোঝেনা কোনটা রং কোনটা রাইট।

তোমার-আমার পাঁচশো ভাতা।
ওদের মাথায় সুরক্ষার ছাতা।
জানে সবাই কে যে ওদের মন্ত্রনাদাতা।
ওরা বলবে কেন আর তোমার কথা?

সবুজের সাথে সখ্যতা

গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহে মাটিতে ফাটল।
আকাশে নেই মেঘেদের আনাগোনা।
ছাদহীন আস্তানা ধুঁকছে।
তাই ছায়া পেতে আমি গাছের কাছে যাই।

অসুখের জ্বালায় জন্মভিটে জ্বলছে।
নিশীথ রাত্রির নিঝুম অন্ধকারে
বিদ্যুৎ স্তম্ভে কালো পেঁচা ডাকছে।
সদ্য মরা প্রতিবেশীর মর্গের কালো রক্তে
জমাট বাঁধা অসহায় ভাগ্য।
ইতিহাস লেখার কাগজ কই?
কাঠের পেন্সিলও ভ্যানিশ।
উড়ে গিয়েছে বাঁচার শেষ আশা।

একটি গাছ ছিল চিতা সাজাবার।
দমকা ঝড়ে সেটিও পড়ল উপড়ে।
মৃত্যুর পরেও বাঁচতে,
এসো গড়ে তুলি সবুজের সাথে সখ্যতা।

মহাকাশে বাঁধো ঘর

পায়ের নিচে মাটি
অথচ ঘর বাঁধার জায়গা নেই।
তোমার কোনও দেশ নেই।
চলো, প্রতিবাদী মিছিলে হাঁটো।
বজ্রপাত উপেক্ষা করে
পাড়ি দাও মহাকাশে।
সেখানে মাটি নিয়ে কাড়াকাড়ি নেই।
ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বাড়াবাড়ি নেই।
কবর দেওয়ার মতো মাটিও রয়েছে পর্যাপ্ত।

অন্য পৃথিবী

এক জোছনা রাতে আমি স্মৃতির বাঁধে
হাঁটতে হাঁটতে দেখছিলাম—
হিমেল হাওয়ায় আগুন ধরাচ্ছে কেউ।
খস্ করে জ্বলে উঠলো একটা পর্ণকুটির।
ভাত ঘুমে আচ্ছন্ন গোটা শহর।
কয়েকটা কুকুর ডাকছে শুধু।
একটা অ্যাম্বুলেন্স সাইরেন বাজিয়ে চলে হুস্ করে গেল মুমূর্ষ রোগী নিয়ে শহরের দিকে।
হালকা হাওয়ায় কেবল ক’টা পতাকা উড়ছে পত্পত্ করে।
দু’দিন আগেই দমকা হাওয়ায় ইলেকট্রিকের তার ছিঁড়ে পড়েছে।
পাশের বাড়ির টিমটিমে আলোয় দেখা যায় অন্য পৃথিবী।
অবুঝ গাছের সবুজ পাতাগুলো তার সাক্ষী।

ভোগান্তির শেষ কোথায়?

বন্যা থামে না আর,
নদীর পাড় ভাঙ্গে ফি-বছর।
গ্রামের পঙ্কিল রাস্তা সর্পিলের মতো ঘোরে এদিকে ওদিকে।
প্রতিবেশী গরিব-গুরবোদের কাঁচা বাড়িগুলো জলের নিচে ভাসছে।
বিরোধী নেতা-নেত্রীরা মিটিমিটি হাসছে।
খাবার নেই দুমড়ানো-মোচড়ানো ঘরে।
ত্রাণের আকাল সর্বত্র।
শহরের ফোটো তোলা বাবুরা আসেনি আজও।
অভুক্ত শিশুরা কেঁদে কেঁদে ক্লান্ত।
ঘুমিয়ে পড়েছে অভাগা হাড় জিরজিরে মায়ের কোলে।
ওদের জীবন যন্ত্রণা বেড়ে চলে রোজ।
ভোগান্তির শেষ কোথায়?

সঙ্গোপনে

তুমি যেও বিস্মৃত রূপসীর অভিসারে।
অন্ধকারের গভীরে অথবা
কম্পিত আলোর অভিমুখে
ভালোবাসার ভাগ নেওয়ার জন্যে।
সেথায় প্রণয়-জ্বরে কাঁপে রূপসী।
যৌবনের প্রথম স্ফূটনে,
শোকের অর্ঘ ভুলে, গোলাপ-পাপড়ি তুলে
অক্ষম ঈর্ষায় তুমি যেও
সঙ্গোপনে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
জন্ম দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের মাছিভাঙা গ্রামে। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি একজন সাংবাদিক, গ্রন্থকার, প্রাবন্ধিক, কবি ও চিত্রকর এবং গ্রাফোলজিস্ট।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!