কবি বিধানেন্দু পুরকাইত এর ছ’টি কবিতা

বিধানেন্দু পুরকাইত
বিধানেন্দু পুরকাইত
3 মিনিটে পড়ুন

জীবনানন্দ বোধ

নদীর স্রোতের মতো মেঘনার জলে
দেখেছি অন্ধকারে কিশোরীর চোখ।
আমাদের চলাচলে সমুদ্রের ক্ষুধা
অবলা কেবিনে জীবনানন্দ বোধ।
ধানসিঁড়ি ডাকে আয় ঘুমের মায়ায়
পাদুকা স্পর্শ করে চেতনা প্রবাহ
যেখানে নিত‍্য তাঁর ছোঁয়া পদধূলি
সেই মাটি বুকে মাখি প্রত‍্যহ প্রত‍্যহ।
উতলা মনের ভিড়ে সবুজ সনদ
এমন গভীর প্রেম কাছে আসে যদি
কি করে হারায় যেন মানস কুমারী
বুকে তার বয়ে চলে ধানসিঁড়ি নদী।

সেই সন্ধ‍্যা

একটি সন্ধ‍্যা যদি মুছে যায় যাক
একটি সন্ধ‍্যাকে নিয়ে পড়ে থাকা সমীচিন নয়।

ওই সন্ধ‍্যাটা যত নষ্টের মূল
বৈশাখী কোন ঝোড়ো হাওয়া প্রাঙ্গণে
স্বপ্ন বোনার মাকুতে দিয়েছি টান
বোনা হয় নাই আষ্টপৃষ্ঠ রেখা
বুনে গেছি কথা উড়োখই পার্বণ
সরলরেখায় চলে না জীবন গতি
তার মাঝে ভাবি কাউকে আপনজন।

সন্ধ‍্যা প্রদীপ কিছুটা জ্বলতে পারে
সারারাত তার দেয় না আলোক শিখা
সেই সন্ধ‍্যাই দিয়ে গেছে যত ভুল
রাত্রিকে বুকে করেছি প্রিয়ংবদা।

সেই সন্ধ‍্যাকে রেখে জ্বেলেছি আবার মশাল
ওপারে দাঁড়িয়ে কেউ যেন কুন্তলা
সকালের রোদে স্নান করাতে চেয়ে
একাকী দাঁড়িয়ে প্রেয়সী মঞ্জুলিকা।

কবিতায় ধরা থাক

কবিতায় ধরা থাক
সমাজচিত্র অথবা জীবন।
সম্পর্ক এড়িয়ে কবি যদি বাঁচে
জীবন স্থবির হয় অথবা সমাজ।
সমাজের বাইরে কোটিপতি
ভিখারী দেহপসারিণী
কিংবা কবিও নয়।

কবিতায় ধরা থাক এইসব
জীবনপ্রবাহ যেমন চূর্ণী
বয়ে যায় শীর্ণকায়া হয়েও।
কবির কলম কেঁদে উঠুক
সুমির মায়ের বুক চিরে
ফিনকি দিয়ে রক্তের কোলাজে।
কেঁদে উঠুক ফ্ল‍্যাট বাড়ির অন্দরে
রায়গিন্নির হাহাকারে
বৃদ্ধ পিতার সন্তানের হাতে মার খাওয়ার গল্পে
কবিতা গল্প লিখুক
ধর্ম যাদের বন্ধুত্ব ভাঙতে পারেনি
ইকবাল সুতপার প্রেম
ঠাকুরমশায়ের বুকে
লতিফচাচার জড়িয়ে ধরার কাহিনী
কিংবা রেজিনার প্রেমে মগ্ন ব্রাহ্মণ যুবক।
কবিতায় ধরা থাক
সমাজচিত্র অথবা জীবন।

তুমি কবিতা হয়ে ওঠো

তোমার উন্মুক্ত বুকে ধ্রুপদী নৃত‍্য
মন কেমন করা রবীন্দ্রসঙ্গীত
বর্ষার ভৈরবী রাগে
কবিতা হয়ে ওঠে।

বিরল ভালবাসায় বন্ধুত্ব
মোড়া থাকে নিয়ত যাপনে।
কন্ঠে ঝরে সাবলীল রেশমী পরশমাখা
আমার কবিতা।

মনের কানাচে বুঝি
কিশোরীর তীর্যক ফলকে

গোলাপ ফুটে ওঠে।
মায়াবী চোখে প্রেমের মৃদুলা
ভালবাসায় মোহিত হয়
কবির কলম।

তুমি কী কবিতা হয়ে ওঠো এই
বৃষ্টির সকালে!!!

নূপুর

আবার তোমার কাছে যেতে চেয়ে
হেঁটে যাই বহু বহু দূর
সমস্ত মনের কথা বলে যেতে চাই
ময়ূরীর ঠোঁটের পরশে
শীলাবতী নদী ফেলে নূপুর সোহাগে
ক্লান্তি যত দূর করি মনের কোলাজে।

চুলে তার লেগে থাকে ভালবাসা
লেগে থাকে মনের যত প্রেম
বার বার জেগে থাকি হৃদয়ের করুণ ডাকে
যেমন চড়ুই তার সঙ্গিনীকে আদর মাখায়।

একটু শান্তির খোঁজে যতদূর
বেলপাহাড়ির বনের ভিতর
পৃথিবীর সব সুখ যত মায়া বুকে নিয়ে
অপেক্ষায় বসে থাকে নূপুর মাহাতা।

বাংলা আমার

বাংলা এমন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে গায়
জন্ম থেকে কৈশোর ছেড়ে জীবনের সন্ধ্যায়
বাংলা আমার হৃদয়ের কাছে সরস্বতী নদী
নিয়ত যাপন বাংলার বুকে ব্রাত্য করেছ যদি।

বাংলা আমার রক্তের কণা জননীর ক্রোড়স্নেহ
মৃত্যুর মুখে বাংলার জল একফোঁটা মুখে দিও
আমার বোনের মৃত্যুর পরে বাংলায় কেঁদেছিল
আত্মীয় যারা অনাত্মীয় বাংলার ফুল দিল।

বাংলা আমার স্বর্গ চেতনা কিংবা আল্লা ধাম
কিশোর কিশোরী প্রেমের অনলে বাংলায় বদনাম
বাংলায় কথা বাংলায় গান কিংবা কবিতা লিখি
বাংলা আমার জননী এবং জীবনের স্বরলিপি।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!