কবি আব্দুস সাত্তার বিশ্বাস এর ছ’টি কবিতা

আব্দুস সাত্তার বিশ্বাস
আব্দুস সাত্তার বিশ্বাস
2 মিনিটে পড়ুন
সাময়িকী আর্কাইভ

এখনও কিছু মানুষ

গুহাবাসী মানুষের মতো
এখনও কিছু মানুষ
অন্ধকারে পড়ে রয়েছে—
তারা সূর্যের আলোটুকু ছাড়া কোনো আলো পায়নি,
কেউ দেয়নি।
নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য
অন্ধকারে রেখেছে।
যারা রেখেছে, রাখুক;
আসুন, আমরা পাশে দাঁড়াই,
আলো দিই!

কাগজ কুড়ানো লোক

আমি কাগজ কুড়িয়ে খাই
আমি কাগজ কুড়ানো লোক
ঘাড়ে আমার বস্তা আকারের একটা প্লাস্টিক ঝুলানো থাকে
যত কাগজ আমি ওর মধ্যে ভরে রাখি।

সারাদিন কাগজ কুড়িয়ে দিনের শেষে যা হয়
তা বেচে চাল, ডাল কিনে ঘরে ফিরি

আমার ছোট ছোট বাচ্চারা না খেয়ে
পথ চেয়ে বসে থাকে
আমার ফেরার পর তারা খেয়ে ঘুমায়;

আমাকে তোমরা ঘৃণা করো, নোংরা বলো,
প্রয়োজনে মারো;
কিন্তু আমার বাচ্চাদের তোমরা অভিশাপ দিওনা
আশীর্বাদ করো, তারা যেন—

আমার যত সংগ্রাম তাদের জন্যই!

পার্থক্য করাটা ঠিক নয়

গল্প, উপন্যাস আর কবিতা
এসবই হল আমার সন্তান;
না ঘুমিয়ে কত রাত জেগে
আমি তাদের জন্ম দিয়েছি।
কতবার ভাবনা চিন্তা মাথা খাটানো।
বাতায়ন খুলে আকাশের দিকে নিষ্পলক চেয়ে থাকা,
প্রিয়তমার সময় চুরি করে
খাতা কলমের সাথে সহবাস…

এসব সন্তানের জন্ম যে এভাবেই দিতে হয়
অন্য ভাবে জন্ম দেওয়া হয়না
যেমন ভাবে রাতের অন্ধকারে—

গল্প, উপন্যাস আমার ছেলে
ছেলের জন্ম আমি প্রথমেই দিয়েছি
তারপর কবিতা হল আমার মেয়ে
মেয়ের জন্ম এখন দিচ্ছি;
দিতে গিয়ে দেখছি,
আমরা ছেলে মেয়ের মধ্যে যে পার্থক্যটা করি
সেটা ঠিক নয়, অবৈধ;
দুটোই সমান প্রয়োজন, দুটোরই সমান কদর;
কেউ কারও থেকে ছোট বা বড় নয়।

দ্বিখণ্ডিত শরীর একটি চাকরির আবেদন জানাচ্ছে

রেললাইনে মাথা দিয়ে মুক্তিকামী মিলন
আমার বন্ধু;
চাকরির পরীক্ষায় বসে বসে
বয়স পার;

সুতরাং কী হবে আর বোঝা বয়ে ডিগ্রির?
কী কাজে লাগবে ওসব?
তার চেয়ে যদি ওগুলো…
মনের জ্বালা জুড়াবে।

অত:পর একদিন সব জ্বালিয়ে দিয়ে
হাঁটতে হাঁটতে চলে গেল…

দ্বিখণ্ডিত শরীর এখন রেললাইনে পড়ে
একটি চাকরির আবেদন জানাচ্ছে।

সব তোড়া আমি তাকেই দিতাম

তুমি ফুল ভালোবাসো?
আমার কাছে এসো,
পাবে অনেক রকম ফুল
যে ফুল নেবে।

আমি ফুল বিক্রেতা,
বাসি ফুল আমার কাছে থাকেনা
সব টাটকা ফুল
গোলাপ, টগর, রজনীগন্ধা
আরও কত শত।

প্রিয়তমার জন্য তোড়া চাও?
সেসবও পাবে আমার কাছে।
আমার কোন প্রিয়তমা নেই
থাকলে হয়তো পেতে না
সব তোড়া আমি তাকেই দিতাম…

টুপি

আমাদের মাথায় টুপি
পরানো হয়েছে এত সুন্দর ভাবে
যা বলার অপেক্ষা রাখেনা

টুপি পরতে আমাদের ভালো লাগে

কেউ টুপি দিলে
আমরা তা প্রত্যাখ্যান করিনা
ভিতরে কিছু থাক না থাক…

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
১৯৭৭ সালের ১৫ই আগস্ট ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদ জেলার ডোমকল থানার সারাংপুর খাাসপাড়া জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন কবি, গল্পকার এবং ঔপন্যাসিক। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের বহু পত্র পত্রিকায় তিনি লেখালিখি করেন। তার মধ্যে আনন্দবাজার পত্রিকা, তথ্যকেন্দ্র পত্রিকা, সৃজন সাহিত্য পত্র 'প্রয়াস', আলো সাহিত্য পত্রিকা, বোধন সাহিত্য পত্রিকা, দুর্বার নিউজ, জিরোবাউন্ডারি কবিতা পত্রিকা ও আরও অনেক পত্র পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হয়েছে এবং হচ্ছে। প্রিয় নেশা গাছ লাগানো ও বই পড়া।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!