জ্বালানি সংকটে, ফের স্কুল বন্ধ করল শ্রীলঙ্কা

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন

ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা। একইসঙ্গে চলছে জ্বালানি সংকটও। অভূতপূর্ব এই সংকটের মধ্যেই আবারও দেশজুড়ে সকল স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি। মূলত এক সপ্তাহের জন্য স্কুলে ছুটি ঘোষণা করেছে দেশটি।

সোমবার (৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই। এতে বলা হয়েছে, অভূতপূর্ব জ্বালানি সংকটের মধ্যেই দেশের সকল সরকারি ও রাষ্ট্র-অনুমোদিত বেসরকারি স্কুলে এক সপ্তাহ ছুটি ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা। ৪ জুলাই থেকেই এই ছুটি শুরু হয়েছে।

গত কয়েক মাস ধরেই চরম আর্থিক সংকটের মুখে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। করোনা মহামারির মধ্যে পর্যটন শিল্প মুখ থুবড়ে পড়ায় এবং বিদেশি ঋণের চাপে দেউলিয়া হয়ে গেছে প্রতিবেশী এই দেশটি। সংকট কাটাতে একাধিকবার জ্বালানি ও আর্থিক সাহায্য করা হলেও কিছুতেই তা কাটিয়ে উঠতে পারছে না শ্রীলঙ্কা।

ফলে চরম আর্থিক ও জ্বালানি সংকটে প্রভাবিত হচ্ছে সাধারণ মানুষের জনজীবনও। কর্মীদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার পর এবার বন্ধ করা হলো স্কুল। সোমবার থেকেই এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে শ্রীলঙ্কার সকল সরকারি-বেসরকারি স্কুল। এর আগে গত ১৮ জুন একইভাবে এক সপ্তাহের জন্য স্কুলে ছুটি ঘোষণা করেছিল শ্রীলঙ্কা সরকার।

দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর জানিয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ না থাকার কারণেই কলম্বো ও অন্যান্য শহরের সকল সরকারি ও বেসরকারি স্কুল আগামী এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

শ্রীলঙ্কার শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, সিলেবাসে যে ঘাটতি তৈরি হবে,আগামী ছুটির দিনে তা পূরণ হয়ে যাবে।

শ্রীলঙ্কার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব নিহাল রানাসিংহে স্কুলগুলোকে অনলাইন ক্লাস পরিচালনা করতে অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেছেন, পরিবহন সমস্যাগুলো শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অধ্যক্ষদের প্রভাবিত না করলে চলমান পরিস্থিতিতে বিভাগীয় পর্যায়ের স্কুলগুলোকে কম সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস পরিচালনা করার অনুমতি দেওয়া হবে।

ডেইলি মিরর জানিয়েছে, অনলাইন পাঠদানের সুবিধার্থে সপ্তাহের কর্মদিবসগুলোতে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ না করার বিষয়ে শ্রীলঙ্কার পাবলিক ইউটিলিটি কমিশন (পিইউসিএসএল) সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা সচিব নিহাল রানাসিংহে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, এর আগে গত মার্চ মাসে কাগজ সংকটের কারণে বাতিল করা হয়েছিল পরীক্ষা, এবার বন্ধ হলো স্কুল। শিক্ষা ব্যবস্থায় চলমান সংকটের প্রভাবটা বেশ স্পষ্ট। আর্থিক সংকট, জ্বালানি সংকট সামাল দিতে কার্যত হিমশিম খাচ্ছে শ্রীলঙ্কান সরকার। বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে একের পর এক পরিষেবা।

উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর এবারই সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। করোনা মহামারি, জাতীয় অর্থনীতি পরিচালনায় সরকারের অদক্ষতা, বিশ্বজুড়ে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগারে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ তলানিতে নেমে যাওয়ায় শ্রীলঙ্কায় বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

জ্বালানি, খাবার এবং ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর আমদানি মূল্য পরিশোধ করতে পারছে না শ্রীলঙ্কা। ডিজেলের সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়ায় প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো। ফলে গত কয়েক মাস ধরে সেখানে দিনের বেশিরভাগ সময়ই বিদ্যুৎ থাকছে না।

বর্তমানে শ্রীলঙ্কার জ্বালানি তেলের পাম্পে সেনা প্রহরা বসানো হয়েছে। যারা জ্বালানি কিনতে আসছেন, সেনা সদস্যদের কাছ থেকে টোকেন নিয়ে পাম্পের সামনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাদের। পাম্পে তেলের সরবরাহ এলে তবেই পেট্রল, ডিজেল কিনতে পারছেন তারা।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!