সালিশে বসে ধর্ষণের ভিডিও দেখলেন সবাই, আত্মহত্যা করলেন তরুণী

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন
প্রতীকি ছবি

নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণের শিকার এক তরুণীকে জোরপূর্বক সালিশে বসিয়ে ধর্ষণের ভিডিও প্রদর্শন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকির পর ওই তরুণী আত্মহত্যা করেছেন। জেলার বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের বালিয়াগাও গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। সালিশে বসে ধর্ষণের ভিডিও দেখলেন সবাই, বাড়ি ফিরেই আত্মহত্যা করলেন তরুণী।

সোমবার (৬ জুন) দুপুরে নিজ বাসা থেকে তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনা ও ধর্ষণের ভিডিও ভাইরালের হুমকির অভিযোগে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দর থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা। ওই মামলায় স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মোমেন কচিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবার, স্থানীয় লোকজন ও থানা পুলিশ জানিয়েছে, গত ২২ মে সকালে ধর্ষণের শিকার হন বালিয়াগাঁও এলাকার ২২ বছরের তরুণী। এ ঘটনায় স্থানীয় সালিশে বিচার না পেয়ে ২ জুন থানায় মামলা করেন তরুণীর মা। মামলার পর আসামিপক্ষের লোকজন বাদীপক্ষকে জোরপূর্বক পুনরায় সালিশে বসান। পরে ৫ জুন রাত সাড়ে আটটার দিকে বালিয়াগাঁওয়ের জনৈক শহীদুল্লাহর বাড়িতে বসা সালিশে কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের এক নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল মোমেন কচিও উপস্থিত ছিলেন। সালিশ চলাকালীন ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত নুরুল আমিনের স্ত্রী শ্যামলী বেগম ও ভাগনে স্থানীয় মসজিদের ইমাম মো. ইব্রাহিম ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলের মাধ্যমে সালিশে উপস্থিত লোকজনকে দেখান। একই সঙ্গে তারা ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকিও দেন।

এ অপমান সহ্য করতে না পেরে ভুক্তভোগী তরুণী তার মাকে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ঘটনাস্থল থেকে বাড়িতে চলে যান। পরে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। সোমবার সকালে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান পরিবারের লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

নিহত তরুণীর মা বলেন, তিনি গৃহকর্মী হিসেবে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে কাজ করেন। তার স্বামী একজন দিনমজুর। মামলা করার পর থেকেই আসামিপক্ষ তাদের নানা হুমকি দিয়ে আসছে। পরে গত রাতে জোর করে সালিশে বসানো হয়। সালিশে উপস্থিত সবাইকে ধর্ষণের ভিডিও দেখানো এবং ফেসবুকে ভাইরালের অপমান সইতে না পেরে মেয়েটা আত্মহত্যা করলো। এ ঘটনার বিচার দাবি করেন তরুণীর মা।

এ বিষয়ে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ভুক্তভোগী তরুণী গত ২ জুন ধর্ষণের মামলাটি দায়ের করেন। তবে এর আগেই অভিযুক্ত আসামি দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে যায়। মামলার পর আসামিপক্ষের চাপে বাদীপক্ষ সালিশে যান। সেই সালিশে ধর্ষণের ভিডিও সবা সামনে প্রদর্শন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে ভুক্তভোগী পরিবার। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। তদন্তের পর যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এ ঘটনায় গ্রেফতার অভিযুক্ত ইউপি সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!