ঢাকায় বায়ুদূষণে শীর্ষে শাহবাগ, শব্দদূষণে গুলশান

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন

রাজধানী ঢাকায় বায়ুদূষণে শীর্ষে রয়েছে শাহবাগ এলাকা আর শব্দদূষণে শীর্ষে রয়েছে গুলশান-২ এলাকা। রোববার (২৯ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)।

ইউএইডের অর্থায়নে ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ এবং বেসরকারি স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে এ গবেষণা করা হয়। এ কার্যক্রমের আওতায় ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এক বছরে রাজধানীর আহসান মঞ্জিল, আবদুল্লাহপুর, মতিঝিল, শাহবাগ, ধানমন্ডি-৩২, সংসদ এলাকা, তেজগাঁও, আগারগাঁও, মিরপুর-১০ এবং গুলশান-২-এর বায়ু ও শব্দ মানের তথ্য-উপাত্ত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ক্যাপসের চেয়ারম্যান ও স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ঢাকা শহরের ১০টি স্থানের বায়ুমান সূচক অনুযায়ী অবস্থা ‘অস্বাস্থ্যকর’। এসব স্থানে বস্তুকণা ২.৫ পিএম গড় বার্ষিক উপস্থিতি প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে ৭৭ মাইক্রোগ্রাম, যা আদর্শমানের (১৫ মাইক্রোগ্রাম) চেয়ে ৫.১ গুণ বেশি। এছাড়া বস্তুকণা পিএম ১০ এর গড় বার্ষিক উপস্থিতি প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে ১০৫ মাইক্রোগ্রাম, যা বার্ষিক আদর্শমানের (৫০ মাইক্রোগ্রাম) চেয়ে গড়ে ২.১ গুণ বেশি।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১০টি স্থানের মধ্যে সর্বোচ্চ বায়ুদূষণ শাহবাগ এলাকায়, সেখানে পিএম ২.৫-এর গড় উপস্থিতি প্রতি ঘনমিটারে ৮৫ মাইক্রোগ্রাম। অর্থাৎ আদর্শমান থেকে ৫.৬ গুণ বেশি এবং সর্বনিম্ন বায়ুদূষণ জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায়, পিএম ২.৫-এর গড় উপস্থিতি প্রতি ঘনমিটারে ৭০ গ্রাম। অর্থাৎ আদর্শমান থেকে ৪.৬ গুণ বেশি।

শব্দদূষণের বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা শহরের ১০টি এলাকার মধ্যে গুলশান-২ এলাকায় শব্দের সর্বোচ্চ মান এলইকিউ ৯৫.৪৪ ডেসিবল, যা মিশ্র এলাকার জন্য দিনের বেলার জাতীয় আদর্শমান (৫৫ ডেসিবল) থেকে ১.৭ গুণ বেশি। এরপরের অবস্থান আবদুল্লাহপুরে, ৯৫.৪৩ ডেসিবল, যা জাতীয় আদর্শমানের (৬০ ডেসিবল) থেকে ১.৬ গুণ বেশি। অন্যদিকে তেজগাঁও এলাকার সর্বনিম্ন এলইকিউ মান ছিল ৮৯ ডেসিবল, যা জাতীয় আদর্শমান (৭৫) থেকে ১.১ গুণ বেশি। গবেষণার আওতার মধ্যে সর্বাধিক ১৩২ ডেসিবল শব্দ রেকর্ড করা হয়েছে গুলশান-২ এলাকায় এবং সর্বনিম্ন শব্দ রেকর্ড হয়েছে সংসদ এলাকায় ৩১.৭ ডেসিবল।

১০টি স্থানের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, নীরব এলাকায় ৯৬.৭ শতাংশ সময় আদর্শমান (৫০ ডেসিবল) অতিক্রম করেছে, আবাসিক এলাকায় ৯১.২ শতাংশ সময় আদর্শমান (৫৫ ডেসিবল), মিশ্র এলাকায় ৮৩.২ শতাংশ সময় আদর্শমান (৬০ ডেসিবল), বাণিজ্যিক এলাকায় ৬১ শতাংশ সময় আদর্শমান (৭০ ডেসিবল) এবং শিল্প এলাকায় ১৮.২ শতাংশ আদর্শমান (৭৫ ডেসিবল) অতিক্রম করেছে। পুরো ঢাকা শহরের মিশ্র এলাকার সঙ্গে তুলনা করলে ১০টি স্থানেই ৮২ শতাংশ সময় ৬০ ডেসিবলের ওপরে শব্দ পাওয়া গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে শব্দ ও বায়ুদূষণ রোধে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র থেকে দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো— বায়ুদূষণ রোধে ঢাকা শহরের সব নির্মাণ প্রকল্পে নির্মাণবিধি মেনে সুষ্ঠু বাস্তবায়ন ও নিয়মিত তদারকি নিশ্চিত করতে হবে; বায়ুদূষণ রোধে হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা এবং অমান্যকারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে; খসড়া নিৰ্মল বায়ু আইন ২০১৯ অধিকতর সুস্পষ্ট করে চূড়ান্ত করা এবং তা যথাসম্ভব বাস্তবায়ন করতে হবে; শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৮-এ এর সংজ্ঞা অনুযায়ী চিহ্নিত জোনসমূহে (নীরব, আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প ও মিশ্র) সাইনপোস্ট উপস্থাপন করে জনসাধারণকে সচেতন করতে হবে; প্রয়োজন ছাড়া হর্ন বাজানো থেকে বিরত থাকাতে হবে; সন্ধ্যার পর উচ্চস্বরে গান না বাজানো এবং সন্ধ্যার পর নির্মাণ কাজ না করা; পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক বাজেট বরাদ্দ বাড়তে হবে। এছাড়াও বায়ুদূষণের পূর্বাভাস দেওয়ার প্রচলন করতে হবে এবং পরিবেশ বিসিএস ক্যাডার নিয়োগ করতে হবে; জনস্বাস্থ্য ও স্বার্থ রক্ষায় সরকার ও সচেতন মহলের সমন্বিত অংশীদারিত্বমূলক, বিজ্ঞানভিত্তিক, টেকসই ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!