সামান্য ভুল

আশিস বসু
আশিস বসু
25 মিনিটে পড়ুন

ফিরোজপুর। পাহাড় নদী দিয়ে ঘেরা একটা ছোট্ট গ্রাম ঝিলম নদীর ধারে। এখানে দিন বয়ে যায় শান্ত ভাবে। গ্রামের লোকেরা নদীর ধারে চাষ বাস করে, মাছ ধরে ঝিলমে, ফলের বাগান গড়ে তোলে পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে। এখানকার মানুষেরা খুব শান্তিপ্রিয়। তারা তাদের ফল, চাষ করা ফসল দুরের গঞ্জে বেচে যে পয়সা রোজগার করে তাতে তাদের জীবন চলে সচ্ছন্দে কারন তারা তাদের জমিতে চাষ করে দুর্লভ কিছু আয়ুর্বেদিক গাছ। এই জমি এই ধরনের চাষের উপযুক্ত। এর সঙ্গে সাথ দেয় এখানকার প্রকৃতি। এই খবর তাদের ছিল অজানা। একদিন ভারতের নানা জনপদ, পাহাড়, পর্বতে ঘুরতে ঘুরতে কাশ্মীরের এই গ্রামটা ভাল লেগে যায় ফাদার হিউমের। তিনি এসেছিলেন সুদূর হাঙ্গেরি থেকে। পেশায় ছিলেন একাধারে ডাক্তার ও ভেষজ বিজ্ঞানী। যুবক হিউম মানুষ হয়েছিলেন একটা অনাথ আশ্রমে। সেখানে থাকতে থাকতে এবং নিজের একাকীত্ব অনুভব করতে করতে তাঁর মধ্যেও জেগে ওঠে অনাথ শিশুদের নিয়ে কাজ করার প্রবণতা। এই শিক্ষা তিনি পেয়েছিলেন ফাদার জন স্টুয়ার্ডের কাছ থেকে। ছোট থেকেই হিউম ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী এবং শান্ত প্রকৃতির। তিনি ছিলেন ফাদারের ভীষণ স্নেহভাজন। তিনি শুনেছিলেন যে তাঁর মা একজন মুসলিমকে বিয়ে করে চলে গেছেন ভারতবর্ষের কাশ্মীর বলে একটা রাজ্যে। তাই ছোট থেকেই কাশ্মীর তাকে হাতছানি দিত। ছোট্ট হিউমের ভীষণ রাগ ছিল তার এই বাবার ওপর যে তার মাকে তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। আর মায়ের প্রতি ছিল তার অভিমান। সে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিল যে একবার সে কাশ্মীর যাবেই। সে মুখোমুখি হবে তার মায়ের। তাকে বলতে হবে কিসের টানে তার মা তাকে ফেলে রেখে চলে গেল চার্চে ফাদারের তত্ত্বাবধানে।

আস্তে আস্তে বড় হোল হিউম। সুযোগ পেয়ে গেল ডাক্তারি পড়ার। সেখান থেকে পাশ করে সে যোগ দিল হাসপাতালে। কয়েক বছরের মধ্যে সে হয়ে উঠল একজন বিখ্যাত চিকিৎসক।
ফাদার জন স্টুয়ার্ড চার্চের পাদ্রী হলেও আদতে তিনি ছিলেন একজন ভেষজ বিজ্ঞানী। তাঁর সহচর্যে ছোট থেকেই হিউমকে তিনি শিখিয়ে ছিলেন মনুষ্য দেহে ভেষজ বিজ্ঞানের কারকতা। তাই ডাক্তারির সাথে সে শুরু করল ভেষজ বিজ্ঞান নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা। এই সময় তার পালক পিতা তার হাতে তুলে দিয়েছিল একটা দুর্লভ শাস্ত্র গ্রন্থ ভারতবর্ষের। নাম অথর্ব বেদ। ভারতবর্ষের প্রতি একটা টান তার ছিলই তাই এই দেশটাকে জানতে সে তার দেশের গ্রন্থাগারে পড়তে শুরু করল ভারতবর্ষের প্রাচীন গ্রন্থগুলী। একটা অদ্ভুত টান জেগে উঠল তার মনে এই দেশের প্রতি।

সে মহাভারত পড়ে তার পালক পিতাকে একদিন জিজ্ঞাসা করল তার মা কে তো সে জানে কিন্তু তার পিতা কে? তিনি কোথায়? উত্তরে ফাদার জন তাকে বলছিলেন যে এক দুর্যোগের রাতে তার মা তাকে নিয়ে এই চার্চে আসে। তখন সে পীড়িত ছিল। ফাদার তাকে আর তার মাকে আশ্রয় দিয়ে তাদের সুস্থ করে তোলে। তারপর থেকে তারা এখানেই থাকত। ফাদার তার মাকে বহুবার তার পিতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছে কিন্তু কোন উত্তর পায় নি। তার জন্মের ব্যাপারে সে আস্তে আস্তে নিরুৎসাহ হয়ে পড়ে।
ফাদার জন চার্চের পাদ্রী হলেও তিনি ছিলেন পারিবারিক সুত্রে প্রচুর ধন সম্পত্তির অধিকারী। তাদের ছিল জাহাজ কোম্পানি। দরিয়ার বুকে তাঁদের ছখানা জাহাজ চলত। সেটা দেখাশোনা করত একটা এটর্নি ফার্ম। জন ছিল তাঁদের পরিবারের একমাত্র সন্তান। ছোট থেকেই ধর্ম ভীরু। তাই কুবের সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও এই ব্যাপারে তার মন ছিল না। চার্চকে ঘিরে গড়ে তুলেছিলেন একটা অনাথ আশ্রম। হিউমকে তিনি খুব ভাল ভাবে মানুষ করেছিলেন। অনাথ আশ্রমে থাকলেও তাকে একটু আলাদা রাখতেন জন স্টুয়ার্ড কারন তিনি জানতেন যে এই ছেলেটির মধ্যে আছে প্রচুর সম্ভাবনা। বড় হয়ে হিউম ফাদার জনের সমস্ত সম্পত্তি দেখাশোনা করত এবং নিজেও সে প্রচুর ধন সম্পত্তি বানিয়ে ফেলল অল্প দিনের মধ্যে।
ছোট বেলা থেকে তার মা তাকে পরিত্যাগ করে যাওয়ার জন্য মেয়েদের প্রতি তার একটা তীব্র অনীহা। সে কোন মেয়ের সঙ্গে মিশতে চাইত না। কোন পার্টিতে যেত না। একমনে অধ্যয়ন করে যেত বিজ্ঞানের ওপর ভারতবর্ষের ইতিহাসের। বিশেষ করে ভেষজ বিজ্ঞান। পরবর্তী কালে তার অধ্যয়নের বিষয় ছিল চিকিৎসা শাস্ত্রে মুসলিম দুনিয়ার প্রভাব। সে দেখেছিল যে ইজিপ্ট থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যে বহু মুসলিম দেশে ভাল ভাল চিকিৎসক এবং শল্যবিদ ভেষজ ঔষধ ব্যবহারের ওপর সফলতা অর্জন করেছেন। একটা ব্যপার সে বুঝতে পারল যে মানুষের শরীরে প্রয়োগকারী সকল ওষুধে আছে ভেষজ উপাদান। তাই সে নিজেকে ব্যস্ত রাখত মানুষের চিকিৎসায়, ভেষজ শাস্ত্র অধ্যয়নে। টাকা পয়সা প্রচুর পরিমানে থাকলেও তার এই ব্যাপারে বিশেষ কোন স্পৃহা ছিল না। সে তাদের এই অনাথ আশ্রমটাকে আরও ভাল ভাবে দেখাশোনা করত। এখানে তার সহযোগী ছিল তার শৈশবের বন্ধু মাইকেল। সে, তার এবং জন স্টুয়ার্ডের সমস্ত সম্পত্তির দায়িত্ব দিয়েছিল, সেই এটর্নি ফার্মের ওপর। তারাই তাদের সম্পত্তি দেকভাল করত। শুধু তাদের নামে প্রতিমাসে ব্যাঙ্কে টাকা জমা হত। হিউম ঘুরে বেড়াত আমাজন থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশ ঔষধের ভেষজ উপাদানের খোঁজে। এইভাবে ঘুরতে ঘুরতে সে পৌঁছাল মধ্য বয়সের কোটায়। এই সময় মৃত্যু শয্যায় শায়িত ফাদার জন তাকে একদিন ডেকে পাঠালেন।
তিনি তাকে একটি বাক্স হাতে দিয়ে বললেন, পুত্র আমার মৃত্যুকাল আসন্ন। আমার মৃত্যুর আগে তোমাকে কথা দিতে হবে যে তুমি আমার এই আশ্রমটি দেখাশোনা করবে আর তোমাকে যে বাক্সটি দিলাম সেটি আমার মৃত্যুর পর খুলে দেখবে। হিউম রাজী হলো। বলল, কিন্তু পিতা আমি তো ভবঘুরের মত জীবনযাপন করি, আমি আপনার চার্চ এবং এই অনাথ আশ্রমটি যদি আমাদের সকলের প্রিয় মাইকেলের হাতে সমর্পণ করি তাহলে কি আপনার আপত্তি থাকবে? আমি যখন এই দেশে থাকবনা তখন মাইকেল এদের দেখবে। টাকাপয়সার কোনও অভাব থাকবে না ।
আমি সব ব্যবস্থা করে দিয়ে যাব। মৃত্যু পথযাত্রী ফাদার জন মৃদু হেঁসে সম্মত হলেন। কয়েকদিন পর তিনি চলে গেলেন ইহলোক ছেড়ে। ব্যাথিত ও সজলচক্ষে ফাদার জনকে সমাধিস্থ করলেন হিউম ও চার্চের সকলে। বাড়ীতে ফিরে হঠাৎ তার বাক্সটির কথা মনে পড়ল। তিনি বাক্সটি খুললেন। দেখলেন বাক্সটিতে রয়েছে একটি ডাইরি। তিনি পড়তে শুরু করলেন। পড়তে পড়তে তার দুচোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়তে লাগল। তাতে লেখা ছিল:
প্রিয় হিউম,
তুমি যখন এই চিঠি পড়বে তখন আমি আর এই পৃথিবীতে থাকব না। আমি তোমার সাথে মিথ্যাচার করেছি। তুমি ছোট বেলা থেকে আমাকে বার বার প্রশ্ন করেছ, তোমার পিতা কে? আজ জানাই, তুমি আমারই পুত্র। তোমার মা জেসিকা আমার বিবাহিতা স্ত্রী। সে ছিল সুন্দরী কিন্তু অনাথ। আমাদের প্রচুর সম্পত্তির লোভে সে আমাকে বিবাহ করে। আমিও তার রূপে মুগ্ধ হয়ে অনাথ হবার সুযোগ নিয়ে তাকে বিবাহ করি। আমাদের দুজনের মধ্যে বয়সের একটা ব্যবধান ছিল। সে চাইত প্রাচুর্যের স্রোতে ভেসে যেতে। তা আমার একদম পছন্দ ছিল না। আমি চাইতাম পৃথিবীতে যারা অসহায় তাদের পাশে দাঁড়াতে। আমাদের এই বিশাল সম্পত্তির বেশ কিছু অংশ তাদের কাজে ব্যয় করতে। এটা তোমার মায়ের একদম পছন্দ ছিল না। তোমার জন্মের পর আমার পিতার মৃত্যু ঘটে। আমি এই সম্পত্তির ভোগ দখলের একমাত্র অধিকারী ছিলাম তাই সে আমার কাছ থেকে প্রভুত অর্থ দাবী করে। তার অসংযমী জীবন যাপন আমার একদম পছন্দ ছিলনা, তাই তার সাথে আমার দ্বন্দ্ব শুরু হয় তোমার জন্মাবার কিছুদিন পর থেকেই। তবুও আমি তাকে প্রচুর অর্থ দেই। আসলে তখন সে পাকিস্থানের একজন নাগরিকের প্রেমে ছিল মগ্ন। তার নাম ছিল সেলিম। সেলিম আমাদের দেশে এসেছিল স্থপতি হিসাবে। তার স্থাপত্য কীর্তি ছিল অসাধারণ। সেলিম তাকে বুঝিয়েছিল যে সে ভূস্বর্গে বাস করে। সে একটা জায়গার খোঁজ রাখে যেখানে সে একটা ছোট কেল্লা বানাতে চায়। যদি জেসিকা তাকে একটু সাহায্য করে তাহলে সে ওই কেল্লাটা বানিয়ে দুজনে মিলে সুখে বাস করবে। এই ব্যাপারটা আমি জানতাম না। আমার কাছ থেকে অর্থ পাবার পর সে সেলিমের সাহায্যে একটা ছোট একটা কেল্লা বানায় ভারতবর্ষের কাশ্মীর রাজ্যের ফিরোজপুর নামে একটা গ্রামে। সেটা ভারতবর্ষ আর পাকিস্থানের বর্ডারে ঝিলম নদীর ধারে।

এইসব আমি পরে জানতে পারি তার লেখা চিঠিতে। তার চিঠিগুলো তুমি পাবে এই বাক্সে। একদিন সে আমার বন্ধন ছিন্ন করে তোমাকে ফেলে পালিয়ে যায় সেলিমের সাথে। তুমি তখন বছর দুয়েকের। আমি ভগ্ন হৃদয়ে তোমাকে বুকে জড়িয়ে ধরি। তখন এই চার্চের ধর্মযাজক ছিলেন নিকোলাস পেরেরা। আমার বাবার বিশেষ বন্ধু। তিনি আমার সব ঘটনা শুনে আমাকে বলেন তাঁর সাথে এই চার্চে এসে বসবাস করতে বলেন কারন এই চার্চ তিনি বানিয়েছিলেন আমার বাবার টাকায় এবং তিনি এখানে অনাথ শিশুদের মানুষের মত মানুষ গড়ার সংকল্পে রত। তাঁর তৈরি অনেক অনাথ আজ দেশের বিভিন্ন শহরে সুনামের সাথে প্রতিষ্ঠিত। তিনি আমাকে তাঁর কাজের শরিক হবার জন্য অনুরোধ করেন। আমি তখন ভগ্নপ্রায় একটা মানুষ কারন আমি জেসিকাকে প্রচণ্ড ভালবাসতাম। আমি তাঁর কথায় রাজী হয়ে তাঁরই হাতে গড়া এটর্নি জোন্স এর হাতে আমাদের ব্যবসা আর সম্পত্তির সব ভার দিয়ে চলে আসি এই চার্চে। আমার পরিচর্যায় তুমি মানুষ হতে থাক। একটা ব্যাপার দেখে আমি অবাক হয়ে যেতাম যে তুমি তোমার মায়ের চরিত্র পাওনি বরং আমার চরিত্র পেয়েছ। তোমার মেধার সাথে সাথে তুমি মানুষকে মানুষ হিসাবে দেখার, অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর মানসিকতা অর্জন করেছে। আমি সত্যি গর্বিত তোমাকে পুত্র হিসাবে পেয়ে।
কিছুদিন আগে আমি জেসিকার কাছ থেকে একটি চিঠি পাই। সেই চিঠিতে সে তার সমস্ত অপরাধ স্বীকার করে বারবার তাকে ক্ষমা করতে বলেছে। সে আমাকে ফেলে গিয়ে সুখী হয়নি। যৌবনের তাড়নায় সে তোমাকে ফেলে পালিয়েছিল কিন্তু সেখানে গিয়ে সে বুঝতে পেরেছে সেখানকার মানুষদের জীবনযাত্রা আমাদের মত নয়। সেলিমের সেখানে আরও একটি পরিবার আছে। হ্যাঁ, সে ফিরোজপুরে একটি ছোট মাপের কেল্লার মত দেখতে একটা বাড়ী করেছে কারন ভারতবর্ষে তার একটা জায়গার প্রয়োজন ছিল। পাকিস্থানে তার বাড়ী আছে। সেখানে সে এবং আর পরিবার বসবাস করে। ভারতবর্ষের বাড়িটি সে জেসিকা মালিকের নামে বানিয়েছে। জেসিকা সেখানে বসবাস করে। এই বাড়িটি সে তোমার নামে দানপত্র করে দিয়েছে। সে লিখেছে যে মৃত্যুর পর তার আত্মা শান্তি পাবে যদি তুমি তার এই দান গ্রহন কর। পুত্রের কাছে এটাই তার ক্ষমা প্রার্থনা। দানপত্রটি তুমি আমার আলমারীতে পাবে। পারলে তোমার মাকে ক্ষমা কোর।
আমার সমস্ত সম্পত্তি, ব্যবসা আমি তোমার নামে করে দিয়েছি। যথাসময়ে জোন্স তোমাকে জানাবে। আশাকরি, তুমি আমার এই মিথ্যাচারকে ক্ষমা করবে।
ইতি
তোমার হতভাগ্য পিতা জন

হিউম আস্তে আস্তে গিয়ে আলমারী থেকে তার মায়ের দানপত্রটি বার করল। দেখল, সেখানে তার নামে সমস্ত কিছু লেখা আছে এবং সেই জায়গার কেল্লার ম্যাপ পর্যন্ত রাখা আছে। আর কিছু ছবি দেওয়া আছে সেই অঞ্চলের ও কেল্লার। একবার সে ভাবল সমস্ত কিছু ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলতে কিন্ত তার পরিণত মন তাকে এটা করতে দিল না। সে এটাকে আবার সেই জায়গায় রেখে দিল। একদিন জোন্স এল তার কাছে তার সম্পত্তি বুঝিয়ে দিতে। সে বলল, সেগুলো যেমন চলছে চলুক। তার হাতে সে এই দানপত্রটা অর্পণ করল যত্ন করে রেখে দেবার জন্য। তার আগে সে দানপত্রটির একটা কপি বানিয়ে নিজের কাছে রাখল।

কিছুদিন বাদে হিউমকে দেখা গেল বিমানে চড়ে জম্মুতে নামতে। সেখানে সে একটা হোটেলে একটা ঘর নিয়ে কিছুদিন সেখানে বিশ্রাম করে চারদিকের খোঁজ খবর নিয়ে রওনা দিন কাশ্মীরের পথে। গিয়ে দেখল সত্যি অপূর্ব জায়গা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। একদিন সে একটা গাইডের সাহায্যে সে পৌঁছল ফিরোজপুর। পাহাড় ঘেরা ঝিলম নদীর পাড়ে। জায়গা সুন্দর হলেও সেটা একটা অজপাড়া গ্রাম। এখানে থাকাটাই বেশ শক্ত। পয়সার বিনিময়ে সে একটা ভালো বাড়ী জোগাড় করে ফেলল। সেখানে সে তার গাইডকে পরিচয় দিল সে এসেছে ভেষজ গাছ-গাছড়ার সন্ধানে। সে সবাইকে বলল, এখানে ভেষজ কিছু গাছ চাষ করলে এই গ্রামের মানুষের কোন দুঃখ থাকবে না। সকলে অবাক হয়ে তার কথা শুনে। এইবার সে খোঁজ নিল সেখানকার ছোট কেল্লাটির ব্যপারে। কেল্লাটি ছিল একদম পাহাড়ের ওপরে। সেখান থেকে পুরো গ্রাম, ঝিলম নদী এমনকি ঝিলমের অপর পাড়ে পাকিস্থানের গ্রামগুলু স্পষ্ট দেখা যায়।

সে শুনল যে ওই বাড়ীর মালিক সেলিম মালিক বলে একজন ছিল। সে ছিল পাকিস্থানের লোক কিন্তু কেল্লার মালকিন ছিল বিদেশী। সেলিম সাহেব মারা গেছেন অনেক বছর আগে। তারপর মালকিন একাই থাকতেন। তাঁকে দেখাশোনা করত আফজল বলে একজন। সঙ্গে ছিল তার পরিবার । কিন্তু কয়েক বছর হলো মালকিন মারা গেছেন। এখন আফজল তার পরিবার নিয়ে সেখানে বসবাস করে। মালকিন তাদের পরিবারকে সেখানে থাকার অনুমতি দিয়ে গেছেন। হিউম বলল, তার খুব বাড়িটি দেখার ইচ্ছে। সে কি একবার বাড়িটি দেখতে পারে? তখন সেই গ্রামের একজন বলল যে সে আফজলের সাথে কথা বলে পরদিন তাকে জানাবে। সেই কথা মত পরদিন সেই গ্রামবাসী তার কাছে একজনকে নিয়ে এল। সে হিউমের গাইডকে বলল যে তার কোনও আপত্তি নেই যদি সাহেব বাড়িটি দেখে। এমনকি সে সাহেবকে সেই বাড়ীতে কিছুদিন থাকতে দিতেও রাজী যদি সাহেব তাকে কিছু টাকা দেয়। টাকার বিনিময়ে আফজল তাদের থাকতে দিল। হিউম দেখল যে আফজল লোকটি খুব সজ্জন। যখন তারা আফজলের সাথে কেল্লায় গেল তখন আফজল তাদের বলল যে সে তাঁর কাছ থেকে টাকা নিত না কিন্তু তার মেয়ে খুব অসুস্থ। ওষুধের জন্য টাকা দরকার। হিউম তার মেয়েটিকে দেখতে চাইল। দেখে বুঝল যে মেয়েটির কিছু ওষুধ আর ভাল পথ্যের দরকার। সে আফজলকে বলল একজন ডাক্তারকে নিয়ে আসতে। আফজল একজন ডাক্তার আনার পর হিউম তার পরিচয় দিয়ে তার সাথে আলোচনা করে অল্প কিছু ওষুধ লিখে দিল। আফজলকে আরও টাকা দিল বিশেষ কিছু ফল কিনে আনার জন্য। সে বলল, দু ঘণ্টা অন্তর অন্তর সে মেয়েকে ফলের রস আর ওষুধ দেবে এবং যতক্ষণ তার মেয়ে না সুস্থ হচ্ছে সে এখানে থাকবে। আফজলকে আরও টাকা দিল তাদের থাকা আর খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য। আফজল তো খুব খুশী। আফজল তাকে বলল তার মালকিন তাকে বলে গিয়েছিল যদি কোনও বিদেশী এখানে থাকতে চায় সে যেন তাকে থাকতে দেয়। সাহবের যতদিন খুশী সাহেব এখানে থাকুন তার কোনও আপত্তি নেই।
এদিকে হিউমের চিকিৎসার খবর রটে গেছে ক্ষুদ্র পাহাড়ি অঞ্চলে। দু-একদিনের মধ্যেই আফজলের মেয়ে উঠে বসল। সকলে খুব খুশী। চারদিক থেকে গ্রামবাসীরা ছুটে এল তার কাছে। তখন একজন গ্রাম প্রধানের কাছে হিউম তার পরিচয় দিয়ে বলল যে এই গ্রাম তার খুব ভাল লেগেছে। সে এই গ্রামে মাঝে মাঝে এসে থাকতে চায়। এই বাড়িটি তার মায়ের। সে তার দানপত্রটি দেখাল। সে আরও বলল, আফজল আর তার পরিবার যেরকম বাড়িটি দেখাশোনা করছে সেইরকমই করবে বিনিময়ে এখন থেকে সে একটা অর্থ পাবে দেখাশোনা করার জন্য। সে যেখানেই থাকুক টাকা এসে যাবে আফজলের নামে ব্যাঙ্কে প্রতিমাসে। আফজল ও গ্রামবাসীরা খুব খুশী। আরও এক দুদিন থেকে সে রওনা দিল তার দেশের পথে। যাবার আগে সকলকে বলে গেল সে শীঘ্রই ফিরে আসবে।
প্লেন ধরার জন্য শ্রীনগরে পৌঁছে সে অসুস্থ হয়ে পড়ল । ভর্তি হোল সেনা হাসপাতালে। সেখানে খানিকটা সুস্থ হলেও ডাক্তার আহুজা তাকে পরামর্শ দিল আরও কিছুদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে। ডাক্তার হিসাবে পরিচয় পেয়ে ডাক্তার আহুজা আর হিউম বন্ধু হয়ে উঠল অচিরেই।

বন্ধু ডাক্তার নলিনী আহুজা তাকে নিয়ে গেল তার বাড়ীতে রেস্টের জন্য। এখানে সে থাকে তার মা আর একটা পরিচারিকাকে সঙ্গে নিয়ে। ডক্টর নলিনীর মমতায় আর ভালবাসায় এক নতুন অধ্যায় সৃষ্টি হলো। সেখানে বেশকিছুদিন কাটানোর পরে হিউম ফিরে গেল তার দেশে কিন্তু তার মধ্যে ঝিলম দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গেছে।
সে আর নলিনী মিলে ঠিক করেছে যে তারা স্বাধীন ভাবে ডাক্তারি করবে। সে ফিরে এসে নলিনিকে বিয়ে করে ভারতবর্ষের নাগরিক হয়ে তাদের চেম্বার খুলবে ফিরোজ পুরের কেল্লা। সেখান থেকে তারা গ্রামের লোকেদের যেমন চিকিৎসা করবে তেমন আবার ভেষজ উপাদানের চাষের পরামর্শ দেবে যাতে অচিরেই সেই গ্রাম আর পাশের গ্রামের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়। সে দেশে গিয়ে খুব দ্রুত সব বন্দোবস্ত করে ফিরে এল নলিনীর কাছে। এরপর তারা বিবাহ বন্ধনে একদিন আবদ্ধ হলো।
বিয়ে করে ভারতের নাগরিক হয়ে তারা রওনা দিল ফিরোজপুরের পথে। সেখানে তারা উঠল কেল্লায়। সব কিছু ব্যবস্থা করাই ছিল। কিন্তু একটা অসুবিধা দেখা দিল সেখানে। নলিনীকে সেনা বাহিনী ছাড়তে নারাজ কারন তাদের ডাক্তারের ভীষণ অভাব। শেষে ঠিক হলো নলিনী সেনা বাহিনীর ফিরোজপুরের নিকটবর্তী ক্যাম্পে চিকিৎসা করবে। এই ভাবেই কেটে গেল কয়েকটা বছর। একদিন একটা দুর্ঘটনায় আহত হলো নলিনী। চিকিৎসায় সেরে উঠলেও চিরকালের মত মাতৃত্ব থকে বঞ্চিত হলো সে। একটা হতাশা জন্মাল দুজনেরই কিন্তু ভালবাসা তাতে কমল না। তারা আরও জড়িয়ে পড়ল সামাজিক কর্মকাণ্ডে। এদিকে ইউমের পরামর্শ ও টাকায় সেখানকার জমিতে চাষ হতে শুরু হলো ভেষজ চাষ, উন্নতি হতে লাগল পাশাপাশি গ্রাম গুলোর। আর্থিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটল গ্রামের মানুষের। তারা হয়ে উঠল গ্রামের মানুষের নয়নের মনি।

হিউম নলিনীর সাথে পরামর্শ করে একটা ছোট অনাথ আশ্রমের কাজ শুরু করল। সেনাবাহিনীর হাতে থাকা পাঁচটি পনের- ষোল বছরের মেয়েকে নিয়ে এল নলিনী ও হিউমের কাছে, যারা জঙ্গিদের হাতে লাঞ্ছিতা। তাদের বাবা মাকে জঙ্গিরা মেরে ফেলেছে। তারা খুব অসহায়। ইউম, নলিনী আর আফজলদের সহচর্য পেয়ে তারা আস্তে আস্তে তাদের আগের জীবন ফিরে পেতে শুরু করল। ইউম আর নলিনী রোগীদের সেবার কাজে দিনরাত শ্রম দিয়ে যাচ্ছে। এরাও মন দিয়ে কাজ শিখতে লাগল।

চিরদিন একরকম থাকে না তাই ফিরোজপুরের আকাশেও দেখা দিল মেঘের আভাস। আগে এটা পাকিস্তানী জঙ্গিরা ভারতে এই রাস্তা দিয়ে ঢুকত না। তারা অন্য রাস্তা ব্যবহার করত। কিন্তু অন্য রাস্তাগুলোতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কড়া নজর থাকার জন্য তারা এই রাস্তা ব্যবহার শুরু করল। বিপদে পড়ে গেল নিরীহ গ্রামবাসীরা। ভারতীয় সেনা মোতায়েন হলো এই গ্রামে। বর্তমানে বেশ স্বচ্ছল গ্রামবাসীদের কপালে পড়ল চিন্তার ভাঁজ। সেইসঙ্গে হিউমও বেশ চিন্তিত।
সাধারণত বর্ষার সময় সেনা ক্যাম্প এখান থেকে উঠে অনেক দূরে চলে যায় কারন পাহাড়ে ভীষণ ধ্বস নামে। এবারও তাই হলো। তার ওপর প্রচণ্ড বৃষ্টির জলে ঝিলম কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ফুঁসে উঠেছে। প্রতিদিনের মত একদিন সকালে হিউম কেল্লার ছাদ থেকে তার বাইনাকুলারে চারপাশটা যখন দেখছিল তখন দেখল ঝিলমের ওপারে পাকিস্তানের অংশে একটা বড় সেনা ছাউনি। প্রচুর জঙ্গি সেখানে জড় হয়েছে। ঝিলমের ওপর দিয়ে ভারতে ঢোকার তোরজোড় করছে। ইউম বুঝল তারা এপারে এসেই আগে দখল করবে কেল্লাটি কারন কেল্লা দখল করে নিতে পারলেই তারা এখানে তাদের সব জঙ্গিদের এখানে রেখে ভারতের আরও ভেতরে ঢুকে পড়তে পারবে। এখন কি করবে হিউম? নলিনীও কাছে নেই। সে রয়েছে দূরে সেনা হাসপাতালে। বৃষ্টিতে কোনও নেটওয়ার্ক কাজ করছে না। চিন্তায় মাথা ভারী হয়ে এল হিউমের।
বসে থাকলে তো চলবে না। সে ডেকে পাঠাল কেল্লার সবাইকে। পাঁচটি মেয়ে, আফজল, তার বৌ, মেয়ে আর বারো বছরের ছেলে এসে দাঁড়াল তার কাছে। সবাইকে বলল আসন্ন বিপদের কথা। মুখ শুকিয়ে গেল সবার। আফজল বলল এখনি গ্রামবাসীদের খবর করা দরকার বলেই সে ছুটে চলে গেল গ্রামের দিকে। আফজলের মেয়ে বলল, আঙ্কেল আমরা যদি ফানুশ উড়িয়ে দেই? কথাটা মনে ধরল হিউমের। ঠিক, এইভাবে তো খবর পাঠান যেতে পারে। ওদের সে কয়েকটা ফানুস বানাতে বলে ঘরে চলে গেল চিঠি লিখতে। ওরা ব্যস্ত উঠলো ফানুস বানাতে।
একটু পরে ইউম চিঠি লেখা শেষ করে আবার ছাদে এল অবস্থাটা দেখার জন্য। দেখল জঙ্গিরা একটা কাঠের ভেলা বানাচ্ছে এই দিকে আসার জন্য। আর ছাদের এক দিকে মহাআনন্দে ঘুড়ি ওড়াচ্ছে আফজলের ছেলে। ঘুড়িটা তার আকাশে মেতে গেছে। ছোট্ট দেখাচ্ছে। দেখে হিউম করুণ হাসি হাসল। শিশু ফয়জল জানেনা মৃত্যুর কি করুণ দিন এগিয়ে আসছে পায়ে পায়ে। রাতে ওরা সবাই জড় হলো ছাদে। যেদিকটায় জঙ্গিরা ডেরা বেঁধেছে তার ঠিক থেকে হাওয়া আসার সাথে ওরা উড়িয়ে দিল ফানুসগুলোকে। ভেতরে লেখা হিউমের চিঠি। ফানুসগুলো ভাসতে ভাসতে চলে গেল। হিউম জানত যে রাতে নদী পার হয়ে ওরা আসবে না তাই সকলকে বলল বিশ্রাম নিতে যেতে। সকাল হতেই আফজল ফিরে এসে জানাল গ্রামবাসীরা খুব ভয় পেয়ে গেছে। তারা জঙ্গিদের কতটা রুখতে পারবে সন্দেহ আছে। তারা অহেতুক মরতে রাজী নয়। হিউম ছাদের উপর থেকে বাইনাকুলার দিয়ে দেখে বলল, জঙ্গিরা ভেলা তৈরি করে ফেলেছে । আজ দুপুরের মধ্যেই তারা এখানে এসে পড়বে। হিউম ফ্রিজের ভেতর রাখা সমস্ত মাংস বার করে রান্না করতে বলল। মরার আগে, দুপুরে তারা সবাই মিলে একসাথে খাবে।

তার কথামত দুপুর বেলায় তারা জড় হলো ছাদে, মাংস আর ভাত নিয়ে।ধিউম বলল, জঙ্গিদের হাতে চরম ভাবে অত্যাচারিত হয়ে মরার আগে তারা সবাই মিলে গান গাইবে আর তার কাছে অনেক পুরানো একটা মদ আছে। সবাই মিলে সেটা পান করবে গানের শেষে। অন্তত নেশাগ্রুস্থ থাকলে অত্যাচার কম হবে। সবাই রাজী হল । খেতে খেতে দেখা গেল জঙ্গিরা দ্রুত কেল্লার দিকে গুলি চালাতে চালাতে ছুটে আসছে। আর গ্রাম বাসীরা সব ভয়ে দৌড়ে পালাচ্ছে। খাবার খাওয়া শেষ হবার সাথে সাথে সবাইকে পানীয় দেওয়া হল। জঙ্গিরা ততক্ষণে কেল্লার দেওয়াল ভাঙ্গার চেষ্টা করছে। হিউম সবাইকে বলল উচ্চস্বরে গান গাইতে। যে গান হিউম ভগবানের কাছে নিবেদনের জন্য সবাইকে শিখিয়েছিল সেই গানটাই গাইতে বলল,
“আও বাচ্চো তুমে শিখায়ে ধরতি হিন্দুস্থান কি
ইস মিটটি কো তিলক করো ভাই, ধরতি হ্যায় বলিদান কি
বন্দে মাতরম! বন্দে মাতরম!
উচ্চস্বরে তারা গাইতে লাগল। হিউম তাদের বলল, দেখ জঙ্গিরা কয়েক মিনিটের মধ্যে আমাদের কাছে এসে পৌঁছাবে। তার আগে তোমরা পানীয় পান কর। সবাই গান গাইতে গাইতে পান করতে লাগল। আস্তে আস্তে সবাই নিস্তেজ হয়ে পড়ে গেল। তখনও হিউমের হাতে ধরা গ্লাস। সে তখনও পর্যন্ত পান করেনি। জঙ্গিদের ছুটে আসতে দেখে সে চিৎকার করে বলল, “এস আমাদের ওপর অত্যাচার করবে এস। আমাদের জীবিত অবস্থায় তোমরা এই কেল্লার দখল নিতে পারবে না।“
জঙ্গিরা ছুটে আসছিল। হিউম হঠাৎ শুনতে পেল প্রচণ্ড রকমের গুলি শব্দ। ছাদ থেকে দেখতে পেল জঙ্গিরা ছুটে পালাচ্ছে। কি হল? আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখল আকাশে উড়ছে হেলিকপ্টার। ভারতীয় সেনাবাহিনী গুলি চালাচ্ছে আর জঙ্গিরা যে যেদিকে পারছে ছুটে পালাচ্ছে। বায়ুসেনার বিমান থেকে সিঁড়ির সাহায্যে প্রচুর সেনা মাটিতে নামছে। “হে ঈশ্বর, এ আমি কি করলাম? ওদের অত্যাচার থেকে বাঁচাবার জন্য নিজে হাতে মদে বিষ মিশিয়ে আমি ওদের খুন করলাম। কেন শেষ অবধি অপেক্ষা করতে পারলাম না। আমি এই মুখ কাউকে দেখাতে পারব না। বিদায় ভারতবর্ষ, বিদায় ভারতবাসী, বিদায় নলিনী।” এই বলে হিউম এক চুমুকে শেষ করে দিল তার গ্লাস। আস্তে আস্তে ঢলে পড়ল চিরনিদ্রার কোলে।

অন্যদিকে সেনাবাহিনীর সাথে ছুটে আসছে নলিনী। তার হাতে একটা ঘুড়ি। একি? কেল্লা ফাঁকা কেন? কোথায় সবাই? কেল্লার ছাতে তখন সেনারা নেমে পড়েছে। একজন ডাকল, “এখানে মনে হয় সবাই আছে ম্যাম।” ছুটে এল নলিনী। সবাই শুয়ে আছে। মুখে পরিতৃপ্তির হাসি। ফয়জলের ঘুড়িটা হাতে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ল নলিনী। তাতে গোটা গোটা অক্ষরে লেখা – “জঙ্গিরা আমাদের কেল্লা দখল করতে আসছে। আমাদের বাঁচাও।”

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
লেখক: আশিস বসু
আশিস বসু, জন্ম ১৯৫৭ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বোড়াল গ্রামে অধুনা ব্রহ্মপুর সাউথ, কোলকাতা। ছোটবেলা থেকেই লেখার ঝোঁক। তিনি একজন কবি, গল্পকার ও ঔপন্যাসিক। ইতিমধ্যে লেখকের তিরিশটি গল্প, চোদ্দটি ‘গঙ্গা তান্ত্রিকের অলৌকিক গল্প’ এবং একটি উপন্যাস ‘পথ কোথায়’ রচনা করেছেন। উপন্যাসটি ইংরাজি ভাষায় ‘নোসন প্রেস’ কর্তৃক প্রকাশিত হয়েছে। তার লিখিত বই আমাজন ও ফ্লিকফার্ট এ পাওয়া যাচ্ছে । এছাড়াও তিনি অসংখ্য কবিতা লিখেছেন।

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!