সবুজ রঙের ভাই-বোন

সিদ্ধার্থ সিংহ
সিদ্ধার্থ সিংহ
3 মিনিটে পড়ুন
ছবি সংগৃহীত।

ইংল্যান্ডের উলপিট এলাকায় হঠাৎই একজোড়া ভাই-বোন এসে উদয় হল। দেখে মনে হল, তাদের বয়স খুব বেশি হলে পনেরো কি ষোলো। তাদের গায়ের রং একদম অস্বাভাবিক রকমের গাঢ় সবুজ। এ রকম সবুজ রং পৃথিবীতে দেখা যায় না।

তাও আবার মানুষের গায়ের রং? অসম্ভব। তা হলে এরা তারা? আরও অবাক করা বিষয় হল, এরা অবিকল মানুষের মতো দেখতে হলেও তাদের চাল-চলন, আচার-আচরণ আর পাঁচ জন মানুষের থেকে একেবারে আলাদা।

সবুজ রঙের ভাই-বোন
সবুজ রঙের ভাই-বোন 40

এই দুই ভাই-বোন যে কোন ভাষায় কথা বলত কে জানে! কেউ বুঝতে পারত না। যে পোশাক তারা পরত, সেই পোশাকও ছিল ভারী অদ্ভুত। আর খাবার? তারা খেত শুধু কাঁচা শিম।
কিছু দিন পরেই ভাইটি মারা যায়। তবে সেই ভাইটির মৃতদেহটাকে কবর বা দাহ করার দরকার হয়নি। মৃত্যুর খানিকক্ষণ পরেই তার দেহটি ছোট হতে হতে একেবারে শূন্যে মিলিয়ে যায়। সে যে পৃথিবীতে এসেছিল, তার সমস্ত প্রমান চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যায়।

বেঁচে থাকে কেবল তার বোন। সেই মেয়েটিকে ধীরে ধীরে ইংরেজি ভাষা শেখানো হয়। সবাই যে খাবার খায়, সেই খাবার খেতেও অভ্যস্ত করা হয়।
সাধারণ লোকের সঙ্গে থাকতে থাকতে তার গায়ের গাঢ় সবুজ রংটাও আস্তে আস্তে ফিকে হতে শুরু করে।

কিন্তু তারা কারা? কোথা থেকে এসেছে? তাদের গায়ের রং এ রকম কেন? উৎসুক হয়ে প্রশ্ন করেছিলেন অনেকেই। তার উত্তরে মেয়েটি বলেছিল, তারা দুই ভাই-বোন সেন্ট মার্টিন্স ল্যান্ড থেকে এসেছে।

— সেন্ট মার্টিন্স ল্যান্ড! এ রকম কোনও দেশের নাম তো আমরা শুনিনি। এটা কোথায়?

সেই মেয়েটি বলেছিল, এটা হল এই পৃথিবীর ভূগর্ভের অনেক নীচে থাকা একটি রাজ্য। যেখানে সবার গায়ের রংই আমাদের মতো গাঢ়‌ সবুজ।

অনেকেই তার কথা বিশ্বাস করেননি। তবু বহু গবেষক এই দুই ভাই-বোনের কথার উপর নির্ভর করে তাদের আগের জীবন সম্বন্ধে অনুসন্ধান চালিয়েছিলেন।

কিন্তু কিছুই খুঁজে পাওয়া যায়নি। শুধু সেই দ্বাদশ শতকেই নয়, তার পরেও বহু বার বহু বিশেষজ্ঞ খোঁজখবর চালিয়েছিলেন। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি, কোনও কিছুই জানা যায়নি।

সবুজ রঙের ভাই-বোন
সবুজ রঙের ভাই-বোন 41

জানা যায়নি, তারা ভুল করে এখানে চলে এলেও, তাদের বাবা-মায়েরা কেন তাদের খুঁজতে খুঁজতে এখানে ছুটে আসেনি! জানা যায়নি, তাদের গায়ের রং কেন এ ভাবে ফিকে হয়ে আসছিল। যদিও কেউ কেউ বলেছেন, এখানকার আবহাওয়ার জন্যই আমার গায়ের রংটা আস্তে আস্তে ফিকে হয়ে গিয়েছিল। জানা যায়নি, তারা এখানে এলেও, যে পথ দিয়ে তারা এসেছিল, সেই পথ দিয়েই তারা কেন ফিরে গেল না! আর সেখানে যাওয়ার যদি কোনও রাস্তা থেকেও থাকে, তা হলে সেটা কোথায়!

এই সব প্রশ্নের কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তাই অনেকেই ওই মেয়েটির কথাকে মনগড়া গল্পগাছা বলে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ ওই দুই ভাই-বোনকে ভিনগ্রহের প্রাণী বলেও মনে করেছেন।

কিন্তু প্রায় মানুষের মতো দেখতে ওই দুই ভাই-বোন কোথা থেকে এসেছিল, কেনই বা এসেছিল, সেই রহস্য, আজও রহস্যই থেকে গেছে। কোনও সমাধান হয়নি।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
২০২০ সালে 'সাহিত্য সম্রাট' উপাধিতে সম্মানিত এবং ২০১২ সালে 'বঙ্গ শিরোমণি' সম্মানে ভূষিত সিদ্ধার্থ সিংহের জন্ম কলকাতায়। আনন্দবাজার পত্রিকার পশ্চিমবঙ্গ শিশু সাহিত্য সংসদ পুরস্কার, স্বর্ণকলম পুরস্কার, সময়ের শব্দ আন্তরিক কলম, শান্তিরত্ন পুরস্কার, কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত পুরস্কার, কাঞ্চন সাহিত্য পুরস্কার, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা লোক সাহিত্য পুরস্কার, প্রসাদ পুরস্কার, সামসুল হক পুরস্কার, সুচিত্রা ভট্টাচার্য স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার, অণু সাহিত্য পুরস্কার, কাস্তেকবি দিনেশ দাস স্মৃতি পুরস্কার, শিলালিপি সাহিত্য পুরস্কার, চেখ সাহিত্য পুরস্কার, মায়া সেন স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার ছাড়াও ছোট-বড় অজস্র পুরস্কার ও সম্মাননা। পেয়েছেন ১৪০৬ সালের 'শ্রেষ্ঠ কবি' এবং ১৪১৮ সালের 'শ্রেষ্ঠ গল্পকার'-এর শিরোপা সহ অসংখ্য পুরস্কার। এছাড়াও আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত তাঁর 'পঞ্চাশটি গল্প' গ্রন্থটির জন্য তাঁর নাম সম্প্রতি 'সৃজনী ভারত সাহিত্য পুরস্কার' প্রাপক হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!