রক্তাক্ত অধ্যায় ২১ আগস্ট

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন

১৫ আগস্টের পর দেশের আরেকটি জঘন্যতম রক্তাক্ত অধ্যায় রচিত হয় ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যা ইতিহাসের এক কলঙ্কিত অধ্যায়।
এ আগস্ট মাসেই আরেকটি রক্তাক্ত ও কলঙ্কিত অধ্যায়ের সৃষ্টি হয় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট।
এ দিন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির সন্ত্রাসবিরোধী শান্তিপূর্ণ সমাবেশে গ্রেনেড হামালা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা করা হয়। এ গ্রেনেড হামলায় প্রধান টার্গেট ছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। ওই ভয়াবহ হামলায় শেখ হাসিনাসহ পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। শনিবার (২১ আগস্ট) সেই ভয়াল ও রক্তাক্ত গ্রেনেড হামলা দিবস।
১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর শেখ হাসিনাকে বহুবার হত্যার চেষ্টায় তার ওপর হামলা চালানো হয়। শেখ হাসিনার ওপর যতবার হামলা হয়, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ছিল সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। এ গ্রেনেড হামলাকারিদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততার তথ্য পরে বেরিয়ে আসে। এ গ্রেনেড হামলায় সেই সময়ের আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নারী নেত্রী আইভি রহমান গুরুতর আহত হন এবং পরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলা এবং তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের নির্যাতন-নিপীড়নের প্রতিবাদে ওই দিন বিকেলে সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশ ও শোভাযাত্রার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশে খোলা ট্রাকের ওপর স্থাপিত উন্মুক্ত মঞ্চে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বক্তৃতা শেষে ৫টা ২২ মিনিটে শেখ হাসিনা সন্ত্রাসবিরোধী শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন, ঠিক সেই মুহূর্তেই বৃষ্টির মতো গ্রেনেড এসে সমাবেশস্থলে পড়তে থাকে। বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে গোটা বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, গুলিস্তান, পুরানা পল্টন ও এর আশপাশের এলাকা। গ্রেনেডের আঘাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ক্ষত-বিক্ষত হন এবং অনেকে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
চারদিক থেকে সভাস্থলে গ্রেনেড এসে পড়তে থাকে। মুহূর্তের মধ্যে সমাবেশস্থল রক্তাক্ত হয়ে পড়ে, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ পরিণত হয় রক্তাক্ত আর মৃত্যুর জনপদে। শত শত মানুষের আর্তচিৎকার, ছড়িয়ে-ছিঁটিয়ে পড়ে থাকা ছিন্নভিন্ন দেহ, রক্ত আর বারুদের পোড়া গন্ধে পুরো এলাকা জুড়ে বীভৎস পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এ সময় সেখানে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ আহতদের সাহায্য করার পরিবর্তে ভীত-সন্ত্রস্ত এবং আহত মানুষের ওপর বেপরোয়া লাঠিচার্জ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।

বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা সেই গ্রেনেড হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের আঘাতে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ও আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন প্রাণ হারান। গ্রেনেড বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দে শেখ হাসিনার কান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গ্রেনেড হামলায় ২৩ জন ঘটনাস্থলেই মারা যান। গুরুতর আহত অবস্থায় আইভি রহমান সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করে ২৪ আগস্ট শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

গ্রেনেড বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাকে রক্ষা করার জন্য ট্রাকের ওপর মানববর্ম রচনা করেছিলেন আওয়ামী লীগের নেতারা। এ হত্যাযজ্ঞ থেকে দলের নেত্রীকে বাঁচাতে নেতাকর্মীরা মানববর্ম দিয়ে আড়াল করে তাকে দ্রুত গাড়িতে তুলে দেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু এভিনিউ থেকে বের হওয়ার পথেই শেখ হাসিনার বুলেট প্রুফ মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়িতেও ঘাতকরা অবিরাম গুলিবর্ষণ করে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!