শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা: ১০ আসামির সবার মৃত্যুদণ্ড বহাল

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
4 মিনিটে পড়ুন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পেতে হত্যাচেষ্টার মামলায় ১০ আসামির সবার মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে।

ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মমতাজ বেগম ২০১৭ সালের অগাস্টে এ মামলার রায়ে ‘হাই কোর্টে বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত নির্ধারিত পদ্ধতিতে গুলি করে’ দশ আসামির দণ্ড কার্যকর করতে বলেছিলেন।

আসামিদের ডেথ রেফারেন্স গ্রহণ এবং আসামিদের আপিল ও জেল আপিল খারিজ করে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ চলতি বছর ১৭ ফেব্রুয়ারি আসামিদের সবার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে।

সোমবার প্রকাশিত ৮৬ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চাইলে যে কোনো পদ্ধতি (ফায়ারিং স্কোয়াডে বা ফাঁসে ঝুলিয়ে) অনুসরণ করে দণ্ডিত ১০ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করতে পারবে।

এর ব্যাখ্যায় উচ্চ আদালত বলেছে, “গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নজির যেহেতু খুব একটা দেখা যায় না, সেক্ষেত্রে আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উভয় পদ্ধতির যে কোনো একটি অনুসরণ করে তা কার্যকর করতে পারে।”

ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৬৮ ধারায় বলা হয়েছে, আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে আমৃত্যু ফাঁসিতে ঝুলিয়ে। আর ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩৪ (ক) ধারায় বলা হয়েছে, এ আইনের অধীনে মৃত্যুদণ্ড হলে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অথবা মৃত্যু পর্যন্ত গুলি চালিয়ে তা কার্যকর করা যাবে।

তবে বাংলাদেশে ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কোনো নজির নেই। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়ে জজ আদালত আসামিদের ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে বললেও হাই কোর্ট তা বদলে দিয়েছিল।

সে প্রসঙ্গ তুলে ধরে কোটালীপাড়ার মামলায় হাই কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে একমাত্র বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় উভয় পদ্ধতির যে কোনো একটি অনুসরণ করার কথা বিচারিক আদালত আদেশ দিয়েছিলেন।

“কিন্তু ফায়ারিং স্কোয়াডে জনগণের উপস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার বিধান ফৌজদারি কার্যবিধি আইনে না থাকায় হাই কোর্ট বিভাগ ওই আদেশ পরিবর্তন করে শুধু দণ্ডিত ব্যক্তির গলায় রশি ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেয়।”

হাই কোর্ট বলেছে, “বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩৪এ ধারায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দু’ধরনের পদ্ধতি থাকলেও বর্তমান মামলায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ পূর্বক দণ্ডিতদের গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেন। এ ধরনের পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নজির যেহেতু খুব একটা দেখা যায় না, সেক্ষেত্রে আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উভয় পদ্ধতির যে কোনো একটি অনুসরণ করে তা কার্যকর করতে পারে।

“সুতরাং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর সম্পর্কিত আদেশ পরিবর্তন করা হলো।”

হাই কোর্টে এ মামলার শুনিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. বশির উল্লাহ। তাদের সঙ্গ ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এ মোহাম্মদ শাহীন মৃধা।

আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও মোহাম্মদ আহাসান, ইমাদুল হক ও নাসির উদ্দিন। আর পলাতক আসামিদের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী অমূল্য কুমার সরকার।

এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ওয়াসিম আক্তার ওরফে তারেক ওরফে মারফত আলী, রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম ওরফে রাশেদুজ্জামান ওরফে শিমন খান, ইউসুফ ওরফে মোসাহাব মোড়ল ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই ও মাওলানা আব্দুর রউফ ওরফে আব্দুর রাজ্জাক ওরফে ওমর।

( সূত্র বিডিনিউজ)

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!