সিদ্ধার্থ সিংহের একগুচ্ছ অণুগল্প

সিদ্ধার্থ সিংহ
সিদ্ধার্থ সিংহ
3 মিনিটে পড়ুন
Photo by Marcos Flores on Pexels.com

প্রেগন্যান্ট

বাজার থেকে ফিরতেই স্বামীকে বড় এক কাপ চা দিয়েই ঘরের একদম কোনায় চলে গেল স্ত্রী। বউয়ের এ রকম আচরণ দেখে স্বামী জিজ্ঞেস করল, কী হল?
স্ত্রী বলল, ভাবছি, তোমাকে একটা কথা বলব… মারবে না তো?
— মারব কেন? বলো…
স্ত্রী ভয়ে ভয়ে আমতা আমতা করে বলল, আমি না… প্রেগন্যান্ট।
— বাহ্, এ তো খুব ভাল কথা।
আশ্বস্ত হয়ে মাটির দিকে তাকিয়ে ধীরে ধীরে স্ত্রী বলল, না, আসলে আমি যখন ইলেভেন-টুয়েলভে পড়তাম, তখন না… তিন-চার বার প্রেগন্যান্ট হয়েছিলাম। শুনে বাবা খুব মেরেছিল… তাই বলছিলাম…
চোখ তুলে স্ত্রী দেখে তাঁর স্বামী মেঝেয় অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে।

প্যান্টি

কার্তিক দেখল আজ আর দুটো নয়, মেয়েটির দু’হাতে দু’টি করে চারটে পেয়ারা।
মেয়েটি স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় তাদের বাড়ির উঠোনের উপর দিয়েই যায়। গত তিন-চার দিন ধরে কার্তিক দেখছে সে যখন যায়, তখন তার হাতে দুটো করে পেয়ারা থাকে। তাই গতকাল থাকতে না পেরে ও জিজ্ঞেস করেছিল, তুমি প্রতিদিন কোথা থেকে পেয়ারা পাও গো?
মেয়েটি বলেছিল, আমাকে বিষ্ণুদারা দেয়।
— রোজ রোজ?
—- হ্যাঁ, আমি ওদের গাছে উঠে এত্ত এত্ত পেয়ারা পেড়ে দিই তো… তাই আমাকে রোজ ওরা দুটো করে পেয়ার দেয়।
বিষ্ণুদের দলটাকে কার্তিক খুব ভাল করে চেনে। বুঝতে পারল, ছেলেগুলোর আসল উদ্দেশ্য কী। তাই বলল, তুমি ওদেরকে আর পেয়ারা পেড়ে দিও না, বুঝেছ?
মেয়েটি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, কেন গো?
ও বলল, তুমি তো বাচ্চা তাই বোঝো না। আসলে তুমি গাছে উঠলে নিচ থেকে ওরা তোমার প্যান্ট দেখে…
গতকালই বারণ করেছিল। অথচ আজ সেই মেয়েটিই কিনা দুটো নয়, একেবারে চার-চারটে পেয়ারা নিয়ে আসছে! মেয়েটি কাছে আসতেই ও বলল, তোমাকে কাল বলেছিলাম না… গাছে উঠো না… নীচ থেকে ওরা তোমার প্যান্ট দেখে…
মেয়েটি বলল, দেখবে কী করে? আমি অত বোকা নাকি? আপনি কাল বলেছিলেন দেখে আমি তো আজ প্যান্টই পরে আসিনি।

কি দ্যাখো

প্রেমিকাটি সরাসরি ছেলেটিকে প্রশ্ন করল, তুমি মেয়েদের মধ্যে সব চেয়ে প্রথমে কি দ্যাখো?
প্রেমিকটি বলল, সেটা নির্ভর করছে মেয়েটি আসছে, না যাচ্ছে তার ওপর।

ওই সব

প্রেমিকটি চিন্তিত হয়ে প্রেমিকাকে বলল, কি গো, তোমার কথা মতো আমি যখন তোমার সঙ্গে ওই সব করি, তখন তো ওই মাটির ভাঁড়ে দশ টাকা করে ফেলি। তার হলে ওখানে এতগুলো একশো টাকার নোট এল কোথা থেকে?
প্রেমিকাটি বলল, সবাই কি আর তোমার মতো হাড়কিপটে?

বিশাল

পম্পা আর বিশালের বাড়ি থেকে দেখাশোনা করে বিয়ে হল।
ফুলশয্যার পরের দিনই পম্পা তার স্বামীর কাছে গিয়ে বলল, বিশাল, অনেক হয়েছে। আর নয়‌। আমি ডিভোর্স চাই।
বিশাল অবাক হয়ে বলল, কিন্তু কেন?
পম্পা বলল, কারণ, তোমার নামটাই শুধু বিশাল।

তেল

ভীষণ স্মার্ট। ঝকঝকে চেহারা। তেমনি পোশাক-আশাক। মাথা ভর্তি ফুড়ফুড়ে চুল। তাকে দেখে মজা করে তার প্রেমিকটি বলল, যে সব মেয়েরা চুলে জ্যাবজেবে করে তেল দেয়, সেই সব মেয়ে আমার খুব পছন্দ।
প্রেমিকাটি বলল, আমি তো সেই জন্যই দিই।
প্রেমিকটি তার মাথার দিকে ভাল করে তাকিয়ে বলল, কোথায়?
মেয়েটি বলল, আমি কি মাথার চুলের কথা বলেছি?

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
২০২০ সালে 'সাহিত্য সম্রাট' উপাধিতে সম্মানিত এবং ২০১২ সালে 'বঙ্গ শিরোমণি' সম্মানে ভূষিত সিদ্ধার্থ সিংহের জন্ম কলকাতায়। আনন্দবাজার পত্রিকার পশ্চিমবঙ্গ শিশু সাহিত্য সংসদ পুরস্কার, স্বর্ণকলম পুরস্কার, সময়ের শব্দ আন্তরিক কলম, শান্তিরত্ন পুরস্কার, কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত পুরস্কার, কাঞ্চন সাহিত্য পুরস্কার, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা লোক সাহিত্য পুরস্কার, প্রসাদ পুরস্কার, সামসুল হক পুরস্কার, সুচিত্রা ভট্টাচার্য স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার, অণু সাহিত্য পুরস্কার, কাস্তেকবি দিনেশ দাস স্মৃতি পুরস্কার, শিলালিপি সাহিত্য পুরস্কার, চেখ সাহিত্য পুরস্কার, মায়া সেন স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার ছাড়াও ছোট-বড় অজস্র পুরস্কার ও সম্মাননা। পেয়েছেন ১৪০৬ সালের 'শ্রেষ্ঠ কবি' এবং ১৪১৮ সালের 'শ্রেষ্ঠ গল্পকার'-এর শিরোপা সহ অসংখ্য পুরস্কার। এছাড়াও আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত তাঁর 'পঞ্চাশটি গল্প' গ্রন্থটির জন্য তাঁর নাম সম্প্রতি 'সৃজনী ভারত সাহিত্য পুরস্কার' প্রাপক হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!