করোনায় মৃত নারীর মরদেহ সৎকার করলেন মহিলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)

বরিশাল প্রতিনিধি
বরিশাল প্রতিনিধি
3 মিনিটে পড়ুন
কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খালেদা খাতুন।

যেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানাতে নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উপস্থিতির বিষয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে, সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা করোনায় মৃত নারীর মরদেহ পড়ে থাকার পর জানাজা দাফনে এগিয়ে এলেন মহিলা ইউএনও।

বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে করোনায় রেখা সুলতানা (৪৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়। করোনায় মৃত রেখা একই গ্রামের সোলায়মান হোসেনের স্ত্রী।

উজিয়ালখান গ্রামের রেখা সুলতানা করোনা আক্রাšত হয়ে শুক্রবার দুপুরে বরিশাল শেবাচম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে তাকে পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে নিয়ে এলে পালিয়ে যান পরিবার, আত্মীয়স্বজনরা। এছাড়া এগিয়ে আসেননি কোনো এলাকাবাসীও।

ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেখানে পড়ে থাকে তার মরদেহ। এ সময় তাকে গোসল করানোর জন্য এগিয়ে আসেন কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খালেদা খাতুন। শুক্রবার (৯ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের উজিয়ালখান গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ওই রাতেই ইউএনও এবং স্বেচ্ছাসেবী মাহফুজা মিলি ও শামীমা আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে নিজেই মৃত ওই নারীর গোসলের কাজে অংশ নেন।

2 14 করোনায় মৃত নারীর মরদেহ সৎকার করলেন মহিলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)
করোনায় মৃত নারীর মরদেহ সৎকার করলেন মহিলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) 39

এ ব্যাপারে ইউএনও খালেদা খাতুন বলেন, মৃত ওই নারী গোসলবিহীন অবস্থায় পড়ে আছেন এমন খবর মোবাইলে জানতে পেয়ে ওই রাতে আমি ২ স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে সেখানে হাজির হই এবং তার মরদেহের গোসল কাজে অংশ নেই। এটাই আমার জীবনের প্রথম কোনো মৃত নারীকে গোসল করানোর কাজে অংশ নেওয়া।

তিনি আরও বলেন, আগে কখনো মরদেহ গোসল করানোর অভিজ্ঞতা ছিল না। গোসল করানোর আগে নিয়মরীতি সব শিখে নিতে হয়েছে। সুরক্ষাসামগ্রী পরে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তাকে গোসল ও কাফনের কাপড় পরানো হয়। রাত ১২টার দিকে উজিয়ালখান গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।

মৃতের স্বামী সোলাইমান হোসেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। সোলাইমান হোসেন বলেন, তার স্ত্রী গত সাতদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। বুধবার (৭ জুলাই) কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার নমুনা পরীক্ষা করা হলে করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। ওই রাতেই তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাকে প্রথমে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে বরিশালের শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

উল্লেখ্য, ইউএনও খালেদা খাতুন গত ২০১৯ সালের ২১ জুলাই ওই উপজেলার ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন। তিনি সেখানে যোগদানের পর স্থানীয় শাসকদলের এক নেতা কর্তৃক রাতের আঁধারে উপজেলা সদরের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পুকুর ভরাট করে তা দখলের চেষ্টাকালে সেখানে একা গিয়ে বাধা দেন। মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর সšতান প্রসবকালে ওই নারীকে নিজে হাসপতালে নিয়ে যান ও তার সšতানের সেবাসহ খরচের দায়িত্ব নেন। করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে তিনি উপজেলার সকল করোনা আক্রাšতদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নেওয়াসহ তাদের পাশে থাকেন। এ সময় তিনি ভ্রাম্যমাণ স্বাস্থ্যসেবা চালুসহ নিজ খরচে এলাকার অসহায়দের পাশে থাকেন। এসব সেবামূলক কাজের কারণে তিনি এলাকাবাসীর কাছে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!