করোনা ভাইরাস: খুলনায় সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কিত বরিশালবাসী

আরিফ আহমেদ
আরিফ আহমেদ
3 মিনিটে পড়ুন

করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ধরন নিয়ে আতঙ্কিত এখন বরিশালবাসী। সর্বশেষ গত ২ জুন বরিশাল জেলায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৫০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয়েছে। ৭৫ বছরের এক বৃদ্ধের মৃত্যুসহ জেলায় মোট চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে রোববার (৬ জুন) দুপুর ১২টায় ঝালকাঠির পৌর ভূমি অফিসের নতুন ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে করোনার ভারতীয় ধরন যাতে বাংলাদেশে ছড়িয়ে না পড়ে এজন্য উত্তরাঞ্চলের কাউকে দক্ষিণাঞ্চলের জেলায় প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র আমির হোসেন আমু।

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এ জেলায় মোট ৪৬৮জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র গ্রহণ করেছেন মোট ৫৪ জন।এরফলে করোনা নিয়ে উৎকণ্ঠা আরো বেড়েছে বরিশালের মানুষের মধ্যে।

কেননা,করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)সংক্রমণ এড়াতে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি যে নেই তা সাম্প্রতিক সংবাদ বিশ্লেষণে স্পষ্ট।করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর বরিশাল বিভাগের স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে জ্বর, সর্দি, কাশিসহ বিভিন্ন উপসর্গের রোগী চাপ বেড়েছে। কিন্তু সেবাপ্রদানকারী অধিকাংশ কর্মীর কোনো ব্যক্তিগত সুরক্ষা পোশাক (পিপিই) নেই।পর্যাপ্ত পিপিই সরবরাহ না করায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় আছেন এসব কর্মী। বরিশাল, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি ও বরগুনার অন্তত ১৪টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে এই প্রতিবেদকের। কেবল পটুয়াখালীর চৈতা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান ছাড়া কেউই পিপিই পাননি।এ ছাড়া নয়টি কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মীর (সিএইচসিপি) সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা কেউই এখন পর্যন্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য পিপিই পাননি।

এমন পরিস্থিতিতে খুলনা অঞ্চলে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া এবং বরিশাল থেকে সরাসরি সীমান্ত এলাকায় যাতায়াত থাকায় আতঙ্ক বাড়া ছাড়া কমার কোন উপায় নেই বলে জানালেন, বেনাপোল রোডের বাসচালক মনির হোসেন।

মনির বলেন, এখন বেনাপোলে যেতে দেয়না। নিষেধ আছে।কিন্তু প্রতিদিন যশোর,খুলনা,কুষ্টিয়া আসা-যাওয়াতো থেমে নেই।প্রতিদিন গড়ে প্রায় হাজার পনের শত যাত্রীর যাতায়াত যশোর, খুলনা ও কুষ্টিয়ায়।

এদিকে বাংলাদেশের কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সীমান্তবর্তী জেলা ও উচ্চ সংক্রমিত এলাকায় অঞ্চল ভিত্তিক সম্পূর্ণ লকডাউন দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে কারিগরি পরামর্শক কমিটি। করোনা ভাইরাসের উর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে লকডাউনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করার প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নিতে ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সাতক্ষীরাসহ সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে সংক্রমণ বৃদ্ধির মুখে পরীক্ষা কম হওয়া এবং চিকিৎসা ও অক্সিজেন সংকট নিয়ে চিকিৎসকদেরই অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, সংক্রমণ ঠেকানোর ব্যাপারে এখনই জোর দেয়া না হলে হাসপাতালগুলো চাপ সামলাতে পারবে না।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে সংক্রমণ এবং মৃত্যু বাড়ছে। ফলে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করতে বিলম্ব হলে সংকট বাড়বে। এর ফলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সাতক্ষীরা জেলায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।করোনা রোগী বাড়তে থাকায় আরও ছয়টি জেলা লকডাউন করার সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞ কমিটি।জেলাগুলো হচ্ছে নওগাঁ, নাটোর, যশোর, রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও খুলনা। ইতোমধ্যে খুলনার পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাওয়ায়, সেখানে লকডাউন না হলেও নগরের সদর, সোনাডাঙ্গা ও খালিশপুর থানা এলাকায় সাত দিন ওষুধ, কাঁচাবাজার ছাড়া সব দোকানপাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাতদিন পর যদি পরিস্থিতি সে রকম উন্নতি না হয়, তাহলে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে, অংশবিশেষ লকডাউনের চিন্তাভাবনা করা হবে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!