বিশেষ অঙ্গে হাত দিয়ে অভিনব পদ্ধতিতে ধর্ষণ পরীক্ষা করেন ইউপি চেয়ারম্যান!

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
3 মিনিটে পড়ুন
ছবি: প্রতীকী

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ৬ বছরের শিশু মায়ের জন্য পান আনতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিশুটির পরিবারটি দারিদ্র ও অসচেতন হওয়ায় ডাক্তার ও থানা পুলিশের পরিবর্তে স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে বিচার চায়। কিন্তু চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মন্টু শিশুটির বিশেষ অঙ্গে হাত দিয়ে অভিনব পরীক্ষা করে বলে দেন তেমন কোনো আলামত নেই। এদিকে অভিযোগ ওঠায় ধর্ষক সেলিমকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

ঘটনাটি ঘটেছে কালীগঞ্জ উপজেলার ১১ নং রাখালগাছি ইউনিয়নে। ইতোমধ্যে এই ধর্ষণ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন অভিযুক্ত সেলিম হোসেন। সেলিম ওই গ্রামের নুর মোহাম্মদের ছেলে।

মঙ্গলবার দুপুরে ভিকটিমের মা গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, গত শুক্রবার পান আনার জন্য আমার শিশু কন্যাকে পাশের বাড়িতে পাঠাই। মেয়েকে আসতে দেরি দেখে তিনি এগিয়ে যাই। কিছুক্ষণ পর মেয়েকে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে বাড়ি ফিরতে দেখে তাকে জিজ্ঞাসা করি। মেয়েটি তখন কিছু বলতে পারেনি ভয়ে। পরে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে সে জানায়।

ভিকটিমের মা আরও জানান, পাড়া প্রতিবেশীর কথা মতো পরে আমি বিষয়টি চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মন্টুর কাছে বলি। তিনি আমার বাড়িতে এসে শিশু কন্যাটিকে ঘরের মধ্যে নিয়ে যৌনাঙ্গে হাত দিয়ে বলেন, কোনো আলামত নেই। পরে ইউনিয়ন পরিষদের সভা কক্ষে এক সালিশে প্রথমে অভিযুক্ত সেলিমকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু তিনি দিতে অপরাগত প্রকাশ করলে শেষমেশ ৮০ হাজার টাকায় রফা হয়।

ধর্ষণের ঘটনা অস্বীকার বরে মোহাম্মদ সেলিম হোসেন গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, সালিসে ৮০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা। চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মন্টুর কাছে ইতিমধ্যে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। বাকী ৩০ হাজার টাকা দেবার জন্য সময় নিয়েছি।

ধর্ষণ না করেও কেন জরিমানা দিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে সেলিম জানান, এ নিয়ে থানা পুলিশ করার কথা ওঠে। তাছাড়া চেয়ারম্যানের কথা আমি ফেলতে পারিনি, তাই টাকা দিয়েছি।

সুবিতপুর গ্রামের মেম্বর আবুল হাসেম জানান, ঘটনাটি গ্রামের মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পাড়ার কারণে মঙ্গলবার সকালে আমি শুনেছি যে একটি শিশু ধর্ষিত হয়েছে। কিন্তু পরিবারটি অসহায় হতদরিদ্র হওয়ায় থানা পুলিশের কাছে যেতে ভয় পাচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে রাখালগাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মন্টু মঙ্গলবার বিকালে জানান, কী হয়েছে তা একমাত্র আল্লাহ পাকই জানেন। তবে আমি এমন অভিযোগ পেয়ে সুবিতপুর গ্রামে গিয়েছিলাম। শিশুটির মা যখন বলছিল রক্ত আসছে তখন আমি বলেছিলাম কৈ রক্ত তো আসছে না।

তিনি বলেন, আমি ধর্ষকের কাছ থেকে কোনো টাকা গ্রহণ করিনি। তবে ভিকটিমের পরিবার যদি আইনগত সহায়তা চায় তবে আমি দিতে প্রস্তুত রয়েছি।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, ভিকটিমের পরিবার ডাক্তারি পরীক্ষা বা থানায় যেতে রাজি নয়।

বিষয়টি নিয়ে কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, এমন কোনো অভিযোগ এখনো থানায় আসেনি। তবে ভিকটিমের পরিবার যদি মামলা করতে ভয় পায় তবে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে। তাও অপরাধীকে কোনো ছাড় দেবে না পুলিশ।

ওসি ভিকটিম ও অভিযুক্তের নাম ঠিকানা সাংবাদিকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছেন বলে জানা গেছে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!