স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলছে পিয়নের ইশারায়

নাটোর প্রতিনিধি
নাটোর প্রতিনিধি
3 মিনিটে পড়ুন
ছবি: মাহাবুব খন্দকার

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ক্ষমতাধর পিয়ন খোরশেদের ইশারায় চলছে হাসপাতালের কাজকর্ম। তার বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায় না কেউ। নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পিওন (চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী)।

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামানের প্রত্যক্ষ মমদেই তিনি ক্ষমতাধর। আর কর্মকর্তার ইন্ধন থাকায় প্রতিবাদ বা প্রতিকার কোনটাই পাচ্ছেন না ডাক্তার-সেবিকা, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে সেবা কার্যক্রমসহ স্বাভাবিক কর্মকান্ড।

যেকোন সময় ঘটতে পাড়ে অপ্রীতিকর ঘটনা। অনুসন্ধানে জানা যায়, ডা. আসাদুজ্জামান গত মার্চ মাসের ৮ তারিখে অত্র হাসপাতালে যোগদান করেন। তার যোগদানের পরই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন এই কর্মকর্তা। বিভিন্ন জাতীয় দিবস, প্রশিক্ষণ কর্মশালা কাগজে কলমে দেখিয়ে বিল উত্তোলন শুরু করেন।

এই কাজে সার্বক্ষণিক সহযোগী হিসেবে সাথে নিয়েছেন পিওন খোরশেদ আলম। তার সুবিধার জন্য অনেককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে রেখে পছন্দের জনকে দিয়ে নিয়ম বর্হিভুতভাবে কাজ করাচ্ছেন। পিওনকে দিয়েই বিল-ভাউচার তৈরী করাচ্ছেন।

উপলশহর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিকে তার ক্লিনিক বন্ধ রেখে হাসপাতালে কম্পিউটারের কাজ করান। অথচ সেইসব কাজ করার জন্য পরিসংখ্যানবিদ রয়েছেন। এক কথায় পিওন খোরশেদের ইচ্ছাতেই চলছে হাসপাতাল।

তার ইচ্ছার বাহিরে ঘোরেনা এ্যাম্বুলেন্সের চাকাও। পিওন খোরশেদ সর্বক্ষণ হাতে এন্ড্রয়েট মোবাইল ফোন নিয়ে ঘোরেন। ডাক্তার-কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত ছবি, কথাবার্তা রেকর্ড করেন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে কথা বলেতে গেলে সে অযাচিত ভাবে উপস্থিত থাকেন এবং কথার মাঝে ঢুকে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেন। তার এহেন আচরণে হাপিয়ে উঠেছেন সবাই।

এদিকে কর্মকর্তা যোগদানের পর অদ্যাবধি কোন স্টাফ মিটিং করেন নাই। পিওনের ইশারায় তার ইচ্ছেমত কাজকর্ম চালাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে এই প্রতিবেদকের কাছে সবাই ক্ষোভ-দুঃখের কথা বলেন। কিন্তু সরাসরি কর্মকর্তা জড়িত থাকায় নিজেদের নাম প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন তারা।

প্রথমেই কথা হয় দুইজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সাথে।তারা বলেন, আমরা কখন কোথায় কী দায়িত্ব পালন করবো তা ডিউটি রোষ্টারে নির্দিষ্ট করা আছে। কিন্তু পিওন খোরশেদ আলম আমাদেরকে সেই কাজ করতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তার ইচ্ছেমত কাজ করায়। জরুরী ও বর্হিবিভাগে দায়িত্বে থাকা একাধিক সেবিকা বলেন, পিওন যদি আমাদের কাজের তদারিক করে তাহলে কেমন লাগে বলেন ? তার ইচ্ছায় আমাদের ডিউটি করতে হয়।

দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পিওন খোরশেদের থাকার কথা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ফায়ফরমাস খাটার কাজে।কিন্তু তা না করে সে সর্বত্র অনধিকার চর্চা করছে। যা মানহানিকর। এভাবে ডিউটি করা যায় না।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান বলেন, আমি নতুন এসেছি আবার এই দায়িত্বেও নতুন। খোরশেদ আগে থেকেই এখানে দাযিত্বে ছিলো তাই তার নিকট থেকে সহযোগিতা নেয়া হয়। স্টাফ মিটিং করে সবার দায়িত্ব এবং কর্মকান্ড তদারকি করছেন না কেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন এখনো হয়ে উঠেনি।

বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী জানান, সবই এমপি সাহেবের লোক। তাই তারা বেপরোয়া। আমরা অসহায়।

নাটোরের সিভিল সার্জন ডা. কাজী মিজানুর রহমান বলেন, তাদের বিষয়ে মৌখিক ভাবে কিছু কথা শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা করা হবে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!