বাংলাদেশে সফর শেষে নিরাপদে দিল্লীতে ফিরেছেন নরেন্দ্র মোদী

নিজস্ব সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
5 মিনিটে পড়ুন

বাংলাদেশে দুইদিনের সফর আজ রাতে বাংলাদশকে ধন্যবাদ জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঢাকা ত্যাগ করেছেন এবং নিরাপদে নিজভূমে ফিরে গেছেন।

বাংলাদেশে সফর শেষে নিরাপদে দিল্লীতে ফিরেছেন নরেন্দ্র মোদী
বাংলাদেশে সফর শেষে নিরাপদে দিল্লীতে ফিরেছেন নরেন্দ্র মোদী 41

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশে এসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।  

1 2 বাংলাদেশে সফর শেষে নিরাপদে দিল্লীতে ফিরেছেন নরেন্দ্র মোদী
বাংলাদেশে সফর শেষে নিরাপদে দিল্লীতে ফিরেছেন নরেন্দ্র মোদী 42

২৬শে মার্চ মোদীকে বহনকারী বিমান সকাল এগারটা নাগাদ ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে  অবতরণ করে। উনিশবার তোপধ্বনির মাধ্যমে তাকে স্বাগত জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। এরপরেই দু দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানোর মধ্য দিয়ে তাকে গার্ড অব অনার এবং লাল গালিচা সম্বর্ধনা দেয়  বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি দল এবং তিনি গার্ড পরিদর্শন করেছেন।

এক নজরে নরেন্দ্র মোদীর সফল বাংলাদেশ সফর ও পরিদর্শন কর্মসূচী

২৬শে মার্চ:

বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ১১:৪৫ মিনিটে পুস্পস্তবক অর্পণ এবং দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন  করেন।  এরপরে স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর শেষে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গনে একটি অর্জুন গাছের চারা রোপণ করেন তিনি। 

স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইয়ে নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক শহীদদের প্রতি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। যাদের গৌরবান্বিত আত্মত্যাগের ফলে এই মহান জাতির অভ্যুদয় হয়েছে। এই শ্রদ্ধাস্থল পরিদর্শন করা সব দর্শনার্থী যেন লাখো শহীদের পবিত্র স্মৃতির প্রতি সম্মান জানান, তাদের হত্যা করা হয়েছে কিন্তু স্তব্ধ করা যায়নি। তাদের বীরত্ব ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অবিচার ও সত্যের পক্ষে লড়াইয়ে অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছে। ভারতের জনগণের পক্ষে আমি প্রার্থনা করি প্রতারণা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সত্য ও সাহসের এক মহৎ জয়ের স্মৃতি হয়ে থাকবে সাভারের এই শিখা চিরন্তন।’

বিকেল ৩টায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন তার সাথে সাক্ষাত করেন।

বিকাল সাড়ে ৪টায় মোদি জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ড ‘মুজিব চিরন্তন’ অনুষ্ঠানে সম্মানিত অথিতি হিসেবে যোগ দেন তিনি। এই অনুষ্ঠানে তিনি ভারত সরকারের দেওয়া ‘গান্ধি শান্তি পদক’ তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানার হাতে তুলে দেন।

উল্লেখ, ভারত সরকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে২০২০ সালের গান্ধি শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করে। ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এই পুরস্কার ঘোষণা করে। মহাত্মা গান্ধির আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করে দেশটির সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উত্তরণে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ হাসিনা সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী যৌথভাবে ‘বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল এক্সিবিশনের’ পর্দা উন্মোচন করেছে।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তার সৌজন্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া নৈশভোজে অংশগ্রহণ করেছেন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেছেন।

২৭শে মার্চ:

সকাল ৯:৫৩ মিনিটে হেলিকপ্টার যোগে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ৪৫০বছরের পুরাতন  যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে পূজা দেন। ১৫৬০-১৫৮০ সালে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজা লক্ষণ সেন।

মন্দির পরিদর্শন শেষে তিনি টুঙ্গিপাড়ায় বন্ধবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে যান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ফুলের তোড়া দিয়ে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল কমপ্লেক্সে নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং কিছুক্ষণ নীরবতা পালন শেষে দর্শনার্থী বইয়ে তিনি লিখেছেন, ‘ অধিকার, নিজস্ব সংস্কৃতি ও  আত্মপরিচয়ের জন্য বাংলাদেশের মানুষের যে সংগ্রাম, বঙ্গবন্ধুর জীবন তারই প্রতিচিত্র। তার অবিনাশী চেতনা আর অদম্য সাহস কোটি মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে, বহু বাধা বিপত্তি পেরিয়ে তারা (বাঙালি) পরিণত হয়েছে বিজয়ী জাতিতে। ভারতবাসী বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে একজন বীর হিসেবে, সেই ভারতবাসীর পক্ষে আমি ২০ শতকের এই মহান রাষ্ট্রনেতার প্রতি বিনীত শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় নাম, যে ইতিহাসকে তিনি নতুন রূপ দিয়েছেন দৃঢ় সঙ্কল্প আর আত্মত্যাগের প্রবল শক্তি দিয়ে। এই ঐতিহাসিক মুজিববর্ষে আমার দৃঢ় বিশ্বাস- বঙ্গবন্ধুর দিয়ে যাওয়া সাম্য, মুক্তি আর ন্যায়বিচারের চেতনা আমাদের ভবিষ্যতেও পথ দেখিয়ে যাবে।’ এরপরেতিনি বঙ্গবন্ধু ভবনের পাশে একটি বকুল ফুল গাছের চারা রোপণ করেন।  

টুঙ্গিপাড়ার কর্মসূচি শেষ করে দুপুর ১২:১৫মিনিটে কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি ঠাকুর বাড়ি পরিদর্শন করেন এবং সেখানে তিনি হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে পূজা করেন এবং মতুয়া নেতাদের সঙ্গে মতমিনিময় করেন।

বিকাল ৫টায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যোগ দেন।

স 2 বাংলাদেশে সফর শেষে নিরাপদে দিল্লীতে ফিরেছেন নরেন্দ্র মোদী
বাংলাদেশে সফর শেষে নিরাপদে দিল্লীতে ফিরেছেন নরেন্দ্র মোদী 43

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা শেষে  দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য, তথ্য প্রযুক্তি ও খেলাধুলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা বাড়াতে ৫টি সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ ও ভারত।

বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে উভয় প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে নিজ নিজ দেশের পক্ষে  পৃথক দুটি স্মারক ডাকটিকিট  উন্মোচন করেন। 

সর্বশেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বঙ্গভবনে বাংলাদেশের রাস্ট্রপতি আব্দুল হামিদের   সঙ্গে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

সফর শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ধন্যবাদ জানিয়ে আজ রাতে দিল্লির উদ্দেশ্যে নিরাপদে ঢাকা ত্যাগ করেন।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
১ টি মন্তব্য

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!