মহাসড়কে কেন মৃত্যুর মিছিল

ফয়সাল কবির
ফয়সাল কবির - ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
4 মিনিটে পড়ুন

সাময়িকী.কম

১১ দিনে নিহত ২৪৯ জন
বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদন 

3 95738 মহাসড়কে কেন মৃত্যুর মিছিল
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে গতকাল বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে দুমড়ে মুচড়ে যায় মাইক্রোবাসটি -বাংলাদেশ প্রতিদিন


শিমুল মাহমুদ
সড়ক-মহাসড়কে কেন এই মর্মান্তিক মৃত্যুর মিছিল। গন্তব্যে বের হয়ে কে কোথায় লাশ হয়ে ঘরে ফিরবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। ঈদুল ফিতরের উৎসবের আগে ও পরে ১১ দিনে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪৯ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২২ জনের বেশি। গতকালও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে যাত্রীবাহী বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে সাতজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেপরোয়া গতির ড্রাইভিং, বিপজ্জনক ওভারটেকিং ও মহাসড়কে মিশ্রগতির যানবাহনের কারণে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। তারা বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলো চার লেন করে রোড ডিভাইডার দিতে পারলে বড় দুর্ঘটনা, মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়ানো সহজ হবে। এ ছাড়া মহাসড়কে দেড় শতাধিক দুর্ঘটনাপ্রবণ ‘ব্লাকস্পটে’র বাঁক সোজা করা ও সেখানে রোড ডিভাইডার বসানো, হাটবাজার অপসারণ এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ঝুঁকিপূর্ণ নসিমন-করিমন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে পাহারা জোরদার, চালকদের প্রশিক্ষণ, হাইওয়ে পুলিশকে সক্রিয় করাসহ সড়ক পরিবেশ উন্নত করতে না পারলে দুর্ঘটনা রোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে। এসব পূর্বশর্ত পূরণ না করে মহাসড়কগুলো শুধু চারলেন করা হলে গাড়ির গতি বাড়বে কিন্তু দুর্ঘটনা কমবে না। গতকালসহ ঈদুল ফিতরের ছুটির আগে ও পরে গত ১১ দিনে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ২৪৯ জনের প্রাণহানি হয়েছে। সড়কে মৃত্যুর এই সংখ্যা ঈদযাত্রায় গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এ সময়ে ঘটে যাওয়া বড় দুর্ঘটনাগুলোর অধিকাংশই ঘটেছে মুখোমুখি সংঘর্ষে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বেপরোয়া ড্রাইভিং, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের পাশাপাশি বাংলাদেশের সড়ক পরিবেশও ব্যাপক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। দেশের প্রতিটি মহাসড়কের সঙ্গে শত শত লিঙ্ক রোড, ক্রসিং, হাটবাজার রয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে সড়কে ধান শুকানো হয়। সড়ক-মহাসড়ক ঘিরেই মানুষের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড গড়ে ওঠে। মহাসড়ককে নির্বিঘ্ন রাখতে কোনো পরিকল্পনাই বাস্তবায়ন হয় না। দেশের সড়ক-মহাসড়কের ওপর অনেক গুরুত্বপূর্ণ রেলক্রসিং রয়েছে যেগুলোতে ওভারপাস করে যান চলাচলে স্বাচ্ছন্দ্য ও দুর্ঘটনা রোধ করা যায়। প্রসঙ্গত কুমিল্লায় পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড সংলগ্ন রেলক্রসিংয়ের ওপর একটি ওভারপাস করা হচ্ছে চার লেন প্রকল্পের আওতায়। অথচ আরও কিছু টাকা খরচ করে অদূরেই পদুয়ার বাজার ক্রসিংকে ওভারপাসে যুক্ত করা হলে মহাসড়কের এই অংশে যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন হতো। বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার সরকারি তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে পুলিশ সদর দফতর। একটি নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে ৬৪ জেলা থেকে পুলিশের পাঠানো তথ্য অধিকাংশ সরকারি বেসরকারি গবেষণায় ব্যবহার করা হয়। এতে অবশ্য দুর্ঘটনায় মৃত্যুর প্রকৃত তথ্য পাওয়া যায় না। দুর্ঘটনা-পরবর্তী হাসপাতালে মৃত্যুর পরিসংখ্যান পুলিশের হিসাবে থাকে না। ফলে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সরকারি ও বেসরকারি হিসাবে বড় গরমিল দেখা যায়। দুর্ঘটনার পর তথ্য সংগ্রহের জটিল পদ্ধতির কারণে জেলা পুলিশের আগ্রহ দেখা যায় না। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা  এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল রোধ করতে হলে আমাদের হাইওয়েগুলোকে আদর্শ হাইওয়ের আওতায় আনতে হবে। এর জন্য হাইওয়েতে ছোট গাড়ি চলাচল, মানুষ পারাপার, হাটবাজার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করতে হবে। ডিভাইডার দিয়ে মহাসড়কের দু’পাশ বন্ধ করে দিতে হবে। গাড়ি থামার জন্য আলাদা বাস বে তৈরি করতে হবে। দেশের অধিকাংশ গ্রামীণ সড়কের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদফতরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী শহীদুল হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সড়ক-মহাসড়কে মর্মান্তিক প্রাণহানির অনেকগুলো কারণের মধ্যে মূল কারণ দুটি। বেপরোয়া ড্রাইভিং ও ওভারটেকিং। বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ও দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের সাবেক পরিচালক ড. শামছুল হক বলেন, আমাদের দেশে মহাসড়কে যান চলাচলের জন্য নির্বিঘ্ন রাখা  কঠিন।


গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
লেখক: ফয়সাল কবির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
অনুসরণ করুন:
কর্মজীবী এবং লেখক
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!