শিশু রাজন হত্যার প্রধান আসামি ৫ দিনের রিমান্ডে

ফয়সাল কবির
ফয়সাল কবির - ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
3 মিনিটে পড়ুন
সাময়িকী.কম
11742976 শিশু রাজন হত্যার প্রধান আসামি ৫ দিনের রিমান্ডে


সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চোর সন্দেহে শিশু সামিউল আলম রাজনকে পিটিয়ে হত্যার প্রধান আসামি মুহিতের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে গ্রেফতারকৃত মুহিত আলমকে (২২) জিজ্ঞাসাবাদে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে তাকে আদালতে তোলা হয়। 

নিহত রাজন সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামের মাইক্রোবাসচালক শেখ আজিজুর রহমানের ছেলে। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা রাজন মাঝেমধ্যেই সবজি বিক্রি করত। বুধবার সিলেট নগরীর কুমারগাঁওয়ে শিশু রাজনকে নির্মম নির্যাতনে হত্যা করে গুম করার সময় পুলিশ উদ্ধার করে তার লাশ।

নির্যাতনকারীরা শিশুটিকে নির্যাতনের চিত্র মোবাইল ফোনে ধারণ করে। ২৮ মিনিটের সে ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তোলপাড়। ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, রাজনকে বর্বরোচিত নির্যাতনের সময় বুনো উল্লাসে মত্ত ছিল পাষণ্ডরা। খুঁটির সঙ্গে রাজনকে বেঁধে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে চলে নির্যাতন। নির্যাতনের একপর্যায়ে ‘এই ক (বল) তুই চোর, তোর নাম ক (বল)…, লগে কারা আছিল…?’ এমনটা বলতে শোনা যায় এক নির্যাতনকারীকে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে রাজনের হাত, পা, মাথা ও পেটে রোল দিয়ে আঘাত করা ছাড়াও বাঁ হাত ও ডান পা ধরে মোচড়াতেও দেখা যায়। কয়েক মিনিটের জন্য রাজনকে হাতের বাঁধন খুলে হাঁটতে দেওয়া হয়। এ সময় নির্যাতনকারীরা বলতে থাকে ‘ওর হাড়গোড় তো দেখি সব ঠিক আছে, আরও মার…’। এরপর খুঁটিতে বেঁধে আবারও শুরু হয় নির্যাতন। ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, রাজনের কনুই ও হাঁটুতে লাঠি দিয়ে বার বার আঘাত করা হয়। কাঁদতে কাঁদতে রাজন বলে, ‘আড্ডির মাঝে আর মারিও নারে বা (হাড়ের মধ্যে আর মেরো না)।’ কিন্তু রাজনের আকুতিতেও মন গলেনি পাষণ্ডদের। এর পরও বিরামহীনভাবে চলতে থাকে নির্যাতন। একপর্যায়ে রাজনের জিহ্বা কেটে ফেলার কথাও বলে এক নির্যাতনকারী। লাঠি দিয়ে রাজনের পেটে ও বুকে গুঁতোও দেওয়া হয়। নির্যাতনে কাঁদতে কাঁদতে চোখ-মুখ ফুলে ওঠে রাজনের। একপর্যায়ে পানি পানের জন্য আকুতি জানায় সে। এ সময় নির্যাতনকারীরা ‘পানি নাই ঘাম খা’ বলে উল্লাস করতে থাকে। নির্যাতনে রাজনের মৃত্যু হলে লাশ গুম করার চেষ্টা করা হয়। তবে তার আগেই লাশসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে নির্যাতনকারী শেখপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল মালিকের ছেলে মুহিত আলম (২২)। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে নগরীর জালালাবাদ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় আটক মুহিত আলম (২২) ও তার ভাই কামরুল ইসলাম (২৪), তাদের সহযোগী আলী হায়দার ওরফে আলী (৩৪) ও চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়নাকে (৪৫) আসামি করা হয়।

রাজনের বাবা আজিজুর জানান, যেদিন তিনি মাইক্রোবাস চালাতে যেতে পারেন না, সেদিন রাজন সবজি বিক্রি করতে যেত। বাপ-ছেলে মিলে সংসার চালাতেন। তার ছেলে নিরপরাধ দাবি করে তিনি খুনিদের ফাঁসি দাবি করেন। রাজনের মা লুবনা আক্তার জানান, ওই দিন (বুধবার) রাজনের বাবা গাড়িতে ছিলেন বলে বাড়ি ফেরেননি। ভোরে শহরতলির টুকেরবাজার থেকে সবজি নিয়ে বিক্রির জন্য রাজন বের হয়েছিল। সারা দিন ছেলের খোঁজ না পেয়ে রাতে থানায় গিয়ে জিডি করার সময় এক শিশুর লাশ পাওয়ার সূত্র ধরে রাজনকে শনাক্ত করা হয়। 

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
লেখক: ফয়সাল কবির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
অনুসরণ করুন:
কর্মজীবী এবং লেখক
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!